আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মার্কিন কবি শ্যারন ওল্ড- এর ৩ টি কবিতা



শ্যারন ওল্ড ১৯৪২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকোতে জন্মগ্রহণ করেন। স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণকারী শ্যারন-এর প্রথম কাব্যগ্রন্থ স্যাটান সেইজ ১৯৮০ সালে প্রকাশিত হয়। কবিতার বৈচিত্রময় বিষয়বস্তু এবং বর্ণিল ভাষা ও বিচিত্র চিত্রকল্পের জন্য তিনি অল্পদিনেই সুখ্যাতি লাভ করেন। স্যাটান সেইজ-এর জন্য তিনি সানফ্রান্সিসকো পোয়েট্রি সেন্টার পুরস্কার লাভ করেন। তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ দ্যা ডেড এ্যান্ড দ্যা লিভিং-এর জন্য তিনি ১৯৮৩ সালে ন্যাশনাল বুক ক্রিটিকস সার্কেল পুরস্কার লাভ করেন।

১৯৯২ সালে প্রকাশিত তার তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ দ্যা ফাদার ইংল্যান্ডের টি.এস এলিয়ট পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন তালিকায় স্থান লাভ করে। আদিম সভ্যদের ব্যাপারে শুনেছি, তাদের পরিণয়গুলো কথামালায়, রুচিশীল, বিশ্বস্ত ও যৌক্তিক হয়। অথচ তুমি আমি অসভ্য আদিম। তুমি ব্যাগ হাতে এসে নিরবে আমার দিকে বাড়িয়ে দাও সুঘ্রানে চিনে নেই ম্যাকডোনাল্ডস আর তোমার ইশারা বুঝে যাই। গতরাতে পরিপূর্ণ তৃপ্তি দিয়েছিলাম।

আমরা নিরবে বসি, পাশাপাশি, খাই, লম্বা প্যানকেকগুলো দোল খেয়ে কাঁপে, ঝরে ঘ্রাণালো সস, আর পরস্পরের দিকে আড়চোখে তাকায়, বাকহীন, আমাদের চোখের কোনগুলো পরিষ্কার যেনো বর্শার ঝলক চৌকাঠে লেপ্টে থেকে দেখায় বন্ধুর সাথে বন্ধু বসে এখানে। ভালোবাসাহীন মিলন তারা কীভাবে এটা করে, সেইজন যে ভালোবাসা ছাড়াই ভালোবাসে? নর্তকীর মত সুন্দর, বরফের উপর আইস-স্কেটারের মত পরস্পর পরস্পরের ওপর উড়ে চলা, একে অন্যের শরীরে গেঁথে দেয়া নখ,কাবাবের মত লাল মুখ, লাল মদ, সেই শিশুদের প্রসবকালের মত ভেজা, যাদের মায়েরা তাদেরকে উগরে দিতে যাচ্ছে। তারা কীভাবে আসে, আসে আর আসে প্রভুর কাছে, আসে স্তব্ধ জলের কাছে, আর ভালোবাসা নয় সেইজন যে তাদের সাথে ওখানে এসেছিলো, আলো জাগে ধীরে যেন তাদের যুগল শরীর থেকে ধোঁয়া ওঠে? এসবই সত্য ধার্মিক, বিশুদ্ধবাদী, পতিতা, একজন যে মিথ্যা মসিহ্ স্বীকার করেনা, প্রভুর বদলে পুরোহিত ভালোবাসে। নিজের আনন্দের জন্য তারা প্রিয়তমাকে ভ্রান্ত করেনা, মহান দৌঁড়বিদের মতো: তারা জানে পথের উপরিভাগের মতোই তারা একা, ঠান্ডা, একাকী বাতাস, তাদের জুতার ফিতা, সামগ্রিক কার্ডিও-ভাসকুলার শরীর শুধুই একটা ব্যাপার, বিছানার সঙ্গীর মতই, আর সত্য নয়, যেটি নিজের সুসময়ের বিপরীতে একটি শরীর একা এই বিশ্বে হপ্তাখানেক পর হপ্তাখানেক পর এক বন্ধুকে বলেছিলাম: ভাবিনি কখনো এ সম্বন্ধে লিখতে পারবো। হয়তো এক বছরে আমি কিছু লিখতে পারবো।

আমার ভেতরের কথাগুলো হয়ত কোনো একদিন লেখা হবে; এখন তারা সাজানো, গোছানো এবং সাজানো, স্কুলের নোটের মতো। আর আমার স্বপ্নে কেউ একজন তাস খেলে যাচ্ছে, আর বাতাসে ছুড়ে দেয়া বিশাল, জবরদস্ত ইস্কাপনের গোলাম পড়ছে আগুনের ওপর। আর ঘুম ভেঙ্গে দেখি যেদিন আমার স্বামীকে শেষ দেখেছিলাম সেদিন থেকে গুনে যাচ্ছি দিন-মাত্র দু'বছর, সামান্য কিছু হপ্তা আর ঘন্টা। কাগজে সই করে আমরা ক্রিসলার বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় নেমে দাঁড়ালাম, লবির অখন্ড সৌন্দর্য যেনো রাজার সমাধিশালা, ছাদের ম্যুরালে ছোট্ট বিমান, উড়ে যায়। আর প্রবেশ করে আমার পাথুরে হৃদয়ে, এই সকাল, নিরবে, লাজুক যেনো সতর্ক, অন্তরঙ্গতাহীন, প্রাঞ্জলতার বৃহত্তর বোধ আর তার বহমান জীবনের অনেকটাই অজানা, অদেখা আমার, অশ্রুত, অস্পর্শ-অথচ পরিচিত।

আর এটা একই সময়ে অনেকগুলো মুহূর্ত হয়ে এসেছিলো, মুহূর্তের পর মুহূর্ত, নিজের প্রবোধ দিয়ে খুশি হয়েছিলাম এই ভেবে যাই হোক সেতো তার পছন্দের নারীর সাথেই আছে আর আমি মায়ের কথা ভাবছিলাম, তার মৃত্যুর আগের কয়েক মিনিট, তার জন্মের আগের পচাঁশি বছর, আমার হাতের নিচে তার মুড়মুড়ে হাড়গুলো, ডিমখোলসের খুলি, যেনো সে পরিষ্কার বিছানায় খানিক শান্তিতে শুয়ে আছে, আর আমি তাকে আমার নিঃস্বতার সর্বোচ্চটুকু বলতে পারতাম, আমি চিৎকার করে তাকে জানাতে পারতাম একপক্ষীয় ভালোবাসার কথা যদিও বিধি আর বিলাস সে ঘন্টায় আমি দেখেছিলাম।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.