আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এরিস্টটলের নিটোল হৃদয়....ডারউইন বলে-“বৃথা অপচয়” !

আত্মবিশ্বাসহীনতায় প্রকট হচ্ছে আত্মার দেউলিয়াত্ব, তবুও বিশ্বাস আগের মতই নিশ্চল..

এই লেখাটা লিখেছিলাম গতবছর "বুয়েট বন্ধুসভার" দেয়ালিকার জন্য। । । । আজ হঠাৎ পিসিতে খুজে পেয়ে ব্লগে দিয়ে দিলাম।

। প্রতি, চার্লস ডারউইন , বিবর্তনধারার প্রবর্তক। । সুধী, আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের সংগঠন “বন্ধু ভুবনের” ১বছর পূর্তির ক্ষণটি স্মরণীয করে রাখতে আগামী ২৩শে জুলাই দিনটিকে আমরা বিশেষভাবে উদযাপনে আগ্রহী। এ ক্ষুদ্র প্রয়াসে আপনার আন্তরিক উপস্থিতি একান্ত কাম্য।

ধন্যবাদান্তে , এরিস্টটল : আহ্বায়ক, বন্ধুভুবন # নিমন্ত্রণপত্র পেয়ে ডারউইন দুটি সুদর্শন শাখামৃগ(!)কে সফরসঙ্গী করে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হলে এরিস্টটল তাকে অভ্যর্থনা জানায়Ñ শুরু হয় দিকপালদ্বয়ের মধ্যে অনির্ধারিত মুক্ত আলোচনা , সময়ের পরিক্রমায় সমানুপাতে বৃদ্ধি পেতে থাকে জনসমাগম....... ডারউইন : এটা আপনি কী করলেন , সংগঠনের নাম “বন্ধুভুবন”রাখার মাধ্যমে কার্যত “বান্ধবীদের”আপনি অবজ্ঞাই করেছেন!অথচ গবেষণা ভুলে আমার এখানে আসার অভিসন্ধি একটিই_ রকমারি বান্ধবীদের বেশুমারী সঙ্গলাভ!- “আজ পাশা খেলব রে শ্যাম...” (সঙ্গীত) এরিস্টটল : ডারউইন সাহেব,বন্ধুত্ব “লিঙ্গনিরপেক্ষ”; “বান্ধবী” শব্দটি শুধুই ব্যাকরণবিদদের খামখেয়াল! ফ্রেঞ্চ ভাষায় বন্ধুকে বলে “আমি” ; তাই বন্ধুত্ব মানেই হল “অসংখ্য আমাদের” অগণিত “বিচ্ছিন্ন-অপরিচিত” হৃদয়গুলোর “আমি”নামক একটিমাত্র “অভিন্ন পরম হৃদয়ে” রূপান্তর। এই “সামষ্টিক স্বপ্নটিরই ” প্রতীকি নাম “বন্ধুভুবন”। ডারউইন : “দরিদ্র দর্শন”!শুনুন মশাই, ঘরের খেয়ে বুনোমোষ তাড়ানোর বিনোদন কখনো দীর্ঘস্থায়ী হয়না। যাহোক, দুপুরে নিশ্চয়ই ভুরিভোজ হবে! ওইতো বান্ধবীদের আনাগোনা বাড়ছে ; আহ! প্রসাধনের প্রসারতায় কালীদেবীও যেন আফ্রোদিতি হয়ে উঠেছে!... “মন কী যে চায় বল, যারে দেখি লাগে ভাল”(সঙ্গীত) এরিস্টটল : দৃষ্টিভঙ্গি শোধরান : “বন্ধুভুবনের” উৎকর্ষ কাজের পরিতৃপ্ততায় ; উদরপূর্তিতে নয়। অবশ্য সে কথা বুঝবার ক্ষমতা থাকলে দুটি বানর সঙ্গে নিয়ে এখানে আসতেন না।

আর, এই বয়সেও নারীসংক্রান্ত যেসব ছেলেমি করছেন তাতে আপনি সত্যিই ডারউইন কিনা আমি সন্দিগ্ধ! ডারউইন : আপনি যতবড় দার্শনিকই হন নিজের পূর্বপুরুষকে যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করুন! বরং আমিতো বলব কোন “দশাসই বানরই”আজকের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হওয়ার যোগ্যতম দাবিদার! আর পরিতৃপ্তির কথা বলছেন? শুনুন আপনার এই “বন্ধু-বন্ধু খেলার” চড়–ইভাতিতে অধিকাংশ চড়–ই-ই এসেছে নিজেদের আখের গোছাতে _ দুই টাকা দান করে খবরের শিরোনাম হতে কিংবা বাউণ্ডুলে তরুণগুলো অবসর কাটানোর উপায় খুঁজতে! এরিস্টটল : আপনার দেখার বাইরেও একটি বিশাল পৃথিবী আছে! “বন্ধুভুবনে” ৫বছরের শিশুও ৭৫বছরের বৃদ্ধের মননের ভেতরে নববোধের উদ্বোধন ঘটিয়ে ক্রমাণ্বয়ে পারস্পরিক অস্তিত্বের “বিকল্প সত্ত্বা” হয়ে উঠে : তাই আমরা অর্ধেক গ্লাস পানি দেখে আনন্দিত হই, অন্যেরা অর্ধেক খালি দেখে হতাশ হয়; আর আপনি?_ গ্লাসের পানিটিকেই কেরোসিন সন্দেহ করেন! ডারউইন : যুগে যুগে সংশয়বাদীরাই রীতির বিবর্তন ঘটায় : বিজ্ঞানী থ্যালিস সংশয় প্রকাশ করেছিলেন বলেই হয়ত পিরামিডের উচ্চতা নির্ণীত হয়েছিল... সে বিরোধে যাব না : এই যে এখানে এত জনসমুদ্র তৈরি হচ্ছে তাতে উদ্বেলিত হবেন না ; ওরা আপনার “দর্শনের প্রগলভতা” দেখতে আসেনি ; ওরাও আমারই মত চিত্রতারকাদের কোমর দোলানো নাচ আর হাইবিট গানের ছন্দে হারিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে এসেছে _ “ আরে ধুম মাচালে... ধুম মাচালে, ধুম” । তা, নায়িকা “হ্যাপি” আসছেন তো? আমি তার “সাম্বা নৃত্যের” বিশেষ সমঝদার...! এরিস্টটল : (রাগত) আপনাকে নিমন্ত্রণ করাটাই ভুল হয়েছে। কতটুকু জানেন “বন্ধুভুবন” সম্পর্কে?সারাদেশে যেখানে আমাদের শাখা রয়েছে -সর্বত্রই আবালবৃদ্ধবনিতার স্বতঃস্ফ’র্ত অংশগ্রহণে উদ্ভাসিত!মঙ্গা-শীত-বন্যার “দীর্ঘতর অমানিশায়” আমাদের এইসব একাত্মা বন্ধুরাই “সেবার বাতিঘর” প্রতিষ্ঠায় প্রত্যয়ী হয় । চিন্তা-চেতনা-সাহসিকতায় একটি “আলোকিত প্রজন্মের” বিকাশে বন্ধুভুবন আমাদের আকাক্সক্ষার “স্বপ্ন-শকট” যাতে আরোহী হয়ে আমাদের “বিশুদ্ধ স্বপ্নগুলো” পাড়ি দিতে চায় বিশ্বায়নের বিস্তৃত প্লাটফরম...!তাইতো, আমাদের আহ্বানেই আজকের বিপথগামী তরুণ মাদককে “না”বলে হাতে তুলে নিয়েছে কবিতার বই ; কী, হাসছেন কেন? ডারউইন : এইতো আসল কথায় এসেছেন! মাদককে “না” বলার জন্য যারা মঞ্চে ফপর দালালি করে এমন আনেক শিল্পী-বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে আমি নিজে বহুদিন মদ্যপান করেছি! অবশ্য মদকে যদি আপনি আদৌ মাদক হিসেবে স্বীকার করেন! তাই নেহায়েত “শৌখিন প্রয়োজনে” আপনারা মাদককে “না” বলেন, তরুণরাও কৌতুকচ্ছলে আপনাদের সঙ্গে সমস্বরে “না” উচ্চারণ করে মঞ্চের পিছনেই নেশার আখড়া বানায় !শুনুন, আগে কুইনাইনের জ্বর সারান, তারপর কুইনাইনের কার্যকারিতা নিয়ে ভাবা যাবে!! নয়তো আপনার এই “বন্ধুভুবন” অচিরেই নির্মল “গল্পবলার আসরে” পরিণত হবে। { ডারউইনের এহেন শ্লেষোক্তিতে এরিস্টটল হঠাৎ নিথর হয়ে পড়ল : “ যারা পথ দেখায় তারাই যদি উল্টোপথের পথিক হয়, তবে সঠিক গন্তব্যে পৌছনো তো “মহাকালের বিভ্রমে” পরিণত হবে ; বন্ধুভুবনের “স্বপ্ন-শকট”কি তাহলে এক দুঃস্বপ্নের প্রহসন”? এরকম দুর্ভাবনায় এরিস্টটলের নিটোল হৃদয়ে যেন ক্রমাগত রক্তক্ষরণ হতে থাকল ,হয়ত বিশাল আকাশের ভার থেকে মাথাটিকে রক্ষা করবার উদ্দেশ্যেই মাথার উপর হাতদুটি দিয়ে সে নিস্পন্দ বসে রইল !! সে মুহূর্তে অদূরে চলছে অনুষ্ঠান আরম্ভের তোড়জোড়..........!} # হতাশার রাত্রি যতই দীর্ঘতর হোক, প্রহর শেষে “প্রভাত সূর্য” উঠবেই।

তাই আমরা দশজন মিলে যদি মাত্র একজন ডারউইনের প্রতিনিধি হই, তবে এক একজন আমরাই অসংখ্য সক্রেটিস, প্লেটো, বারট্রাণ্ড রাসেল,চমস্কিকে ধারণ করি আমাদের ব্যক্তি মানসে; এমনকি হতাশাবাদী ডারউইনের মাঝেও অতি সঙ্গোপনে বাস করে আশাবাদী এরিস্টটল; প্রয়োজন শুধু তাকে জাগিয়ে তোলা। মহামতি এরিস্টটল, আমরা ডারউইনদের নির্বাসনে পাঠিয়ে বন্ধুর জন্য পাড়ি দিতে পারি বন্ধুর পথ, হৃদয়ের অক্ষরে হৃদয়ে লিখি “হৃদয় স্বরলিপি”; আপনার বন্ধুভুবনে আমাদের ঠাই মিলবে তো??


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।