আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আনন্দশঙ্কর: তাঁর সঙ্গীতের জগৎ

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ

যে ক’জন বাঙালি কম্পোজার এ জগতে সুরের মায়া ছড়িয়েছেন আনন্দশঙ্কর তাদের মধ্যে অন্যতম। বাঙালি কম্পোজার হিসেবে তাঁর খ্যাতিই বিশ্বে সর্বাধিক। ফিউশন মিউজিকের গুরু হিসেবে আজও আনন্দশঙ্করকে গন্য করা হয়।

১৯৪২ সালের ১১ ডিসেম্বর। ভারতের উত্তর প্রদেশের আলমোরায় আনন্দশঙ্করের জন্ম। বাবা প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্কর; আমরা জানি, উদয়শঙ্কর ভারতীয় নৃত্যকে পাশ্চাত্যে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন । মা অমলা শঙ্কর। বোন মমতা শঙ্কর প্রখ্যাত অভিনেত্রী।

স্ত্রী তনুশ্রী শঙ্কর প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী। আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ এই যে- শঙ্কর পরিবারের আদি বাসস্থান ছিল বাংলাদেশের যশোর জেলায়। প্রখ্যাত সেতারবাদক রবিশঙ্কর এই শঙ্কর পরিবারেরই অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র। মজার কথা হল, সম্পর্কে জ্যাঠামশাই হলেও আনন্দ কিন্তু রবীশঙ্কশরের কাছে সেতারে হাতেখড়ি হয়নি; আনন্দর সেতারে হাতেখড়ি হয়েছিল বারানাসীর প্রখ্যাত সেতারবাদক ড. লালমনি মিশ্রের কাছে। যা হোক।

ষাটের দশকের শেষে আনন্দ পৌঁছলেন লস এ্যাঞ্জেলেস । গুণী শিল্পী ছিলেন, ওখানে অনেকেরই দৃষ্টি কারেন; ওখানে অনেকের সঙ্গেই “জ্যাম” করেন; মানে একসঙ্গে বাজান। যেমন, বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ট গিটারিস্ট জিমি হেনড্রিক্স। আনন্দর জনপ্রিয় হওয়ার বিশেষ কারণ ছিল। সেই সময়টায় সেতারকে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন রবীশঙ্কর।

কাজেই সেতার নিয়ে এক ধরনের উন্মাদনা ছিল মার্কিন মুলুকে। ভারতীয় সঙ্গীত-দর্শন নিয়ে বোদ্ধা মহলে আগ্রহ বাড়ছিল। বিট জেনারেশনের কবি জ্যাক ক্যারুয়াক ততদিনে ঘোষনা করে ফেলেছেন যে- ভারতবর্ষই হল জগতের হৃদয়। কবি গ্যারি স্নাইডার প্রমূখ ঝুঁকছিলেন বৌদ্ধধর্মের ওপর। মাছমাংস ছেড়ে নিরামিষ খাচ্ছেন, ধ্যান করছেন।

রবীশঙ্করের সেতার শুনছেন। কাজেই সেতার বাজিয়ে হিসেবে আনন্দর নাম ক্রমেই ছড়াচ্ছিল। আর আনন্দের কী হাত। Jumpin' Jack Flash শুনলেই টের পাওয়া যায়। যা হোক।

১৯৭০ এ প্রথম রেকর্ড বার করলেন আনন্দ। The Rolling Stones' Jumpin' Jack Flash and The Doors' Light My Fire. রাতারাতি বিশ্বময় শ্রোতাদের প্রিয় হয়ে উঠলে। বলা হল: আনন্দশঙ্কর ফিউশন মিউজিকের গুরু। বলা হল আনন্দর মিউজিক কাল্ট ক্লাসিক। ১৯৭৫ সালে কোলকাতায় ফিরে এলেন আনন্দ।

বিয়ে করলেন। বার করলেন তুমুল জনপ্রিয় অ্যালবাম "আনন্দশঙ্কর অ্যান্ড হিজ মিউজিক"। সারা ভারত এক নবতর যন্ত্রসঙ্গীতের মূর্চ্ছনায় মুগ্ধ হয়ে গেল। বাংলাদেশেও সেই ঢেউ ছড়িয়েছিল তখন; ঢাকায় তখন এমন একটিও অভিজাত পরিবার খুঁজে পাওয়া যেত কি না সন্দেহ যাদের সংগ্রহে আনন্দশঙ্করের এল পি অর্থাৎ লং প্লে রেকর্ড ছিল না। এক কথায় আনন্দশঙ্করের মিউজিক পারফেক্ট ফিউশন মিউজিক।

আমৃত্যু সঙ্গীত সাধনায় ডুবে ছিলেন ডুবেছিলেন। একদিন থেমে গেল সব সুর। ২৬ মার্চ; ১৯৯৯। বিশ্বের মুগ্ধ শ্রোতাদের বিষন্ন করে চিরদিনের জন্য বিদায় নিলেন আনন্দশঙ্কর। নৃত্যরত ময়ূর Click This Link অন্যান্য লিঙ্ক http://www.last.fm/music/Ananda+Shankar http://www.rhapsody.com/anandashankar


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।