আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজশাহী ও চাঁপাইয়ে বন্যার অবনতি

ভারত থেকে আসা পানির ঢলে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মহানন্দা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ২৩ এবং রাজশাহী পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। দুই জেলার বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট। গতকাল পর্যন্ত পৌঁছেনি প্রয়োজনীয় ত্রাণ।

আমাদের রাজশাহী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, রাজশাহীতে গত তিন দিন ধরে পদ্মা নদীর পানি বেড়েই চলেছে।

বুধবার বিকালে পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৬০ মিটার। যা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপরে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় মহানগরীর বোয়ালিয়া পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানির উচ্চতা দাঁড়ায় ১৮ দশমিক ৬৪ মিটারে। আর গতকাল দুপুর ১২টায় তা বেড়ে ১৮ দশমিক ৬৮ মিটার দাঁড়ায়। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে তলিয়ে গেছে রাজশাহী মহানগরীর পাঁচটি নিচু এলাকাসহ পবা, গোদাগাড়ী, বাঘা ও চারঘাট উপজেলার বেশ কিছু এলাকা।

এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পরিবার। ক্ষতিগ্রস্তদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং অস্থায়ী স্যানিটেশন ব্যবস্থা। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুনর-অর-রশিদ জানিয়েছেন, রাজশাহীর প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি পরিবার বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজশাহী মহানগরীর জিয়ানগর, শ্রীরামপুর, পঞ্চবটী, জাহাজঘাটি, পবার খানপুর, চর মাঝারদিয়ার, চর খিদিরপুর, চারঘাটের রাউথা, ইউসুফপুর, সাহাপুর, গোদাগাড়ীর ভাটোপাড়া ডাকবাংলো, চর আষাড়িয়াদহ, বাঘার গড়গড়ি ইউনিয়নের চকরাজাপুর, পাকুড়িয়া ইউনিয়নের আলাইপুর, চারঘাটের রাওথা ইউনিয়ন, ইউসুফপুর, সাহাপুর এলাকার বন্যাকবলিত মানুষ গত ৪-৫ দিন ধরে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী জানান, প্রতিদিনই কোনো না কোনো এলাকায় ত্রাণের চাল বিতরণ করা হচ্ছে।

তবে দু-একদিনের মধ্যেই আরও ত্রাণসামগ্রী এসে পৌঁছবে। তখন ব্যাপকহারে ত্রাণ বিতরণ শুরু হবে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে মেডিকেল টিমও গঠন করা হচ্ছে।

অপরদিকে আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ভারত ফারাক্কার সবকটি গেট খুলে দেওয়ায় উজান থেকে ধেয়ে আসা ঢলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ৮টি ও শিবগঞ্জ উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে ৫-৬ ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর।

অনেকেই পানির ওপর মাচা করে বসবাস করছেন। ইতোমধ্যে বন্যায় দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবারের ৭০ হাজার মানুষ।

জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলী জানান, বন্যায় এ পর্যন্ত শিবগঞ্জ উপজেলায় ২০ হাজার এবং সদর উপজেলায় ২৩ হাজার ৫১৮ জন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হিসাব করা হয়েছে। এ ছাড়া সদর উপজেলায় ১৬ কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ এবং ৭ কিলোমিটার সড়ক আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে ৯২ মে.টন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে সদরে ৫২ মে.টন ও শিবগঞ্জে ৪০ মে.টন দেওয়া হবে। তবে এ পর্যন্ত শিবগঞ্জ উপজেলায় ১৪ মে.টন এবং সদর উপজেলায় ২৬ মে.টন চাল ও নগদ ২৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।