বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন-২০০৮
গতকাল অনুষ্ঠিত ৭টি ভ্যালী ও বাগান পঞ্চায়েত কমিটি নির্বাচনে অধিকাংশ বাগানে বিপুল ভোটের ব্যবধানে সংগ্রাম কমিটির জয়লাভ
গতকাল ২৬ অক্টোবর বিশাল চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর একমাত্র ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের প্রথমবারের মতো ৭টি ভ্যালী ও ২০৮ টি চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির ২০০৮ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রাথমিক স্তরে গত রবিবার অনুষ্ঠিত ৭টি ভ্যালী ও ২০৮টি বাগান পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রাপ্ত ফলাফলে বেসরকারীভাবে শ্রমিক নেতা মাখন লাল কর্মকার ও রামভজন কৈরির নেতৃত্বাধীন সংগ্রাম কমিটি কর্তৃক মনোনীত ও সর্মথিত প্যানেল ১৪০টি বাগান পঞ্চায়েত কমিটি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছে। অপরদিকে, ৭টি ভ্যালীর নির্বাচনে অধিকাংশতে সংগ্রাম কমিটি বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছে বলে জানা গেছে।
দেশের চা শিল্পাঞ্চল সিলেট বিভাগের ৬টিসহ মোট ৭টি ভ্যালীর ২০৮ টি চা বাগানে পঞ্চায়েত কার্যকরী পরিষদ ও ভ্যালী কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে গত রবিবার। গতকাল সোমবার এ রির্পোট লিখা পর্যন্ত (রাত ৯·৩০ টায় ) বেসরকারী ভাবে প্রাপ্ত ফলাফলে ভ্যালী কার্যকরী পরিষদের নির্বাচনে সিলেট ভ্যালীর সভাপতি পদে সংগ্রাম কমিটির শ্রীবাস মহালী, সম্পাদক পদে বিজয় বুনার্জী সমর্থিত কৃপেশ বুনার্জী, জুড়ি ভ্যালিতে সভাপতি পদে বিজয় বুনার্জী সমর্থিত মুরলীধর গোয়ালা ও সম্পাদক পদে সংগ্রাম কমিটির বিজিত লাল কৈরী, লংলা ভ্যালিতে সভাপতি পদে সংগ্রাম কমিটির শহীদুল ইসলাম, সম্পাদক পদে সঞ্জু অধিকারী, লস্করপুর ভ্যালিতে সভাপতি পদে সংগ্রাম কমিটির অবিরত বাক্তি, সম্পাদক পদে যুবরাজ জরা, মনু-ধলাই ভ্যালিতে সভাপতি পদে বিজয় বুনার্জী সমর্থিত গরনা অরমিক ও সম্পাদক পদে সংগ্রাম কমিটির নির্মল পাইনকা ও সর্ববৃহৎ ভ্যালী বালিশিরা ভ্যালিতে সভাপতি পদে সংগ্রাম কমিটির বিজয় হাজরা, সম্পাদক পদে দেবেন্দ্র বাড়াইক জয়লাভ করেন।
অপর দিকে, পঞ্চায়েত কমিটির নির্বাচনে সংগ্রাম কমিটি মনোনীত ও সমর্থিত ১৪০টি চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটি জয়লাভ করে বলে জানা গেছে। তাদের অপর প্রতিদ্ধন্ধি বিজয় বুনার্জী সমর্থিত পঞ্চায়েত প্যানেল জয়লাভ করে ৪৭টি বাগানে। বাকী গুলোর ফলাফল এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
এদিকে আগামী ২ নভেম্বর বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ঐ তারিখে বিজয়ী পঞ্চায়েত কমিটি ও ভ্যালী কমিটির নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি গঠনের লক্ষ্যে নির্বাচন করবেন।
এ নির্বাচনে সংগ্রাম কমিটির সভাপতি পদে প্রতিদ্ধন্ধিতা করছেন শ্রীমঙ্গল রাজঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শ্রমিক নেতা মাখন লাল কর্মকার ও সম্পাদক পদে রাম ভজন কৈরী এবং রাজেন্দ্র বুনার্জী সমর্থিত সভাপতি বিজয় বুনার্জী ও সম্পাদক পদে সীতারাম অলমিক প্রতিদ্ধন্ধিতা করবেন।
আগামী ২ নভেম্বর একযুগে ৭টি ভ্যালীতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সিলেট বিভাগের সিলেট ভ্যালীর লাক্কাতুরা চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়, জুড়ি ভ্যালীর কাপনা পাহাড় চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়, লংলা ভ্যলীর হোলীছড়া চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়, মনু-ধলাই ভ্যালীর আলীনগর চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালিশিরা ভ্যালীর কাকিয়াছড়া চা বাগান অফিস ও লস্করপুর ভ্যালীর চন্ডিছড়া চা বাগান প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং চট্রগাম বিভাগের নেপচুন চা বাগান।
ইতিমধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় মৌলভীবাজার সদরে ১টি, রাজনগরে ৪টি, কুলাউড়ায় ৬টি, জুড়ি ৩টি, বড়লেখা ৫টি, কমলগঞ্জ ৭টি ,শ্রীমঙ্গল ৪টি, হবিগঞ্জ জেলায় চুনারুঘাট ৩টি, বাহুবল ২টি, নবীগঞ্জ ১টি, সিলেট জেলায় সিলেট সদর ৬টি, জৈন্তাপুর ৩টি, কানাইঘাট ১টি, ফেঞ্চুগঞ্জ ১টি, চট্টগ্রাম জেলায় ফটিকছড়ি ১৩টি, রাঙ্গুনিয়ায় ১টি, রাঙামাটি জেলায় কাপ্তাই ১টিসহ মোট ৬২টি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটি বিনা প্রতিদ্ধন্ধিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রাম জেলার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার একটি চা বাগানে পঞ্চায়েত কমিটির মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষিত হয়েছে।
মোট ৭টি চা বাগান পঞ্চায়েত কমিটির কোন মনোনয়নপত্র দাখিল করা হয়নি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখায় ২টি চা বাগান, শ্রীমঙ্গল ২টি , ফটিকছড়ি ১টি, রাঙ্গুনিয়ায় ১টি ও বাঁশখালিতে ১টি।
উল্লেখ্য, প্রথমে ২৩২টি চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটি গঠনের লক্ষ্যে মনোনয়নপত্র আহবান করা হয়েছিল। পরে চা শ্রমিকদের দাবীর প্রেক্ষিতে আরো ৬টি ফাঁড়ি চা বাগানের নাম অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। পঞ্চায়েত ও ভ্যালী নির্বাচনে এবছর মোট ভোটার সংখ্যা ৮৭,৯৩৭ জন।
এবারের নির্বাচনকে ঘিরে শুরু থেকেই চা বাগানগুলোতে ছিল ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দিপনা। বিশেষ করে বিভিন্ন সুবিধা বঞ্চিত চা শ্রমিকরা প্রথমবারের মত নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নিবাচিত করতে পেরে মহা খুশী। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও গত রবিবার ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীরা কে ভোট প্রদান করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।