~ ভাষা হোক উন্মুক্ত ~
গতকাল দেখলাম প্রিয় ছোট্ট আপুটা লিখেছে -
"মেয়েরা গোছানো ঘর আর অগোছালো বর পছন্দ করে, হয়তো আমিও করবো। কিন্তু কেন?"
কমেন্টে লিখেছিলাম - "চিরন্তন মাতৃত্ব"। ব্যস্ততায় আর ব্যাখ্যা করা হয়নি ব্যাপারটা।
কিন্তু ঘটনা আসলেই কি তাই?
আমরা মুখে বলি নারী পুরুষ সমান সমান, অথচ আমরা জানি যে নারী পুরুষ কখনই সমান না। পার্থক্যটা তবে কোথায়, শরীরে? পৃথিবীতে সব সৃষ্টির ভেতর সুন্দরতম গড়নে সৃষ্টি করা হয়েছে মানুষকে।
তার মাঝে নারীকে করা হয়েছে সুন্দরীতমা। যদিও প্রাণীকুলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর ব্যতিক্রম, সব খানে পুরুষ প্রাণীটি বেশী সুন্দর, সে তুলনায় মেয়েটি মলিন। তবে মানুষের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম কেন? এর কারণটা ঘটে গেছে সৃষ্টির শুরুতে। সেখানে নারীকে তৈরি করা হয়েছে শারীরিক ভাবে পুরুষের তুলনায় দুর্বল করে, এবং পুরুষকে করা হয়েছে তুলনামূলক ভাবে শক্তিশালী। ফলে কাজের ক্ষেত্রে নারীর ভাগে পড়েছে শস্য উৎপাদন, পুরুষের ভাগে শিকার।
কাজেই নারীকে হতে হয়েছে ঘরমুখী, পুরুষ রয়ে গেছে বাইরে। আর নারীর মন মানসিকতার পরিবর্তনটা ঘটেছে ঠিক তখনই।
নারী পুরুষের মাঝে যে পার্থক্য, তা তাদের মনে। বাহ্যিক অবয়বের পার্থক্যটা খুব সামান্যই। নারীর মন তাকে করে তুলেছে পরিপূর্ণ নারী।
তেমনি পুরুষের শক্তি, চিন্তাধারা, ছিনিয়ে নেবার প্রবণতা, অ-সহিষ্ণুতা - তাকে করে তুলেছে পুরুষ।
সব পুরুষই চায় তার বউটা একজন পরিপূর্ণ নারী হবে। নারীত্বের সবটুকুই ফুটে উঠবে তার মাঝে। তার প্রসাধন করা মুখ, বেশভূষা, পরিপাটি লম্বা চুল, শাখা সিঁদুর, আলতা চুড়ি, চোখের দৃষ্টি - সব কিছুই হোক নারীসুলভ কমনীয়তায় ভরা। অপর দিকে নারী কি চায়? আমি কেন, স্বয়ং ঈশ্বরের পক্ষেও না কি নারীর মন বোঝা ভার।
সাধারণ ভাবে বলতে গেলে, সৃষ্টির শুরুতে নারীকে দেয়া হয়েছে মাতৃত্বের গৌরব, সন্তান জন্ম দেয়া ও লালন পালন করার জন্য অসম্ভব রকম ধৈর্য, সহনশীলতা, মমতা, আবেগ, সৃষ্টিশীলতা, কোমলতা। সে কারণে নারী পছন্দ করে টিপটপ থাকতে, তার চারপাশ সুন্দর রাখতে, গুছিয়ে রাখতে।
পুরানো কথায় ফিরে যাই … এই চিরন্তন মাতৃত্বের কারণেই হয়তো অনেক কিশোরী মেয়েকে এলাকার ভয়াবহ মাস্তান ও বাজে ছেলেটির প্রেমে পড়তে দেখা যায়। কারণ মেয়েটিকে এপ্রোচ করার সময় ছেলেটি সব সময়েই বলে - আমি খুব খারাপ, আমি জানি, তুমি আমার জীবনে এলে আমি ভাল হয়ে যাব। মেয়ের তখন আলো দেখা পতঙ্গের মত অবস্থা, কিছুতেই তাকে ফেরানো যাবে না।
তার রক্তে মিশে আছে প্রকৃতির অমোঘ নির্দেশ - তুমি নারী, তুমি জননী, তুমি আশ্রয় দেবে, তুমি গুছিয়ে দেবে, তুমি সামলে রাখবে। সে কারণেই মেয়েদের আগ্রহটা অগোছালো, দুর্বিনীত, কঠিন ছেলেদের প্রতি বেশী থাকে। অগোছালো ছেলে মানুষটিকে গুছিয়ে দেয়া সে তার দায়িত্বের মধ্যে নিয়ে নেয়।
নারী পুরুষ সমান তার অধিকারের ক্ষেত্রে, মানুষ হিসেবে নারী পুরুষের মাঝে কোন বিভেদ নেই। পুরুষে যা করতে পারে, নারীও তা পারে।
তারপরেও নারী স্বতন্ত্র তার স্বত্বায়, তার মাতৃত্বের গৌরবে, তার মোহনীয়তায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।