ইমরোজ
আমার প্রিয় প্রফেসরের একটা উক্তি দিয়েই শুরু করি।
"বাংলাদেশের মানুষ অনেক বেশি অসুস্থ, নাহলে বাংলাদেশের মত ছোট একটা দেশে এত ওষুধ কোম্পানি কেন?"
"বাংলাদেশের মানুষ অনেক বাচাল, নাহলে দুনিয়ার কোন দেশে মোবাইল ফোন এত দ্রুত জনপ্রিয় হয় নাই যেমনটা এই দেশে হয়েছে। "
আমাদের দেশের অবস্থা দারুণ। সের দরে সিম বিক্রি করা হয় এলিফ্যান্ট রোড থেকে শুরু করে ফার্মগেট পর্যন্ত। আরে নীলক্ষেতের কথা তো বাদই দিলাম।
একেকটা প্যাকেটের দাম মাত্র পঞ্চাশ টাকা। আহা! কি মজা। "সময় ভুলে কথা চলুক রাত জুরে"।
দুঃখের কথা আমার জীবনে এখনও কিছু হলো না। রাতে কেউ কল ধরে বলল না, "কেমন আছো"? সেটা আমার ব্যার্থতা।
বাংলাদেশের মত একটা মোবাইল অপার্চুনিটি ল্যান্ডে আমার একটা গাল ফ্রেন্ড নাই।
প্রথম-আলোতে দেখলাম পুলিশ ১৫০০ সিম বন্ধ করে দিয়েছে। বাহ! ১৫০০ সীম বন্ধ করলে সেই ১৫০০ জন ব্যাক্তি (!) আর সিম কিনতে পারবেন না মনে হয়! না ভেবে কাজ করাটা বাঙ্গালীর একটা প্রচন্ড স্বভাব। মোবাইল কোম্পানিগুলো বিটিআরসির এর নিয়ম না মেনে রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই মোবাইলের সিম বিক্রি করেছে। এখন সেই সিম দিয়ে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সিমের কোন ওয়ারিশ নাই। থাকবে কেমন করে? কয়জনের বাপের ঠিক থাকে এই দেশে! (কথাটা মনে নিয়েন না)।
খবরে পড়লাম ৮০০০ এর উপর অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ ১৫০০ সিম বন্ধ করে দিয়েছে। আচ্ছা অভিযোগের অপরাধগুলো দিয়েও একটা এপিক নাটক লেখে ফেলা যাবে। অপরাধ গুলো নিম্নরূপঃ
১) মেয়েদেরকে রাতে ফোন করে ডিস্টার্ব করা।
২) হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজি করা।
৩) মাল্টিসিম ইউস করা।
৪) হুমকি দিয়ে মজা করা...ইত্যাদি ইত্যাদি।
তো আসুন এর প্রতিকার করার জন্য আমাদের ধর্তাকর্তারা আগে কি কি করেছেন তাতে একবার ভালো করে চোখ বুলিয়ে নেই।
১) রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সিম বিক্রি।
(মানে ফেরি-ওয়ালা যেমন মাছ বিক্রি করেন)
২) বিটি-আর-সির কোন ভ্রুক্ষেপ না করা। (পুতুল আর বিটি-আর-সির চেয়ারম্যান একই জিনিস)
৩) পুলিশের কাছে ব্যবহারকারীর কোন কপি না থাকে।
৪) সরকার কর্তৃক কোন আইডি কার্ড না দেওয়া।
৫) সব শেষে, পুলিশের ঘুম ভাঙ্গা।
সন্ত্রাসীরা জামিন পেয়ে ছাড়া পাচ্ছে।
আর তাদের সঙ্গী সাথীদের বের করার জন্য এখন জামিনের টাকা তুলছে চাঁদাবাজি করে। সেটাও মোবাইল দিয়েই।
আমাদের দেশটা পূর্বের অবস্থানে ফিরে যাচ্ছে এই যাত্রায় ভাবতে ভালই লাগছে। আর এও ভালো লাগছে শুনে যে ৮০০০ অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ১৫০০ সিম বন্ধ করেছে। ওগুলো না করে মাইকিং করে বললেই হত ভাই, আপনাদের সিমটা বন্ধ রাইখ্যেন।
সরকারে নাহলে মাইন্ড খাইবো!
নন রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফাইন থাকলেও, ভুয়া রেজিস্ট্রেশনের জন্য বিটি-আর-সি নামক উপহাসের ঢেকির করার নাকি কিছুই নাই। তাহলে দোষটা কারে দেওন যায়?
আমি পুলিশকেই দেব! ব্যাটা কাজের সময় কাজ কর না, ওহন ১৫০০ সিম বন্ধ কইরা দিন দুনিয়া উল্টাইয়া ফেলাইসো! যাদের সীম বন্ধ করছ, তারা মনে হয় আর সিম কিনতে পারবে না! এমন একটা ভাব!
গ্রামীন, বাংলালিংক, একটেল, টেলিটক, ওয়ারিদ সমস্ত অপারেটরকে ভূয়া রেজিস্ট্রেশনের জন্য জেল জরিমানা করা উচিৎ ছিল। নন রেজিস্ট্রেশনের জন্য ফাইন করা উচিৎ ছিল। নাহলে এদের শিক্ষা আর হবে কবে?
বিটি-আর-সি নামক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা যাতে ঘুমিয়ে না থেকে কাজ করতে পারেন তার জন্য সরকার তাদের শোকজ চাইতে পারত। কিছুই না করে ১৫০০ বন্ধ করে বলে ফেললাম, "খুব শিগগীর এই সমস্যার সমাধান হবে"!
এর থেকে বড় জোকস আর কোথাও শুনি নাই।
আমার মতে বিটি-আর-সির নিয়ম করা উচিৎ একটা লোক সর্বোচ্চ একটা সিম কিনতে পারবেন। তার ডেটাবেজ সরকারি ওয়েবসাইটে থাকবে। অন্য কোন কোম্পানি থেকে সিম কিনতে গেলে কোম্পানি যদি ডেটাবেসে তার নাম দেখে তাহলে সিম তার কাছে বিক্রি করবে না। এরকমটা বলছি কারণ এক লোকের কাছ থেকে মাত্র ৪৪ টা সিম উদ্ধার করা গেছে। যা দিয়ে সে চাঁদাবাজি করত।
এইবুদ্ধিটা আমার মত অশিক্ষিত বরবরের মাথায় আসতে পারে। তাদের মত বিশালাকার অফিসারদের মাথায় কেন আসে না বুঝলাম না। আসে না এইজন্য হয়তো মোবাইল কোম্পানিগুলো তখন রোজগারে টান পড়বে।
কিন্তু বিদেশে এই সিস্টেম চালু আছে। তাই তাদের দেশে কয়েক কোটি ইউজার নাই।
আমাদের দেশের মত। আচ্ছা একটা প্রশ্ন আমরা কী কোন কিছুই ঠিক মত করতে পারি না?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।