গলাবাজ আর সত্যিকারের লেখক এই ব্লগে টিকে থাকে, আমি কোনটাই না
পাখির ওখান থেকে ফিরেই দেখি ডলফিন শো তে ঢোকার জন্য লম্বা লাইন পড়ে গেছে। গেটের কাছে গেলাম, গেটের মহিলা বলে আপনার টিকেট হলো শুধু জু তে ঢোকার, এই শোর টিকিট আলাদা কিনতে হবে। এক দৌড়ে যেয়ে টিকেট কাটলাম, ভাগ্যিস ওখানে লাইন ছিলোনা। ভিতরে যেয়ে দেখি পুরা সিনেমা হলের মতো অবস্হা। মাঝামাঝি একটা জায়গায় বসে পড়লাম।
সামনে পিছনে পোলাপাইন ক্যাও ক্যাও করছে আর খেয়েই যাচ্ছে।
ডলফিন শোর হলের সামনে ফোয়ারা
আমজনতা লাইনে দাঁড়িয়ে শোর অপেক্ষায়
ডলফিনের সাথে এক পারফর্মার
শোর আরেকটা দৃশ্য
ঠিক সাড়ে বারোটায় ডলফিন শো শুরু হলো। ভিডিও করবো না স্টিল পিকচার তুলবো এই করতে করতে অনেক খানি ভিডিও করেই ফেললাম। মিউজিকের তালে তালে শীল মাছ আর ডলফিনের দুস্টামী আসলেই মজা লাগে। যদিও এর আগে টিভিতে অনেক দেখেছি, কিন্তু সামনে বসে দেখার মজাই আলাদা।
ডলফিন গুলাও ফাজিল আছে একটু পর পর মুখের মধ্যে মাছ না দিলে কথা শুনতে চায়না। আমাদের ডলফিন (দুরন্ত) চিকেন খাইতে ওস্তাদ হইলেও এরা দেখলাম মাছই বেশি খায়।
ডলফিন শো পার্ট ১
ডলফিন শো পার্ট ২
ওখান থেকে বেরিয়েই টের পেলাম লান্চ না করলে আর হাটা সম্ভব না। পাশেই ছায়া ঘেরা একটা জায়গায় বেন্চিতে বসে খিচুড়ি তেহারী (গরুর মাংস কুচি মিক্সড উইথ খিচুড়ি), সালাদ, কোক মেরে দিলাম, আহ সে কি স্বাদ। এবার কোন দিকে যাওয়া যায়? ম্যাপে দেখি ভাল্লুক আছে সামনে, গেলাম ঐদিকে, এর ঠিক সামনেই একটা জায়গা ঘেরা ময়ুর ঘুরে বেড়ায় তার ভিতরে, একেবারে কাছ থেকে দেখার সুযোগ আছে।
ছবি তোলার বিশেষ পোজ
বেচারা পোজ দিতে দিতে হয়রান
এমনকি বাঘ মামাদের ও জিহবা বাইরে
সাইনবোর্ডে দেখি স্নেক হাউজ, গেলাম সাপ দেখতে। কি সুন্দর চেহারা এক একটার। ওগুলোর ছবি আর দিলাম না। পাশেই কুমির ভাইয়াদের বসবাস। একটা দেখি হা করে বাতাস খাচ্ছে, ক্যামেরা তো রেডিই ছিলো, কি আর করা।
অনেক গুলো বান্দরের খাঁচা এর পাশেই। ওদের লাফালাফির কিছু ছবি তুলে বের হয়ে আসলাম।
এইটারেও হা করা পাইছি
নতুন করে বলার কিছু নেই
মনুষ্য জাতির আচরণে সে খুবই হতাশ
এরা কাঁচের ঘরে বড় হচ্ছে
এরও একই অবস্হা
একটা বেবি আনিম্যাল হাউজ আছে। ওখানে বাবু বাঘ সিংহ পেলে বড় করে। কাঁচে ঘেরা ঘরে ওরা দুস্টুমি করছে।
আমরা কাছ থেকে দেখলাম আর কিছু ছবিও নিলাম। এটুকু ঘুরতে যেয়েই অবস্হা টাইট। কারণ পাহাড়ি রাস্তা সব জায়গায়, ঢাল বেয়ে একটু উঠলেই হাঁপ ধরে যায়। এখান থেকে একটু দূরে কেবল কারের ফিনিসিং পয়েন্ট। প্যাকেজ টিকেটে ওটার একটা ট্যুর আছে।
যেয়ে টিকেট দেখাতেই এক জায়গায় ওয়েট করতে বললো। আগে কখনো কেবল কারে উঠিনি। চেয়ার গুলো ঘুরে ঘুরে আসে, জায়গা মতো উল্টো হয়ে দাড়িয়ে চট করে উঠে পড়তে হয়।
লেকের উপর দিয়ে চলে গেছে কেবল কার
কেবল কার থেকে তোলা
নীচে তাকাতে ভয় লাগে
উপরে উঠে দারুণ ভালো লাগলো। স্লো চলে বলেই মনে হয় কোন ভয় করেনি।
নীচে জাল বিছানো তবে মনে হলোনা ওটায় পড়লে কেউ আসবে উদ্ধার করতে। দুইপাশে উঁচু পাহাড় আর সামনে সারি সারি চলন্ত চেয়ার। সে এক অন্যরকম অনুভুতি। অনেক অনেক ছবি তুললাম চারপাশের। ওপাশের লাইনে যারাই যায় তাদেরকে হাত নাড়ি আর হ্যালো বলি।
কোন কোন চেয়ারে দেখি ১০/১২ বয়সের দুটো ছেলে একা বসা, পিছনের চেয়ারে বাবা মা। আমাদের দেশের বাবা মা ওরকম একা বাচ্চা দের ছাড়তো কিনা সন্দেহ। চিড়িয়াখানার এক মাথা থেকে আরেক মাথা (যেখান দিয়ে আমরা ঢুকেছিলাম) পর্যন্ত কেবল কারে চড়ে আসলাম।
যাদের ছাতা ছিলোনা অবস্হা তাদের টাইট
ছায়াঘেরা একটি পথ
নেমে গরমে আর হাটা যাচ্ছিলো না। এক জায়গায় বসে ঠিক করলাম এবার জু থেকে বেরিয়ে যাবো রোজ গার্ডেনে।
জুর গেটের ঠিক উল্টো দিকে রোজ গার্ডেন। রোজ গার্ডেনে টিকেট কেটে ঢুকেই মনে হলো কাছের জুস আর কোকের স্টক তো শেষ। গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। সাধারণত এরকম পার্কে খাওয়ার পানি কালেক্ট করার ট্যাপ থাকে, কিনতু বেশ কিছুক্ষন খুঁজেও পেলাম না। গার্ডকে বলাতে সে বাইরে একটা দোকান দেখিয়ে দিলো।
পানি কিনে নিয়ে এসে আরেকদিক হাটতেই দেখি খাওয়ার পানির ট্যাপ।
রোজ গার্ডেনের বর্ননা আর কি দিবো ছবিতেই নাহয় সেটার রূপ দেখে নেবেন আপনারা শেষ পর্বে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।