সাহাদাত উদরাজী www.udrajirannaghor.wordpress.com
ভোটের দিন এসে গেছে। আমাদের কারেন্ট এম্পি সাহাবউদ্দিন, নিজ এলাকায় গনসংযোগ করতে গেছেন, যা তিনি এখন নিয়মিত করছেন। গত সাড়ে সাড়ে চার বছরে হাতে গোনা কয়েকবার গেলেও এখন তিনি নিয়মিত যাচ্ছেন! এলাকার লোকজনের জন্য জানপ্রান, হেঁটে বেড়াচ্ছেন বিলে ঝিলে হাটে মাঠে নৌকায়! যাকে সামনে পাছেন কোলাকুলি করছেন, বিশেষ করে কঙ্কালসার মানুষ পেলে কোলাকুলি করে এপিএস ইমরানকে দিয়ে ডিজিটাল এন্ড্রয়েড ক্যামেরায় সেই ছবি তুলেই নিচ্ছেন এবং সেই সব ছবি আবার ফেইসবুকে গুলশানের বিরাট বাড়ি থেকে আপলোড করাচ্ছেন, মেয়ের গৃহ শিক্ষককে দিয়ে।
প্রায় প্রতিদিন খবর নেন, কমেন্ট কি পড়ছে! গৃহ শিক্ষক জাবেদ চালাক টেকনিক্যাল ছেলে, বাকাত্যারা কমেন্ট গুলো কয়েকদিন পর পর ডিলিট করে, তেলে চকচকে খাঁটি ঘি মাখা কমেন্ট গুলো রেখে কয়েকদিন পর পর স্যার’কে দেখান কিংবা প্রিন্ট জমা দেন হাসি মুখে।
আজ সারা দিন প্রাডো গাড়ি নিয়ে এলাকায় অনেক ঘুরেছেন, জুম্মার নামাজ পড়ছেন পশ্চিম পাড়ার সাফরা মসজিদে।
মসজিদের খুতবার আগে ইমাম সাহেব, স্যার’কে কিছু বলার জন্য মাইক দেন। মাইক পেয়ে উপস্থিত মুসল্লিদের সালাম জানিয়ে প্রায় ঘন্টা খানেক কথা বললেন। মসজিদের জন্য অনুদান ঘোষনা করলেন, হাত তালি দিতে গিয়েও সবাই চুপ হয়ে গেলো। ফাঁকে ‘স্যার’ ভোট ভিক্ষাও চেয়ে ফেললেন! হাত তুলে প্রতিজ্ঞাটা করিয়ে নিলে ভাল হত! আগামীবারে নির্বাচিত হলে এই মসজিদ তিনি তিনতলা এসি করে দেবেন!
এভাবে আজকাল প্রতিদিন চলছে! সময় কম তিনি বুঝে গেছেন! আগামী কালও এভাবে চালাবেন। নির্বাচনের প্রদপার্থীর নাম না ঘোষনা করা পর্যন্ত এই কষ্ট তিনি করে যাবেন বলেই ভাবছেন।
মনে মনে ভাবেন, কখনো হাওরের পানির দিকে তাকিয়ে হাসেন, দূরে ওই তালগাছটা দেখে কত কি মনে হয়, এবার নির্বাচিত হলেই হল! কানাডার ভেঙ্কুভারে যে জায়গাটা নিয়েছেন, সেটায় একটা বিরাট বিল্ডিং তুলবেন। আরো কত কি ইচ্ছা! এক জন্মে মানুষ এত কম কি করে করে? সোনার থালে খাবার না খেতে পারলে ইচ্ছা কি পুরন হবে!
ভাবতে ভাবতেই প্রাডো এসে থামে, জলিল শেখের বাড়ির কাছাকাছি। অভাবী জলিল শেখ ভাবে, এম্পি আসছেন বাড়ির দরজায়। এটাই চান্স! এই চান্সে এম্পি থেকে কিছু বাগিয়ে নিতে হবে। গরীব জলিল শেখ মাঠে বসে ঘাস চিবুতে থাকে।
; কি রে জলিল, কি করিস?
- ঘাস খাই। ক্ষুদার জ্বালায় আর পারি না।
; তা চল, ঢাকায় আমার বাসায় চল।
অভাবী জলিল শেখের মনে আনন্দ ধরে না। ঢাকায় যাবে।
হাত বাড়িয়ে স্ত্রী জারিনাকে দেখিয়ে বলে, স্যার আমার স্ত্রীও ঘাস খায়।
; তা তোর স্ত্রীকে নিয়েও ঢাকায় আমার বাসায় চল।
এবার আর জলিল শেখের খুশির সীমা নেই। জলিল শেখ তার ছেলে দুটোকে দেখিয়ে বলে, স্যার ওরা ঘাস খেয়ে কিছুক্ষন আগে ঘুমিয়ে পড়ছে।
; তা ওদের নিয়েও ঢাকায় চল।
ঢাকায় আমার বাড়ীর আগিনায় অনেক ঘাস আছে, তোরা খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবি। আর আমার আংগিনাও পরিস্কার থাকবে!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।