বেশ কিছুদিন আগে (২/৩মাস হবে হয়তো) এক সকালে অফিসে গিয়েছি। অভ্যাসমত পত্রিকার পাতায় নজর বুলাতেই আটকে গেল একটি খবরে। নিদারুন মর্মব্যাথায় কয়েকফোটা তপ্ত অশ্রু গড়িয়ে পড়ল পত্রিকার উপর। কাদতেঁ ইচ্ছা করল অনেকক্ষন। কিন্তু আমার আবার বদ অভ্যাস কোন যন্ত্রনাতেই আমার কান্না পায় না।
কিন্তু আজ সত্যি সত্যি চোঁখ থেকে অশ্রু গড়িয়ে পড়াতেই নিজর কাছেই অবাক লাগছে। কার জন্য কাঁদছি। ঝিনাইদহের সাহাবউদ্দিন লাল্টুর জন্য? কেন? সে কি আমার আত্মীয় ছিল?
এস.এস.সি পরীক্ষার পরে দাদার বাড়ীতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। ভোলার দেৌলতখান উপজেলায়। বাবার সরকারী চাকুরির কারনে।
সব সময়েই ঢাকায় থেকেছি। দেশে খুব একটা যাত্তয়া হয়নি। কাঁচা মাটিতে খালি পায়ে হাটা এবং বৃষ্টির দিনে গাছে উঠা কেমন যেন লাগতো। বৃষ্টির পানি গাছের পাতার উপরে পরে সেই ফোটা গায়ে পড়লে কি যে শিহরন লাগতো। একদিন ঠিকই বিপত্তি ঘটলো্।
আমার জীবনটাকে এই শিহরনই অর্ধেকটা অচল করে দিল। বৃষ্টির দিনে গাছে উঠেছি ভাল কিন্তু নামার সময়ই পা পিছলে পড়ে পা টা কেটে গেল কাদার ভেতর লুকিয়ে থাকা মাটির হাড়ির উল্টো করে রাখা গলার সাথে। অনেক রক্ত ক্ষরণ হয়েছিল। উপজেলা কমপ্লেক্সের যতসামান্য চিকিতসা শেষে পিজি হাসপাতালে আবারো অপারেশনের জন্য ভর্তি হোয়া। অনেকিদিন ভুগেছি।
একনো ভুগছি। পা আর ভাল হয়নি। কারন পায়ের পাতার পাচটি রগই কাটা গিয়েছিল। কিন্তু এত যন্ত্রনায় ত্ত কোনদিন আমার চোখ থেকে অশ্রু নির্গত হয়নি।
ঝিনাইদহের সাহাবউদ্দিন লাল্টুর জন্য কেন অশ্রু গড়িয়ে পড়লো তাতো বুঝতে পারছি না।
একবার মাত্র তার সাথে কথা হয়েছিল। একবারই দেখা। তা ত্ত তার এলাকার ছাত্র সংবর্ধনার কাজ করানোর জন্য ব্যবসায়িক প্রয়োজনে। কিন্তু এতটুকুইতেই তার কথা আমার অন্তরে গেঁথে ছিল।
নিখাত শরীরে অটুট গড়ন।
চেহারাতে এক স্বর্গীয় আলোর ঝলসানি। ঠোটেঁর কোনে লুকিয়ে থাকে চেনা অচেনা লোকের জন্য প্রানভরা হাসি। কয়েকটি কথায়ই যেন লোকদের আপন করে নেয়ার এক যাদুকরী বিদ্যা জানা আছে তার। সে নাকি ভিপি ছিল বিখ্যাত কে.সি. কলেজের। ছাত্র যুবা তাকে ঠিকই চিনে নিয়েছিল।
ঝিনাইদহের আপামর জনতা তাকে জানতো ভব্যষ্যতের কান্ডারি হিসেবে। এক সকালে ঘাতক ট্রাক কেড়ে নিল তার প্রান। নিভিয়ে দিল ঝিনাইদহের আলো বাতাসে বেড়ে উঠা ঝিনাইদহের প্রান সাহাবউদ্দিন লাল্টু নামক প্রানপ্রদিপ কে?
লাল্টুকে আমি একবারই দেখেছি। কথা হয়েছিল অল্প কিছুক্ষণ। কিন্তু পত্রিকা খুললেই ঝিনাইদহের খবর থাকলে দেখতাম লাল্টুর কোন খবর আছে কিনা? যানতাম এই তরুন অবশ্যই পত্রিকার শিরোনাম হবে একদিন।
কিন্ত এভাবে সংবাদ হয়ে পত্রিকায় আসবে সেটা হৃদয় মানতে পারেনি।
লাল্টু তুমি আদর্শ হয়ে থাকবে আমাদের মাঝে। তুমি থাকবে প্রেরণার উত্স্ হয়ে। তোমার জন্য জমিয়ে রাখলাম কয়েকফোটা অশ্রু।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।