আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রকেটের পুর্নজন্ম (১)

বাংলা ব্লগ

কালু মিয়ার বউ সখিনা বিবি এ পর্যন্ত ছয়বার বিয়াইছে, প্রতি বছরে একবার করে বিয়াইতেছে । এখন আবার বিয়ানোর সময় হয়েছে । কালু মিয়ার জন্য এটা নতুন কিছু নয় । সে প্রতিদিন ক্ষেতে যায় । ঘরে এসে খায় দায় ঘুমায় ।

তার পোয়াতি বউয়ের খুব একটা খবর রাখেনা । সে জানে পোয়াতি বউ সময় হলেই আরেকটা বিয়াবে । সখিনা বিবির জন্যও এটা নতুন কিছু নয় । পোয়াতি হলেও সে প্রতিদিনের মতই ঘরের কাজকর্ম করে । সে জানে, শুধু একটি দিন আসবে, সে ঘরে গিয়ে শোবে, পাশের বাড়ীর নুরানী খালা, নেছারা বানু, জমিলা বিবি ওরা আসবে ।

আর সে একটি বাচ্চার কান্না শোনার জন্য অপেক্ষা করবে । কালু মিয়া ক্ষেতের কাজ শেষে ঘরে ফিরে সেই বাচ্চার একটা নাম রাখবে। পরদিন থেকে সখিনা বিবিকে আবার ঘরের কাজে হাত লাগাতে হবে । এরকমই চলে আসছিল ছয় বছর ধরে । তবে এবার কিছুদিন ধরে একটু ভিন্ন রকম অনুভূতি হচ্ছে সখিনা বিবির ।

এবার পেটের মধ্যে যে বাসা বেধেছে, সে খুব জ্বালাতন করছে । কোন কোন সময় এত নাড়াচাড়া করছে, যেন তখনই বেরিয়ে আসে । সখিনা বিবির সবকিছু গোলমাল হয়ে যায় । ভাগ্য ভাল ঘরের কাজকর্মে তার মেয়ে জরিনা ও কুলসুম সাহায্য করে । তাতে তার একটু সুবিধা হয় ।

তার ছেলেদেরকে কালু মিয়া ক্ষেতে নিয়ে যায় । কয়েকদিন ধরে দুপুরবেলা ক্ষেতে ভাত পাঠাতে দেরী হয়ে যায় । কালু মিয়া ঘরে এসে এজন্য গজগজ করে । তার জীবনে যেটা কখনো হয়নি , এবার সখিনা বিবির সেটা হলো । আজকে দুপুরবেলা উঠানে মাথা ঘুরে পরে গেল ।

জরিনা আর কুলসুম দুজনে ধরাধরি করে মাকে ঘরে নিয়ে যেতে চায় । কিন্তু পারেনা । পাশের বাড়ীর নুরানী খালাকে খবর দেয়, তারপর তারা সবাই মিলে তাকে ঘরের ভিতরে নিয়ে যায় । কুলসুম দৌড়ে ক্ষেতে গিয়ে তার বাবাকে খবর দেয় । এতে কালু মিয়ার কোন সাড়াশব্দ নেই ।

কিছুক্ষন পরে কালু মিয়া বলে , "যা ঘরে যা । কিছু হবেনা । প্রতিবার যা হয় । তাই হবে । আমি ক্ষেতের কাম শেষ করেই আসুম ।

" কুলসুম তার বাবাকে ঠিক বুঝাতে পারেনা । সে দাড়িয়ে থাকে । কালু মিয়া তাকে ধমক দিয়ে পাঠিয়ে দেয় । নুরানী খালা, নেছারা বানু সবাই এসেছে । তাদের যা করার করছে ।

কেউ দোয়া দরুদ পড়ে সখিনা বিবি কে ফু দিচ্ছে । কেউ বাতাস করছে । সখিনা বিবির জ্ঞান ফিরে এসেছে । কিন্তু তার অবস্থা খুব একটা ভাল মনে হচ্ছেনা । কালু মিয়া ক্ষেতের কাজ শেষ হলে তার ছেলেদেরকে বাড়ী পাঠিয়ে দেয় ।

সে ক্ষেতের পাশে বসে একটা বিড়ি ধরায়। তার নতুন বাচ্চার জন্য একটি নাম ঠিক করতে হবে । ছেলে হলে কি নাম রাখবে আর মেয়ে হলে কি নাম রাখবে , সে বসে ভাবতে থাকে । [চলবে]

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.