রিক্সাটা সোবহানবাগের কাছাকাছি আসতেই ওর হুঁশ ফেরে। ভাড়া মিটিয়ে বড়রাস্তায় নেমে যায় সে। এখান থেকে মুকুলদের বাসা খুব কাছে। এটুকু হেটে যাবে সে।
বেল টিপতেই দরজা খুলে দিল মুকুলের ছোট বোন ঢেউ।
আরে ত্রিরঞ্জনদা যে! অনেকদিন পর এলেন । আসেন, ভেতরে আসেন। ভাইয়া একটু বাইরে গেল কিছুক্ষন আগে। কিন্তু আপনি বসেন, ও এখনই চলে আসবে। আমাকে বলে গেছে আপনি আসবেন।
ড্রয়িংরুমের ফ্যানটা ছেড়ে দিয়ে ত্রিরঞ্জনকে বসতে বলল। বলল আমি এখনি আসছি, আপনি বসেন।
তোমার কোনও কাজ থাকলে আসার দরকার নেই। আমি বসে বসে টিভি দেখব কিংবা ম্যাগাজিন পড়ে নেব মুকুল আসা পর্যন্ত।
না-না ! আমার কোনো কাজ নেই ।
আপনার জন্য একটু চা করে নিয়ে আসি। তারপর চা খেতে খেতে গল্প করা যাবে।
আচ্ছা ঠিক আছে। থাঙ্ক-ইউ ঢেউ। আসলেই খুব চায়ের তেষ্টা পেয়েছে।
আমি একদৌড়ে যাবে আর হেটে হেটে আসবো। বেশিক্ষন লাগবে না।
কেন ? হেটে হেটে কেন আসবে? দৌড়ে গেলে দৌড়ে আসবে। পড়ে গেলে উঠবে না। বলেই ত্রিরঞ্জন হেসে ফেলল।
ও-মা ! যাবার সময়তো খালি হাত, তাই দৌড়ে যেতে পারব কিন্তু আসার সময়তো চা থাকবে হাতে। তখন দৌড়াব কি-করে? হি-হি-হি।
টিভিটা চালিয়ে দিল ত্রিরঞ্জন। যে কোনও চ্যানেল খুললেই শুধু খবর, আলোচনা, তৃতীয়, চতুর্থ ইত্যাকার মাত্রা। উফ অতিষ্ট লাগে ওর কাছে এইসব ভন্ডামী দেখলে।
এই তত্বাবধায়ক সরকারের আমলেই খুব বেশি আলোচনা জাতীয় অনুষ্টান শুরু হয়েছে। বেশিরভাগই রাজনীতি জাতীয় তবে ভাল ভাল কিছু অনুষ্টানও হচ্ছে এখন । দেশে এখন খুব প্রয়োজন গঠনমুলক অনুষ্টান যেমন দেশের ট্রান্সপোর্টেশান ব্যবস্থা, শিল্পায়ন, বিদ্যুতের ব্যবস্থা, ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে অনুষ্টান।
এরচেয়ে বিজ্ঞাপনগুলোই এখন বেশি আকর্ষনীয় মনে হয় ওর কাছে। এখন খবর হচ্ছে।
ধুর! বলেই টিভিটা অফ করে দিল সে।
টিভি অসহ্য লাগছে? এরই মধ্যে ঢেউ চা নিয়ে চলে এসেছে।
এইসব বকবক কে শোনে বল? জনগনের কি উপকারটা হয় এইসবে? ঠিকমতন জরিপ করলে দেখা যাবে ৭০ শতাংস মানুষ এইসব অনুষ্টান দেখে না। আর খবর? একই খবর বিগত ৩৮ বছর ধরে চলছে এদেশে।
তা ঠিক বলেছেন।
বাদ দেন এসব। আপনার খবর বলেন। নতুন কোনও ছবি এঁকেছেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।