আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হযরত নূহ (আঃ)

( কুরআন এমন এক দিক নির্দেশনাকারী গ্রন্থ যার মধ্যে রয়েছে জ্ঞানীদের জন্যে প্রচুর নিদর্শন। যা তাদের পথ চলতে সাহায্য করবে। যার আক্ষরিক অর্থ হল এর সকল অর্থ (আভ্যন্তরীণ) সকলের জন্যে উন্মুক্ত নয়। ) হযরত নূহ (আঃ) কুরআনের বর্ণনা অনুসারে, তিনি ছিলেন একজন নবী। হযরত নূহ (আঃ) নামে কুরআনের নূহ একটি সূরা নাযিল হয়েছে।

এই সূরাতে হযরত নূহ (আঃ) সম্পর্কে বলা হয়েছে। হযরত নূহ (আঃ) ছিলেন আল্লাহর অন্যতম প্রধান নবী ও রাসূল ছিলেন। আল-কুরআনে আল্লাহ বলেন,..."নিশ্চয়ই আমরা নূহ কে পাঠিয়ে ছিলাম তার লোকদের কাছে এই বলে-'তোমরা লোকদেরকে সতর্ক করে দাও তাদের উপর মর্মন্দ্দুদ শাস্তি আসবার আগে । উল্লেখ্য,আধুনিক অনেক গবেষকও মনে করছেন, প্রায় এক লাখ ৯৫ হাজার বছর আগে পূর্ব আফ্রিকায় আধুনিক মানুষের উদ্ভব ঘটেছিল। পঞ্চাশ হাজার বছরের মধ্যেই তারা মহাদেশের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে।

পাঁচ’শ কোটি বছরের পুরানো এ ‘পৃথিবী’ নামের গ্রহটি মানুষের স্বৈরাচার ও ভ্রষ্টাচারে যে হারে দ্রুত লয়ে ধূসর গ্রহে পরিণত হতে চলেছে তা ভাবলে শিউরে উঠতে হয়। সূরা হুদ ৪২ থেকে ৪৪ নম্বর আয়াত -আয়াতে বলা হয়েছে, “পর্বত প্রমাণ তরঙ্গের মধ্যে এ (নৌকা) তাদের নিয়ে বয়ে চললো, নূহ তার পুত্রকে যে (তাদের ডাকে) পৃথক ছিল, ডেকেবললেন, হে বৎস আমাদের সঙ্গে আরোহন কর এবং অবিশ্বাসী কাফেরদের সঙ্গী হয়ো না। ”হযরত নূহ (আঃ) বহু বছর বেঁচেছিলেন এবংমানুষকে সৎ পথে আনারজন্য তিনি বহুকাল ধরে চেষ্টা চালান। কিন্তু এক পর্যায়ে দেখা গেল তার সম্প্রদায়ের মুষ্টিমেয় মানুষ ছাড়া আর কেউ সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে রাজী হলো না, বরং তারা হযরত নূহ(আঃ)কে নিয়ে নানাভাবে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করা শুরু করলো। পৃথিবীতে আদি যুগে ধ্বংসপ্রাপ্ত ৬টি জাতির ঘটনা কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বর্ণিত হয়েছে এবং কুরআনের মাধ্যমেই জগদ্বাসী তাদের খবর জানতে পেরেছে।

যাতে মুসলিম উম্মাহ ও পৃথিবীবাসী তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। আদম (আঃ) ৯৬০ বছর বেঁচে ছিলেন এবং নূহ (আঃ) ৯৫০ বছর জীবন পেয়েছিলেন। নূহ (আঃ) ইরাকের মূছেল নগরীতে স্বীয় সম্প্রদায়ের সাথে বসবাস করতেন। হযরত নূহ (আঃ) সম্পর্কে পবিত্র কুরআনের ২৮টি সূরায় ৮১টি আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ্‌র নবীদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তাদের হৃদয় ছিল কোমল, মানুষের জন্য দয়া ও স্নেহ মমতায় পরিপূর্ণ; হযরত নূহ্‌ও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না।

বাইবেলের গল্প অনুসারে, পৃথিবীজুড়ে আসা এক ভয়াবহ বন্যার (মহাপ্লাবন) সময় ৫০০ ফুট দীর্ঘ ও ৮০ ফুট উঁচু ওই বিশালাকার নৌকা তৈরি করেছিলেন নবী হজরত নূহ (আ.)। ওই নৌকায় তিনি মানুষ এবং বিভিন্ন প্রাণীর জোড়া তুলে নিয়ে ধ্বংসের হাত থেকে পৃথিবীর মানুষ ও প্রাণিকুলকে বাঁচিয়েছিলেন। কিন্তু নূহ (আ.) কি সত্যিই অত বড় একটি নৌকা করতে পেরেছিলেন বা পারলেও এতে এত প্রাণীর স্থান সংকুলান সম্ভব হয়েছিল কি না, তা নিয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন ও সন্দেহ। আর মানুষের এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে মনের ভেতর থেকে সন্দেহ ও অবিশ্বাস দূর করতেই কেন্টাকিতে ওই নৌকা নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নূহ (আঃ)-এর চারটি পুত্র।

প্রথম তিনজন ঈমান আনেন। কিন্তু শেষোক্ত জন কাফের হয়ে প্লাবনে ডুবে মারা যায়। ঈমান না থাকার কারণে নূহের স্ত্রী ও পুত্র যেমন নাজাত লাভে ব্যর্থ হয়েছে, তেমনি এ যুগেও হওয়া সম্ভব। কাফির ও মুশরিক সন্তান বা কোন নিকটাত্মীয়ের মাগফেরাতের জন্য আল্লাহর নিকটে দো‘আ করা জায়েয নয়। নূহ বললঃ হে আমার পালনকর্তা, আমার সম্প্রদায় আমাকে অমান্য করেছে আর অনুসরণ করছে এমন লোককে, যার ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কেবল তার ক্ষতিই বৃদ্ধি করছে।

মহাপ্লাবনের শেষে আরারাত কিংবা জুদাই পর্বতের আশপাশে কোথাও নোঙ্গর ফেলেছিল সেই জাহাজ। তবে এদিক থেকে আরারাত পর্বতের পাল্লাই বেশি ভারি। নূহ (আঃ)-এর কাঠের তৈরী নৌকাটির দৈর্ঘ্য ৩০০ ইউনিট, প্রস্থ ৫০ ইউনিট এবং উচ্চতা ৩০ ইউনিট ছিল যা আধুনিক ইউনিটে পরিবর্তন করলে মোটামুটি দাড়ায় ১৩৫ মিঃ দীর্ঘ, ২২.৫ মিঃ প্রস্থ আর ১৩.৫ মিঃ উচু। চীনা আর তুরস্কের গবেষকদল তুরস্কের মাউন্ট আরারাতে কাঠের তৈরি একটি প্রাচীন জাহাজের সন্ধান পেয়েছেন। তাদের দাবি হচ্ছে- এটিই নূহ নবীর সেই বিখ্যাত নৌকা, যা প্লাবন থেকে নবীর অনুসারীদের বাঁচিয়েছিলো।

প্রাপ্ত কাঠামোর অভ্যন্তরীণ গঠন এবং কার্বনটেস্টের মাধ্যমে তারা নিশ্চিত হয়েছেন এর বয়স প্রায় ৪,৮০০ বছর। পবিত্র কুরআনে হযরত নূহ (আ.)’র যুগের মহাপ্লাবনের ঘটনা স্থান পেয়েছে। ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী ইরাকের কুফা শহর ছিল হযরত নুহ (আ.)’র আবাসস্থল ঠিক যেখানে রয়েছে কুফার বড় মসজিদ। কুফা ইসলামের অন্যতম প্রধান পবিত্র শহর। এই শহর থেকেই শুরু হয়েছিল মহাপ্লাবন।

অবিশ্বাসীরা বা কাফিরদের সবাই ডুবে যায়। শুধু নুহ (আ.) ও ঈমানদার ব্যক্তিরা নুহ (আ.)’র নির্মিত বিশাল কিশতি বা নৌকায় উঠে বেঁচে ছিলেন। হযরত নূহ্‌ যখন আল্লাহ্‌র আদেশে নৌকা বানাতে শুরু করলেন, তখন পাপীরা তাকে ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করতে শুরু করলো। তাদের ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের কারণ ছিলো যে, যিনি এতদিন নিজেকে আল্লাহ্‌র নবী বলে প্রচার করেছেন, তিনি এখন কাঠ মিস্ত্রিতে রূপান্তরিত হয়েছেন। বিরাট সংখ্যক নবীগণের মধ্যে পবিত্র কুরআনে মাত্র ২৫ জন নবীর নাম এসেছে।

তন্মধ্যে একত্রে ১৭ জন নবীর নাম এসেছে সূরা আন‘আম ৮৩ হ’তে ৮৬ আয়াতে। বাকী নাম সমূহ এসেছে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে। নূহ (আঃ)-কে যখন নৌকা তৈরীর নির্দেশ দেওয়া হয়, তখন তিনি নৌকাও চিনতেন না, তৈরী করতেও জানতেন না। সরাসরি অহীর মাধ্যমে নূহ (আঃ)-এর হাতে নৌকা ও জাহায নির্মাণ শিল্পের গোড়াপত্তন হয়। অতঃপর যুগে যুগে তার উন্নতি সাধিত হয়েছে এবং মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্যের মালামাল ও যাত্রী পরিবহনে নতুন যুগে প্রবেশ করেছে।

আধুনিক বিশ্ব সভ্যতা যার উপরে দাঁড়িয়ে আছে। প্রত্যেক নবী রাসূলকে নিজ নিজ যুগে কাফের মুশরেকদের বিরোধীতা ও প্রতিবন্ধকতা ভেদ করে কাজ করতে হয়েছে। কাফের-মুশরেকরা পয়গম্বরদের এত বেশী বিরোধীতা করতো যে, তারা নবীদের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও প্রবঞ্চণার অভিযোগও খাড়া করতো। হযরত নূহ (আও এ ধরণের অপপ্রচারণার সম্মুখীন হয়েছিলেন। হাদিস শরীফে বিশ্ব নবী (সাঃ) এর পবিত্র বংশধর বা আহলে বাইতকে নূহ নবীর কিশতির সাথে তুলনা করা হয়েছে।

বলা হয়েছে, আহলে বাইত হচ্ছে নূহ নবীর নৌকার মত, যে এতে আরোহন করবে সে মুক্তি পাবে আর যে এতে আরোহন করবে না সে নিমজ্জিত হবে। হ্যাঁ আহলে বাইত বা বিশ্বনবী (সাঃ) এর পবিত্র বংশধরদের ব্যাপারে এ ধরণের অনেক হাদিস রয়েছে, যা ইবনে আব্বাস, আব্দুল্লাহ বিন জুবাইর, আনাস বিন মালেক আবু সাঈদ খুদরীর মত বিখ্যাত ব্যক্তিরা বর্ণনা করেছেন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১১ বার     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.