আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খোদেজা পাঠানুভুতি

অতি দক্ষ মিথ্যুক না হলে সত্যবাদিতা উৎকৃষ্ট পন্থা

সাহিত্য পাঠ বিবেচনায় আদৌ লেখকের ব্যক্তিগত জীবন আশা উচিত কি না এটা নিয়ে একটা বিতর্ক আছেই। লেখকের রাজনৈতিক আনতি, তার ব্যক্তিগত জীবনযাপনধারা, তার আস্তিকতা নাস্তিকতা, তার জীবনদর্শন হয়তো সাহিত্যে প্রকাশিত হয়। খুব কম লেখকই নিজস্ব অনুভূতির বাইরে গিয়ে সাহিত্য রচনায় সফল হয়েছেন। তার সৃষ্ট চরিত্রগুলোর ভেতরেই তার আংশিক অস্তিত্ব সমর্পিত। সেইসব চরিত্রের ভেতরেই লেখকের যাপিতজীবন।

ভীতিকর প্রবনতা হলো রাজনৈতিক বিবেচনায় কার লেখা পাঠ্য এবং কার লেখা পঠনযোগ্য নয় এই সিদ্ধান্ত দেওয়া এবং সেটার প্রচার। অপপ্রচারে প্রতিশ্রুতিশীল সাহিত্যিক যেমন রাজনৈতিক মতাদর্শ বিবেচনায় ব্রাত্য হয়েছেন, তেমনই অনেক প্রতিষ্ঠিত, ক্ষমতাবান লেখকও সকল পাঠকের কাছে সমাদৃত হন নি। প্রতিটা মানুষের রাজনৈতিক ন্যস্ততা এবং তার রচনাশৈলি সমার্থক না। চরমভোগবাদী মানুষ কি কখনও প্রেমের কবিতা, বিরহের কবিতা লিখতে পারেন না? মানুষের যৌনতা নিয়ে সাবলীল লিখে যাওয়া মানুষেরা সবাই কি যৌনঅমিতাচারী? মূলত লেখক নিজেই লেখার প্রকাশ ভঙ্গি এবং চরিত্রের মানসিক গঠন তৈরি করেন। সেই চরিত্রের মানসিক গঠন এবং তার নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে সেই চরিত্রই তার ভাবানুযায়ী লেখকের কলমকে নির্ধারিত সমাপ্তিতে নিয়ে যায়।

অনেক লেখকই পূর্বেই চরিত্রের পরিনতি নির্ধারণ করেই লেখা শুরু করেন। অনেক গল্পের সূচনায় লেখক নিশ্চিত ভাবেই জানেন তার চরিত্র অবশেষে কোন পরিণতিতে পৌঁছাবে। লেখা প্লট করে লিখিত হবে না কি লেখায় চরিত্রের স্বাধীন বিকাশের সুযোগ থাকবে এটা প্রতিটা লেখক নিজের সুবিধামতো ঠিক করে নেন। কোনোটাই ভালো সাহিত্য হওয়ার অন্তরায় না। প্লট করে লিখলেই সেটা অপসাহিত্য হবে অবধারিত ভাবে এমনটাও যেমন সঠিক না তেমনি ভাবেই চরিত্রে নিজেই বিকশিত হচ্ছে নিজের মানসিক গঠনের উপরে এমন অবস্থায় লিখলেই সেটা মানোত্তীর্ণ লেখা হবে এমন নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।

কে পাঠযোগ্য এবং কে পাঠযোগ্য নয়, এটা নির্ধারণ করে দিক সাহিত্যিকের নিজস্ব ক্ষমতা, তার রাজনৈতিক বিশ্বাস বিবেচনায় এনে তার লেখাকে একঘরে করে দেওয়ার গোয়ার্তুমি আমি সমর্থন করতে পারি না। আমার ভালো লাগা এবং ভালো না লাগায় কখনও রাজনৈতিক আনতি কিংবা রাজনৈতিক বিশ্বাস প্রাধান্য পায় না। বরং আমার মনে হয় কোনো আদর্শবাদের প্রচারযন্ত্র হয়ে উঠা সাহিত্য সব সময় সেই উঁচু মাণ ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়। রাজনৈতিক বিশ্বাস এবং বিশ্লেষণের জায়গা এবং লেখকের পক্ষপাতিত্ব যদি পাঠকের অভিরূচির সাথে খাপ না খায় তবে পাঠক সে লেখাকে বর্জন করবে পরিশেষে। সমালোচক যখন তার নিজস্ব আদর্শ আর রাজনৈতিক আনতিকে বিবেচনায় নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে ভাগ করে লেখার সমালোচনা শুরু করেন তখন লেখার সমালোচনা একটা পর্যায়ে গিয়ে লেখকের রাজনৈতিক বিশ্বাসকে হেয় করবার হীন প্রচেষ্টায় পরিনত হয়।

আস্তিক কোনো লেখক ভালো সাহিত্যিক হতে পারেন না এই বিশ্বাস আমার নেই, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করে বলেই তার লেখা ধর্মীয় রাজনীতির প্রচার এবং প্রসারের কারণ হবে এমন জুজুর ভয় আমার নেই। যদি এমন বিশ্বাসধারী কেউ কোনো লেখা লিখে তবে সেটা তার মানসিক গঠন এবং ভাবনার জগত জানবার কাজে আমার সহায়ক হবে। অন্তত তার লেখায় তার শ্রেণীর মতাদর্শিক এবং রাজনৈতিক চরিত্র এবং তাদের সমাজবিশ্লেষণের ধরণটা অবগত হবো। সমালোচনা মূলত পরগাছা শিল্পমাধ্যম, এর নিজস্ব কোনো ভিত্তি নেই। কোনো একটা আন্দোলন হলে তার প্রতিক্রিয়া আশেপাশের সবস্থানেই ছড়িয়ে যায়, পুকুরের এক পাশে একটা পাথর ছুড়লে অন্যপাশেও সেই আলোড়ন টের পাওয়া যায়।

সমালোচনা মূলত পাঠকের ভেতরে সেই আলোড়নের প্রকাশ। যদি কোনো সাহিত্য রচিত না হয় তবে সেখানে সমালোচনা নামক লেখার অস্তিত্ব থাকবে না। পেশাদার সমালোচক গুরুতর অর্থসংকটে পড়ে যাবে। একটা সচেতন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, কোনো জীবিত ব্যক্তির সাহিত্যসমালোচনা করবো না। প্রতিটা সাহিত্যিকের নিজস্ব পাঠক রয়েছে, পাঠকের সাথে পাঠকের ভক্তিবাদও লেখকের উপরে চলে আসে।

এই ভক্তিবাদীদের ধাক্কা সামলানো সম্ভব হয় না সময় সময়। সময় সময় লেখক নিজেই আহতবোধ করেন। এইসব হাঙ্গামা পোষায় না আমার। জীবনকে জটিলতাহীন রাখবার চেষ্টা করছি ইদানিং, সমালোচনা লিখতে হলে এই জটিলতাটুকু গ্রহন করতেই হবে আমাকে। বাংলাদেশের প্রায় অধিকাংশ বই ছাপা হয় সম্পাদনা ছাড়াই, খুব কম বই সম্পাদিত হয়, যখন এটা যৌথ প্রযোজনার লেখা হয় তখন সম্পাদনা পরিষদের বায়বীয় অস্তিত্ব সামনে আসে, তবে অধিকাংশ প্রকাশনী পয়সা দিয়ে কোনো সম্পাদক পুষে না।

এর চেয়ে বড় সমস্যা বোধ হয় প্রতিটা প্রকাশকের একটা অলিখিত বাধা আছে, বইয়ের পৃষ্টা সংখ্যা একটা নির্দিষ্ট সংখ্যার বেশী হতে পারবে না এমন একটা অলিখিত চাপ থাকে লেখকের উপরে। যাদের সাহিত্য বাজারে বিকোয় ভালো, কিংবা যাদের অনুগত পাঠকের সংখ্যা অন্তত হাজার ২ তাদের লেখায় এই অলিখিত বিধান কার্যকরী নয়, তবে যাদের পাঠক সীমিত তাদের জন্য লেখালেখি একটা বিষম দুর্ভোগ। তাদের প্রকাশকের মর্জি মেনেই লিখতে হয়, প্রকাশিত হতে হয়। পাঠকের কাছে পৌঁছাতে হয়। প্রকাশক টাকা লগ্নী করেন সেটা আবেগের জায়গা থেকে, সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসা থেকে এমন আহম্মক প্রকাশক এখন বাংলাদেশে সীমিত।

সব প্রকাশক এটাকে উপার্জনের মাধ্যম হিসেবে দেখছেন। তাদের লক্ষ্যই থাকে বিনিয়োগকৃত পূঁজি উঠিয়ে আনা। আমরা সাহিত্যের অপমৃত্যু দেখি এ রকম আত্মঘাতি প্রবনতায়। খোদেজা উপন্যাসটির পেছনের পাতায় খোদেজা উপন্যাসের যেই কাঠামোর তথ্য বিদ্যমান ভেতরে প্রবেশ করে সেই কাঠামো খুঁজে পাওয়া যায় না। লেখকের অসাবধানতা কিংবা অযোগ্যতা কিংবা প্রকাশকের কূণ্ঠা কোনটাকে দায়ী করবো ভেবে পাই না আমি।

সামান্য কথায় ঘটনাটা বলতে গেলে লেখকের সবিনয় নিবেদন থেকে তুলে দিতে হয় এ উপন্যাস লেখার পশ্চাত কথনটুকু। খোদেজা নামের এক শিশু ধর্ষিত হয় বাংলাদেশের কোনো এক গ্রামে, তার প্রতি এই নির্মমতার কোনো দ্বিতীয় উদাহরন নেই। সম্প্রতি মগবাজারে ২জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে, তাদের ধর্ষন করবার পরে হত্যা করা হয়েছে তবে তাদের ধর্ষণ এতটা নির্বিকার নির্মম ধর্ষণ না। তাকে হত্যা করে ঘাতকেরা তার জানাজায় অংশ নেয়। এই মর্মবেদনা লিখে রাখবার কারণেই এই উপন্যাস লিখবার তাড়না তৈরি হয় লেখকের ভেতরে।

উপন্যাসটি একটা পরিনতিতে পৌছালেও আমার কাছে অসম্পূর্ণ এবং ফাঁকিবাজির কাজ মনে হয়। প্রথমত উপন্যাসে ঢুকতে না পারার অক্ষমতা। মূলত এমন সব চরিত্র নিয়ে নাড়াচাড়া হচ্ছে এখানে যাদের সাথে খোদেজার সংশ্লিষ্ঠতা সামান্য, এবং এই চরিত্রগুলো কখনই খোদেজার সাথে সম্পর্কিত হয় না কিংবা তাদের সাথে সংযুক্ত হতে পারে না উপন্যাসের ব্যপ্তিতে। মূলত গত বছর অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে, প্রতিটা ঘটনাই কোনো না কোনো ভাবে অমানবিক, লেখক এই ঘটনাগুলোকে পূঁজি করে একতা মায়াময় আবহ তৈরি করতে চেষ্টা করেছেন, তবে যেহেতু ঘটনাগুলো পরস্পর বিচ্ছিন্ন তাই জুড়ে দেওয়ার নিপূন সূচীশৈলীর অভাবটা প্রকট। উপন্যাসের মূল ঘটনা ৩টি।

বাংলাদেশ বিমানের কেবিন ক্রুদের জন্য অমানবিক একটা অলিখিত নিয়ম আছে, গর্ভবতী হলেই তাদের বরখাস্ত করা হবে, এই নিয়ে তারা একটা মামলা করেছিলেম, সেটায় রায় হয়েছে, সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়া এবং এর অমানবিকতা একটা প্রসঙ্গ, দ্বিতীয় প্রসঙ্গ হচ্ছে শিশু মাদকাসক্তি এবং মূলত যা এই উপন্যাস লিখবার তাড়না সেই খোদেজে উপাখ্যান। লেখক নিজে তাদের সাথে কোনো সংযুক্ততা বোধ করেন না। তারা নেহায়েত খবরের কাগজের করুণ রিপোর্ট হয়ে থাকে, রক্তমাংসের শরীর নিয়ে সামনে উপস্থিত হতে পারে না। মূলত তারা নিজের চরিত্রের কয়েকটা আঁচর হিসেবে থেকে যায়। কয়েকটা রেখা দিয়ে একটা মানুষের মুখ চিহ্নিত করা যায়, তবে সে মুখে আদল আর অনুভূতি ফোটাতে অনেক রঙ খরচ করতে হয়।

এখানে লেখক শুধুমাত্র কয়েকটা আঁচর দিয়ে নিজের দায়িত্ব সমাপ্ত করেছেন। কেনো এমনটা হলো এটা লেখক ছাড়া অন্য কেউ বলতে পারবে না। লেখার আরও একটা সীমাবদ্ধতা হলো লেখকের উপস্থিতি এবং ভাববিনিময়। এমন কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই যে লেখক নিজে চরিত্র হয়ে তার লেখায় উপস্থিত থাকতে পারবে না, তবে এখানে লেখক প্রথম পুরুষে বর্ণনার ভার নেওয়া কোনো চরিত্র নয়। ব্যক্তিগর পরিচয় এবং অনেক দিন ধরে তার লেখা পড়বার সুবাদে জানি এখানের অনেকগুলো লেখা এবং মন্তব্য সামহোয়্যারের অতীতের পাতা থেকে তুলে নেওয়া।

হয়তো সাময়িক ভাবশূন্যতা কিংবা কিছু একটা দিয়ে পৃষ্টা ভরাতে হবে এমন কোনো ভাবনা থেকেই অসম্পাদিত অবস্থায় সেটা সরাসরি খোদেজা উপন্যাসের অংশভুক্ত হয়েছে। চরিত্র বিশ্লেষনঃ নাগরিক চরিত্র নিশি, যে একজন এয়ারহোস্টেস এবং গর্ভবতী তার সাথে লেখকের পরিচয় হয় কোনো এক ব্লগ সাইটে। নিশি এখানে পাঠক, তার নিজের প্রবল আকাঙ্খা সে এই সন্তানের জননী হবে। তার স্বামী জাবীর মূলত স্বপ্নভুক মানুষ, পরিবারবিচ্ছিন্ন এবং যথাযোগ্য রকমের ভাববিলাসী, পলায়নপ্রবন চরিত্র, তার কোনো আগ্রহ নেই এই সন্তান গ্রহনের। তার নিজস্ব অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতার গল্প এখানে জড়িত।

সোহাগ, নিশি জাবীরের পরিবারের শ্রম সহায়ক শিশূ, সে খাদিজার ভাই। এইটুকু স্মৃতিময় যোগাযোগ ছাড়া আর কোথাও উপন্যাসে এই ৩ জনের সাথে খাদিজা কিংবা লেখকের যোগাযোগ নেই। খাদিজা এবং তার বাবা, উপন্যাসের মূল চরিত্র না হয়েও পুলিশ অফিসার জুনাব আলী এবং ওবায়েদ যারা ঘটনার সমাপ্তি ঘটান মেলোড্রামাটিক উপায়ে, তারাই মূলত সবচেয়ে বেশী লেখকের অনুকম্পা পেয়েছেন। নিশি চরিত্রটির নিজস্ব দ্বিধা এবং যাতনা , জাবীরের পলায়নপ্রবনতা, সোহাগের ছিটকে পড়া এবং সাময়িক উদ্ধার অমীমাংসিত, খোদেজাও তেমনভাবে প্রাণ পায় না, যতটা ওবায়েদের প্রতিক্রিয়ায় পায়। এবং ওবায়েদ স্বর্গচ্যুত এক দেবতার মতো হঠাত এসে উদয় হয় খোদেজার গ্রামে, এক দিনে সে সামাজিক দায়বদ্ধতা চুকিয়ে বিদায় নেয়।

এই চরিত্র লেখকের ন্যায় দেওয়ার প্রবল আন্তরিকতায় সৃষ্ট। লেখকের এই প্রাণপন প্রচেষ্টার কারণে শেষ পর্যন্ত এই ওবায়েদের উপরেই একটা শ্রদ্ধাবোধ জন্মায়। তবে পাঠক ভীষণভাবে প্রতারিত হয়। অন্তত লেখক শিশু নির্যাতন এবং এই অমানবিকতার প্রতি যে সীমাহীন ঘৃণা নির্মাণের একটা পটভূমি পেয়েছিলেন, এই নির্যাতিতকে ন্যায় দিতে গিয়ে তিনি এই সুযোগটা হেলাফেলায় নষ্ট করলেন, এবং সম্ভবত তার নিজস্ব কষ্টবোধ লাঘব হলেও সামাজিক সচেতনতা এবং প্রতিবাদী মনন তৈরির পথ রুদ্ধ হয়ে গেলো। উপন্যাসটির পরিশিষ্টে এই দায়মোচনের চেষ্টা ছিলো লেখকের তবে আমার মনে হয় লেখকের নির্মোহ অমানবিক রুঢ়তা থাকলে এটা চমতকার একটা উপন্যাস হতে পারতো।

মানবিকতার চিত্রায়ন যেভাবে এসেছিলো তাতে এটার গন্তব্য ছিলো অনেক দূর, তবে এই যাত্রা কেনো ব্যর্থ হলো, কেনো চমতকার একটা হতে পারতো উপন্যাসের অপমৃত্যু ঘটলো, এটার উত্তর কার কাছে? আমাদের ফর্মা ধরে উপন্যাস লিখবার প্রকাশকীয় চাপ কিংবা আমাদের লেখকের অতিরিক্ত করূণা এবং ন্যয় প্রত্যাশী মনন, কিংবা লেখার সাবলীলতা স্বত্ত্বেও যদি বলি লেখকের নিজস্ব ব্যর্থতা। লেখক নিজেও অলিখিত চাপে ভুগছেন তবে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।