কৃষক blogsaudi@gmail.com
অনেক অনেক আগের কথা। খুব স্পষ্টভাবে মনেও নেই। স্মৃতির উপরভরসা করে লেখা।
আমি তখন সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি। উচ্ছল প্রানবন্ত এক সদ্য গোঁফ উঠা যুবক।
হলে এলাম এক রুমে তিনজন একই ফ্যাকাল্টির এবং একই ইয়ারের । ক্লাস শুরু হলো। অনেক বন্ধু বান্ধব জুটে গেল। নতুন নতুন বন্ধু বান্ধবী নিয়ে সময়টা স্বপ্নের মতো কেটে যেতে লাগলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হয়েছি প্রেম করতে হবে, যৌবনের পাগলা ঘোড়াকে বশীভুত করে কোন বন্ধনে আবদ্ধ হইবার চেষ্টা করা, এমন একটা ধারনা থেকেই আমার প্রেমের পথে অগ্রযাত্রা।
বিষবৃক্ষের বীজ বপনঃ
ক্লাসের পর লাইব্রেরী ওয়ার্ক করতে হবে এই ধারনায় যথারীতি ক্লাসে যত এসাইন্টমেন্ট দেওয়া হইত তা যথারীতি লাইব্রেরীতে সম্পাদন করতে লাগলাম। একদিন আমাদের ক্লাসের এক মেয়ে আমাকে বললো তুমি লাইব্রেরীতে কি কর? আমি কইলাম যে এসাইন্টমেন্ট টা দিসে তা এখন কইরা ফালামু তুমি করতে চাইলে আইতে পার। এইখানে বইলারাখি আমাদের পুরা ক্লাসে মাত্র তিনজন মেয়ে। আমাদের সাবজেক্ট টা তে সাধারনতঃ মেয়েরা কম ভর্তি হতো। মেয়ে ক্লাসমেট দের সাথে আমার সক্ষ্যতা বেশ ভাল ছিল ।
তারা সবাই আমার খুব ভাল বন্ধু ছিল।
সে আমার সাথে সাথে আমার সাথে লাইব্রেরীতে এলো আমরা মানে আমি আর সে একসাথে এসাইন্টমেন্টটা সম্পন্ন করলাম। সে কইল আমরা তো এইভাবে প্রতিটা এসাইন্টমেন্ট কইরা ফালাইতে পারি। আমি কইলাম নো প্রোবলেম (ব্যাক্কল আমি বুঝি নাই, নিজের ভিতরের পুলকের অনুভুতি তখন খুব ভালা লাগতাছিল। ) ।
যথারীতি আমরা তারপর থেকে একসাথে এসাইন্টমেন্ট গুলা সম্পন্ন করতে লাগলাম। আমি না বুঝলে সে বুঝাইতো আর সে না বুঝলে আমি বুঝাইয়া দিতাম । আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে। মেয়ে বন্ধু লইয়া ঘুরাঘুড়ি করি বন্ধুদের ইর্ষা উপভোগ করি। যদি কেউ কয় এইডা আমার মানসিকতার দোষ তাইলে তাই সই।
আমি কই বিষবৃক্ষের বীজ এইখানেই বপিত হইয়াছে।
এমন হইয়া গেল প্রতিদিন ৩-৪ঘন্টা একসাথে আমরা লাইব্রেরীতে এক টেবিলে পাশাপাশি বিভিন্ন নতুন নতুন বিষয়ের উপড় পড়ালেখা করি। তার ফাকে ফাকে তারে কাছ থাইকা দেখি। কলম ধরার ষ্টাইল দেখি । পড়ার ষ্টাইল দেখি ।
তার চুল দেখি । তার নাক দেখি । তার চিন্তিত মুখ দেখি। তার বিষন্ন মুখ দেখি । উল্লাসিত চেহারাও দেখি ।
প্রতিটা ভঙ্গিমা আমার কাছে পরিচিত হইয়া উঠিল। আমরা বন্ধু। তাহার প্রতি আমার কোন ভালোবাসা তখনও জন্মাইয়াছে কিনা তাহা বুঝিতে পারি নাই।
বিভিন্ন হাসি কৌতুকে অন্যান্য আলোচনায় নিজেরা এবং অন্যান্যরা মাতিয়া থাকি। বিকাল বেলা নদীর পারে ঘুরতে যাওয়া।
বিকলে নাস্তা একসাথে করা । এই সব কেমন কইরা যেন প্রাত্যহিক জীবনের এক রুটিন ওয়ার্ক হইয়া দাড়াইয়া গিয়াছিল। ক্লাস পরীক্ষার প্রস্তুতি। ইত্যাদি বিষয়ে দেখি সে আমার পরামর্শ চায়। আমি কই বাহ বাহ নিজেরে একটু মূল্যবান মূল্যবান মনে হইতেছে।
পুলকিত হই।
চলবে..........
পরের পর্ব
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।