আমার ব্যক্তিগত ব্লগ
মরোক্কো আফ্রিকা মহাদেশের একটি দেশ। দেশটি ভুমধ্য সাগরের পারে। অধিবাসীরা দেখতে মিশরীয়দের মতোন, তবে রংটা একটু তামাটে। এই দেশের একটি অংশে আছে সাহারা মরুভুমি।
যে কারনে আজকে এই প্রসংগের অবতারনা সেটা হলো, টিভি দেখছিলাম 'ট্রাভেল লিভিং' চ্যানেলে।
সেখানে 'প্লানেট লিভ' (মনে হয়) নামের অনুষ্ঠান। উপস্থাপক বিভিন্ন দেশে গিয়ে সেখানকার সাধারন মানুষের সাথে মিশে তাদের নিজস্ব খাবার কিভাবে বানায় সেটা দেখেন, নিজেও ঐ স্টাইলে কিছু বানিয়ে তাদের খাওয়ান।
ঠিক করলেন সাহারা মরুভুমিবাসীদের সাথে খাবেন। যাবার আগে বাজার থেকে (দেখতে আমাদের দেশের কাঁচা বাজারের মতোন, তবে শুকনো, কাঁদা দিয়ে মাখামাখি নয়) টাটকা সব্জি কিনে নিলেন, যেগুলো ঐ এলাকাবাসীরা উৎপন্ন করে নিজেরাই বিক্রি করছে (অনেকটা হাটের মতোন)। সেখানে অদ্ভুত আকারের জমানো চিনি পাওয়া যায়।
দেখতে অনেকটা টুপির মতোন।
বাজার করে রওনা হলেন মরুভুমির পথে। আমি ভাবলাম বুঝি রেঁধে খাওয়াবেন। কিন্তু না, আসলে এই সব মরুভুমির অধিবাসীরা খুব গরীব হয়। তাদের যাতে নতুন লোক খাওয়াতে অসুবিধা না হয় এই জন্য এই ব্যবস্থা।
যে এলাকায় উপস্থাপক এলেন সেখানে নাকি ৭ বছর ধরে কোন বৃষ্টি হয়নি। চারিদিকে শুধু বালি আর বালি। কাপড় দিয়ে নাক মুখ ঢেকে না রাখলে বালি ঢুকে পড়ে। কাপড় আর জিনিস পত্রের কথা না হয় বাদই দিলাম।
ছোট কাপড়ের তাবু।
বেশ পাতলা, কারন রোদ্রের আলো বেশ আলো করে রেখেছিল ভিতরটা। মরুবাসি বসে থেকেই অতিথিকে আমন্ত্রন করে বসালেন। সাদা আলখেল্লা আর সাদা পাগড়ি। পাগড়িটা বোরখার মতোন করে মুখ ঢাকতে সাহায্য করে, বালির হাত থেকে বাঁচার জন্য। পাশে তার স্ত্রী ছুড়ি দিয়ে সবজি কাঁটছিলেন।
ইনি গাড় নীল রংয়ের বোরখা পরেছিলেন। উপস্থাপক, তার কাছেই বাজার রাখলেন আর প্রচন্ড গরম আর বালুতে অসস্তি নিয়ে বসলেন।
তাবুর আসে পাশে বেশ কিছু বকরি ঘুরাফেরা করছিল। এদের চড়ানোই হয়তো মরুবাসীর প্রধান কাজ। সব্জি কাঁটা হয়ে গেলে রান্না চুলায় দিলেন।
চুলা ২টা তাবুর বাইরে বালির মাঝে গর্ত করে করা হয়েছিল। একটাতে তরকারি, আরেকটাতে রুটি বেক করতে দেওয়া হলো। অনেকটা নান রুটির মতোন। সাইজেও তাই।
রান্না হয়ে গেলে সেই মিক্স সব্জি আর ঝোল একটা প্লেটে ঢেলে তার চেয়েও আরেকটা বড় প্লেটের উপর রেখে পরিবেশন করা হলো।
এরপর সেই একটা মাত্র রুটি টুকরো টুকরো করে সবাইকে ভাগ করে তরকারী প্লেটের চারপাশে বড় প্লেটে রাখা হলো। এখানেও দেখলাম গরীবের ঘরে ছেলে মেয়ে বেশি। উপস্থাপক, মরুবাসি আর তার স্ত্রী ছাড়াও আরো ৪/৫ ছেলে মেয়ে ছোট রুটির টুকরো নিয়ে খেতে বসলো একসাথে। তারপর সবাই একই প্লেটে রুটি ঝোলে ভিজিয়ে ভিজিয়ে খেতে লাগল। উপস্থাপক জানালেন রান্না অসাধারন হয়েছে।
এখানে বলে রাখি মরোক্কতে দেখলাম ওরা প্রায় সব রান্নায় ধনে পাতা হামান দিস্তায় ছেচে দেয়। এতে নাকি সুন্দর টাককা ধনে পাতের ঘ্রাণ পাওয়া যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।