তোমার অস্তিত্বে সন্দিহান, তবু্ও সদাই তোমায় খুঁজি
ভোটার হবার কিংবা জাতীয় পরিচয় পত্র পাবার প্রাথমিক শর্ত হিসেবে সঠিকভাবে পূরণ করার জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক যে ফরমটি জনগণকে দেয়া হয়েছে তাতে সর্বমোট ২৮টি কলাম আছে। সে তালিকার ১১ নম্বরটি হচ্ছে পেশা। নির্বাচন কমিশন দেশে বিদ্যমান প্রায় সকল পেশাই এই কলামটিতে উল্লেখ করেছে। যে যে পেশা অবলম্বন করছেন তাকে সেই পেশার পাশে টিক চিহ্ন দিতে হয়। উল্লেখিত কলামটিতে চাকুরে ( সরকারি/ বেসরকারি), শিক্ষকতা, আইনজীবী এবং ব্যবসা সহ আরো অনেক পেশার নাম উল্লেখ আছে।
এমনকি বেকার পেশাটিও এ তালিকা থেকে বাদ যায়নি। এ থেকেই বুঝা যায় পেশার কলামটিকে শুদ্ধ এবং সর্বজনগ্রাহ্য করতে নির্বাচন কমিশনের প্রচেষ্টার কোন কমতি ছিলোনা। তবে পেশার পাশাপাশি যদি বাৎসরিক আয়ের একটি ঘর থাকতো তাহলে হয়তো জানতে পারতাম একজন বেকারের বাৎসরিক আয় কতো। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সম্ভবত অতিরিক্ত ঝামেলা এড়াতেই এ কলামটি রাখেনি। ঠিক তেমনি অতিরিক্ত ঝামেলা এড়াতেই হয়তো সদাশয় নির্বাচন কমিশন এই তালিকাতে সাংবাদিকতা পেশাকে স্থান দেয়নি।
অথচ গুরুত্বের বিবেচনায় সাংবাদিকতা নিঃসন্দেহে দেশের একটি প্রথম শ্রেণীর পেশা। শুধু গুরুত্ব নয়, সংখ্যার বিবেচনায়ও সাংবাদিকতা দেশের প্রথম পর্যায়ের একটি পেশা। আজকাল জ্যামিতিক হারে স্যাটেলাইট টেলিভিশন উৎপন্ন হওয়ার কারণে যেমন ইলেকট্রনিক সাংবাদিকের সংখ্যা বাড়ছে তেমনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলো বিশেষ করে জেলা শহরগুলো থেকেও পত্রিকা বের হওয়ার বদৌলতে প্রিন্টিং সাংবাদিকের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশাকে নির্বাচন কমিশন কেন পেশার তালিকায় স্থান না দেয়ার মতো একটি গুরুত্বহীন কাজ করলো তার জবাব একমাত্র নির্বাচন কমিশন এবং দেশের সাংবাদিক সমাজই দিতে পারবেন।
মানুষের দোষ-ত্রুটি খুঁজে বেড়ানোর অভ্যাসটা আমার বহু পুরনো।
আজকাল হয়তো এর মাত্রাটা একটু বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্লগের যে দু'চার জন ব্লগার আমার লেখাগুলো পড়েন তারা হয়তো এতোদিনে তা বুঝে গেছেন। আমি জানিনা ঠিক এই মুহুর্তে এই বিষয়ে আমার যে উপলদ্ধির কথাটি বলবো তা আপনাদের এই 'বুঝা'র ভিত্তিকে আরো শক্তিশালী করবে কি না কিংবা একজন অতিমাত্রার ছিদ্রানুসন্ধানী ব্যক্তির ছায়া মনে করে আমার কাছ থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেবেন কি না। তবে পরবর্তী ঘটনা যাই ঘটুক না কেন আমার মতে এই পোস্টটির উদ্দেশ্যকে আরো সাবলীল করার জন্য এ বিষয়ে আমার উপলদ্ধি অবশ্যই উপস্থাপিত হওয়া প্রয়োজন। উপলদ্ধিটি হচ্ছে-- "আমাদের মহান সাংবাদিক সমাজ হয়তো কোন সংবাদে আমাদের মহামান্য সরকার বাহাদুর খুশি হবেন এবং কোন সংবাদে বেজার হবেন তার কাটসাট করার কাজে এতোটাই ব্যস্ত ছিলেন যে জাতীয় পরিচয় পত্রের গুরুত্বপূর্ণ তালিকা হতে তাদের সেই মহান পেশাটি বাদ পড়ে যাচ্ছে তা ঠিক আমলে নিতে পারেননি"।
এটা অবশ্যই সত্য যে এই ব্লগের কাউকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনিনা। তবে অনেকের লেখা এবং মন্তব্যগুলো পর্যালোচনা করলে প্রতিয়মান হয় যে সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাকে ব্রত হিসেবে নিয়েছেন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের সংখ্যা এখানে নেয়াহেতই স্বল্প নয়। একজন সাধারণ ব্লগার হিসেবে আমি সেসব মহান ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের কাছে সবিনয়ে জানতে চাই, " আপনারা কী কেউ ভোটার হয়েছেন? যদি হয়ে থাকেন তবে কোন পরিচয়ে হয়েছেন?"
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।