আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মেয়র খোকা ও আলাদীনের চেরাগ



শাহাবুদ্দিন শুভ আমাদের এই গরীব দেশটা যদিও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভ করে তার পর পুর্নাঙ্গ ভাবে আমরা স্বাধীনতা লাভ করেছি তা কেউ বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন না। এক সাগর রক্ত দিয়ে নয় মাসের রক্তয়ী যুদ্ধে দেশটি স্বাধীন হয়। তারপর সেই স্বাধীনতার সুর্য আবারও অস্থমিত হয় স্বামরিক শাসকদের দ্বারা। অনেক আন্দোলনে শহীদ নুর হোসেন ও ডাঃ মিলনের রক্তের বিনিময়ে দেশে আবারও গণতন্ত্রপূর্নাদ্ধার হয়। গণতন্ত্রের জন্য যারা আন্দোলন করেছেন।

ঢাকার রাজপথ যারা ছাড়েননি স্বৈরশাসকদের বন্ধুকের নল থাক করানোর পরও। আমরা ভেবে ছিলাম সেই সব নেতারা আমাদের জন্য ভাল কিছু করবেন কিন্তু এই আন্দোলন কারীদের মধ্যে মেয়র সাদেক হোসেন খোকাও অন্যতম। যেভাবে মেয়র সাদেক খোকার উত্থান। কি নেই তার জীর্ণ-শীর্ণ টিনের চালাঘর থেকে আজকের অঢেল বিত্ত-বৈভব গাড়ি-বাড়ি-জমি জিরাতের মালিক বনে যাওয়া মেয়র সাদেক হোসেন খোকার কাহিনী আরব্য রজনীর আলাদিনের চেরাগের কল্পলোককে হার মানাবার মত। ছিলেন সামান্য একজন বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন কর্মী।

তারপর বাম রাজনীতির পথ ধরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ডানপন্থী রাজনীতিতে ঝাঁপ দেয়া। সেখান থেকে ওয়ার্ড কমিশনার এবং পরে সংসদ সদস্য। বর্তমানে তিনি নগর পিতা। তাদের দুটি প্রধান দলের দ্বারা যদিও তিন তিন বার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে দেশের সাধারণ জনগণ অনেক বিশ্বাস করে। সেই সব নেতারা আমাদের সে বিশ্বাসকে কাঁচে ঘরের মত ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করেছেন।

দেশের সাধারণ জনগণের বিশ্বাসে সর্বশেষ পেরেকটি টোকেন ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা হয় ”টিনের ঘর থেকে উঠে এলেন ঢাকার মেয়র’’। দুদকের দেয়া তথ্যানুযায়ী ঢাকা শহর ও এর উপকণ্ঠে মেয়র সাদেক হোসেন খোকা ও তার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যার নামে প্রায় শত বিঘা জমি, ১১টি বাড়ি-ফ্যাট, ৮টি প্লট, ৪০টি ব্যাংক একাউন্ট, দুইটি বিলাসবহুল গাড়ি, নগদ সাড়ে ৫ কোটি টাকা রয়েছে। দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী অনুয়ায়ী জানা যায়, তার নিজ নামে গোপীবাগে দুইটি বাড়ি, মুন্সিগঞ্জে একটি বাড়ি, আরকে মিশন রোডে তিনতলা বিশিষ্ট একটি অধিগ্রহণকৃত বাড়ি, গুলশানে ৬ তলাবিশিষ্ট একটি আলিশান বাড়ি রয়েছে। তার স্ত্রী ইসমত আরার নামে গুলশানে একটি ও ঢাকার অন্য স্থানে একটি ফ্যাট, ছেলে ইশরাক হোসেনের নামে দুইটি ফ্যাট, মেয়ে সারিকা সাদেকের নামে দুইটি ফ্যাট রয়েছে। মুন্সিগঞ্জে ৩২ শতাংশ জমি, গাজীপুরে ১ হাজার ১৪২ শতাংশ জমি, স্ত্রী ইসমত আরার নামে ১ হাজার ৬৭৪ শতাংশ জমি রয়েছে।

এছাড়া তার স্ত্রীর নামে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ৮টি প্লট রয়েছে। সাদেক হোসেন খোকা শেয়ার ক্রয়-বিক্রয়ে সাড়ে ৫ কোটি টাকা অর্জন করেছেন বলে সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করা হয়। তার নিজ নামে ২৫ লাখ টাকার শেয়ার, বিলাসবহুল একটি লেক্সাস গাড়ি ও একটি টয়োটা গাড়ি রয়েছে, যার মূল্য ৫৩ লাখ ২৬ হাজার টাকা। এছাড়া তার নামে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র, আড়াই লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও বিভিন্ন ব্যাংকে ২৭টি একাউন্ট রয়েছে। তার স্ত্রীর নামে ২৫ লাখ টাকার শেয়ার, ১১টি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে।

ছেলে ইশরাক হোসেনের নামে বসুন্ধরা সিটিতে একটি দোকান, ২৫ লাখ টাকার এফডিআর ও ১৫ লাখ টাকার প্রতিরা সঞ্চয়পত্র রয়েছে। তার মেয়ে সারিকা সাদেকের নামে দুইটি ব্যাংক একাউন্ট রয়েছে। উল্লেখ্য যে টাস্কফোর্সের চতুর্থ তালিকায় ৮০ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তির তালিকায় ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার নাম প্রকাশ করা হয়। দুদক ৪ অক্টোবর তার নামসহ ৩৫ জনের নাম প্রকাশ করে। পরে দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তারা তার বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধান চালান।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে তার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির তথ্য জমা দেয়া হয় কমিশনে। কমিশন এই তথ্যের ভিত্তিতে ১৮ নভেম্বর তার কাছে সম্পত্তির হিসাবের বিবরণী চেয়ে নোটিস দাখিল করেন। ৬ই ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার তিনি তার এই সম্পদ বিবরণী প্রতিনিধির মাধ্যমে দুদকে দাখিল করেন। দেশের সবাই জানি দেশের কিছু অঞ্চল সিডরে আক্রান্ত। তাদের বর্তমানে কি অবস্থা তা বোধ করি রাজনীতি বিদদের ভাল জানার কথা কারণ ত্রাণ বিতরণের জন্য তারা জরুরি অবস্থা উঠিয়ে নেওয়ার জন্য অনেক কথা বলেছেন মিডিয়ার সাথে।

এই রাজনীতিবিদদের কোটি কোটি টাকার সম্পদ নিজের ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে রেখেছেন। তিনি কি সিডর আক্রান্তদের জন্য কিছু টাকা সাহায্য হিসেবে প্রদান করেছেন? তা একটা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তিনি এত সম্পদ কি করে এত তারাতারি অর্জন করেছেন তা বোধ করি দেশের সাধারন জনগণ সহজেই বুঝতে পেরেছেন। একজন রাজনতিবিদ কি করে ১৯৯১ সালের পর রাতারাতি এত সম্পদের মালিক হয়ে গেলেন। তবে কি খোকা আরব্য উপন্যাসের আলাদীনের দৈত্যের সন্ধান পেয়েছিলেন।

আর যদি তিনি এধরনের কোন দৈত্যেৃর সন্ধান পেয়ে থাকেন তবে দেশের প্রত্যেক সাধারণ জনগণকে জানালে ভাল হয়। তা হলে এই গরীব দেশের মানুষের ভাগ্য কিছুটা হলে খোলে যাবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.