অনেক দিন থেকেই ইচ্ছা ছিল নিউজিল্যান্ডের উত্তরে যাব, যেখানে প্রশান্ত মহাসাগর আর টাসমান সাগর মিশে গেছে। চমৎকার জায়গা, সারা দুনিয়ার লোকজন কেপ রিয়াংগা দেখতে আসে ওখানে একটা লাইট হাউস আছে। সংসারি মানুষদের ইচ্ছা হলেইতো বেড়ানো হয় না। প্রথমত টাকা,কোথায় থাকব, হোটেল/মোটেল/ লজে বুকিং পাব কিনা, বাবুর ছুটি, মেয়ের ছুটি,কুকুরটাকে কে দেখবে ইত্যাদি ইত্যাদি নানা ঝামেলা। যাইহোক হাজার চিন্তা করে জানুয়ারিতে আমরা কেপ রিয়াংগা যাব ঠিক করলাম।
দুই রাতের জন্য। লজেও বুকিং পেয়ে গেলাম। ইচ্ছা করলে রান্না করতে পারব ওখানে। কি আহ্লাদ। বাড়িতে রান্না করি, বেড়াতে যাব সেখানেও রান্না করতে হবে! দুর আমি তাহলে যাব না! রান্নার অপশন বাদ।
তিন তারিখ ভোরে রওনা দিলাম পাহিয়ার উদ্দেশ্যে। খুব সুন্দর জায়গা। অবশ্য পুরো নিউজিল্যান্ডই সবুজ সুন্দর!দুপুরের মধ্যেই পৌছে যাব পাহিয়া।
এই জায়গাটার গুরুত্ব স্হানীয় মানে আদিবাসিদের কাছে অপরিসীম। পাহিয়া থেকে দশমিনিটের রাস্তা হলো ওয়েটাংগি।
যেখানে মাউরি আর ব্রিটিশদের মাঝে শান্তিচুক্তি হয়েছিল ১৮৪০, ৬ই ফেব্রুয়ারি। সরকারি ছুটি। প্রতিবছর ঘটা করে পালন করা হয়। সারাদুনিয়াতে একমাত্র এখানেই মনে হয় ব্রিটিশরা জংলি নেটিভদের সাথে চুক্তি করতে বাধ্য হয়, নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখার জন্য। আমি এজন্য মাউরিদের ইতিহাস পছন্দ করি,তখন ব্রিটিশদের পা চাটা কুকুর হয়ে যায়নি! যদিও বর্তমানের ইতিহাস অন্যরকম।
সেই চিরাচরিত ব্রিটিশ নিয়ম ডিভাইড এ্যান্ড রুল! এখন বরং মাউরিরাই নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখতে হিমসিম।
পাহিয়া পৌছে লজে গেলাম, জিনিশ রেখে ফ্রেশ হয়ে বেরুলাম খাওয়ার উদ্দেশ্যে। লজের কাছাকাছি চাইনিজ রেস্তরা পেয়ে গেলাম। খাওয়া শেষ করে মেয়েকে নিয়ে দোকানে ঢুকলাম। বাবুকে ইদানিং আমরা শপিং এ নেইনা।
এত বিরক্ত করে, মেয়েই একদিন সমাধান দিল আব্বুকে সাথে নেওয়ার দরকার কি! ভাল বুদ্ধি আমার মাথায় আসেনি। আমরা এদোকান সেদোকান ঘুর ঘুর করছি, তারপর এক সময় ক্লান্ত হয়ে বের হয়ে আসি। বাবু বোধহয় খুব টেনশনে ছিল,আমাদের দেখে হাঁপ ছাড়ে। আমরা পরদিনের বাসের বুকিং দিতে যাই। অনেক লোক, বেশিরভাগই কেপ রিয়াংগা যাবে।
সকাল সাতটায় বাস ছাড়বে। আমরা পাহিয়া বিচে গেলাম। আইসক্রিম খেলাম। বিকালে ওয়েটাংগি দেখতে গেলাম। খুব ভাল করে পুরোন ঘরটা (স্হানীয় ভাষায় মারাই) সংরক্ষণ করা হয়েছে।
বিরাট জায়গা মাঝখানে মারাই। ভিতরে কেমন টানেলের মত জায়গা দিয়ে যেতে হয়। কেমন গা ছম ছম করে। মনে হয় এখনই কিছু একটা হবে!
আমরা ঘুরে টুরে সন্ধায় লজে ফিরি। রাতে বারবিকিউ লজের পক্ষ থেকে।
হেভি মজার খাওয়া।
রাতে ঘুম দিয়ে সকালে উঠে গেলাম। আমাদের লজের অনেকেই বাসে যাচ্ছে। ভালই লাগলো। পাহিয়া থেকে প্রায় আড়াইশো মাইল যেতে হবে।
আমাদের বাসের ড্রাইভার রানিং কমেন্টরি শুরু করল। কত কিছু যে জানলাম, আর ভুলে গেলাম। অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে পরে আবার লিখব। (ছবি আপলোডের সমস্যা সমাধানে ধৈর্য সহকারে সাহায্যের জন্য রাশেদ ও রন্টিকে ধন্যবাদ। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।