কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...
বাজারে বোরো ধান আসার খবরেই চাইলের বাজার তার তাপমাত্রা হারাইতে শুরু করছে...এই হইলো বাস্তবতা...পণ্যের সরবরাহ যদি ঠিকমতো হয় তাইলে তার মূল্য মাত্রা ছাড়ায় না। কিন্তু পুঁজিতান্ত্রিকতায় যেহেতু মুক্তবাজার তাই বাজার নিয়ন্ত্রকেরা যা ইচ্ছা তা করতে পারেন...যেহেতু টাকার মূল্যমানে বর্তমান সময়ে সবকিছু পাওন যায়, তাই কালকেই হয়তো খবরের কাগজে দেখতে হইতে পারে এই বোরো মৌসুমে চিটার ছড়াছড়ি। বাজারে আবার চাইলের সংকট...
কয়দিন আগে ব্লগে চাইলের সংকটের মুল সংকট হিসাবে ভারতরে দোষারোপ কইরা বেশ বাকবিতন্ডা আলোচনা হইয়া গেলো...আমি নিজেও ভারতরে উঠতে বসতে গাইলাইলাম কয়দিন। কিন্তু আসলেই কি এই গালি যৌক্তিক হয়? অবাধ মুক্তবাজারের সমর্থন করুম, ব্যক্তির ব্যবসায়িক কৌশলের প্রতি আস্থা রাখুম কিন্তু কোন রাষ্ট্র যদি তার নিজের রফতানিকারকগো সুবিধা পাওয়াইয়া দিয়া রাষ্ট্রীয় মুনাফা অর্জন করতে চায় তাইলে সেইটারে কমু অমানবিকতা তা কি হয়!? এই পুরা সিস্টেমটাইতো অমানবিক! এই সিস্টেমের বশ্যতা মাইনা নিমু কিন্তু তার ফল ভোগে অনীহ থাকুম তা কি হয়!
তবুও বোরো ধানের সরবরাহের খবরে চাইলের দাম কমাতে আমি আশার আলো দেখি...এই আশার আলো হয়তো অনেক দূরে জ্বলে...কিন্তু তার উত্তাপ টের পাই...বুঝতে পারি আসলে বাজারে স্থিতিশীলতা আসে সরবরাহতেই...প্রয়োজন অনুযায়ী সরবরাহ একটা সাম্রাজ্যবাদী দুনিয়ারেও হুমকীর মুখে ফেলতে পারে...
যখন সমাজ বদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম, তখন এই দেশের আর্থসামাজিক পুনর্গঠন নিয়া ভাবতাম অনেক। মনে হইতো এই দেশ কি কখনো খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারবো!? মুখাপেক্ষী অর্থনৈতিক নীতিমালা থেইকা বাইর হইতে পারবো? আমরা আস্থা রাখতাম সম্ভাব্যতায়! এই দেশের ভূখন্ডের ব্যবহার্যে, উর্বরতায়, উৎপাদনে আমাগো পূর্ণ আস্থা ছিলো...রাজনীতির সক্রিয়তা থেইকা অনেক দূরে চইলা আসলেও আমার এখনো সেই আস্থা অটুট আছে পরিপূর্ণতায়।
আবাদযোগ্য জমি'র পরিমান আর তার থেইকা উৎপাদনের সম্ভাব্যতা'র ডেটা অ্যানালিসিস করলেই তার প্রমান মিলে...এই মুহুর্তে তথ্য দিতে কইলে এই ছদ্ম সামরিক সরকার কিন্তু ভড়কাইয়া যাইবো এই যুক্তিতে...কারন তারা যখন কোন হিসাব করে, সেইখানে সমতল ভূমি'র পরিমান আর তার উৎপাদনের রেশিও তারা মিলাইতে পারবোনা...সেই ১৯৭৯ সাল থেইকা উন্নয়ন সম্ভাব্যতা থেইকা এই দেশের একটা অংশরে বাদ দিয়া হিসাব মিলানের প্রবনতা শুরু হইছে...সামরিক বাহিনীর যৌক্তিকতা প্রদানের বা সংরক্ষণের নিরীখে দেশের সবচাইতে বড় পতিত বা অনাবাদী ভুখন্ডরে বাদ দিয়া হিসাব করনে বাধ্য করা হইছে বিশেষজ্ঞগো।
এই ভূখন্ড...পার্বত্য চট্টগ্রাম...যারে অনাদরে ক্ষয়িষ্ণু কইরা তোলা হইতেছে ক্রমাগত...দেশের ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বাগুলিরে দূর্বল কইরা রাখনের নিমিত্তে...সেনাবাহিনীর ক্ষমতা আর দাপটের অভ্যাস জাগ্রত রাখতে পাহাড়িগো নিজের চাষ পদ্ধতি জুম্ম থেইকাও অনীহ কইরা তোলা হইছে ক্রমান্বয়ে। যেকোনরম উন্নয়নমূলকতায় তারে বিযুক্ত করা হইছে...সময়ের আধুনিকতায় আমরা যারা সামরিক বিচ্ছিন্ন মানুষ...তারা এই অনিয়মে অখুশী হইলেও ভাবছি অন্যভাবে...আমরা চাইছি পাহাড় যাতে অনুন্নতই থাকে, তার বণ্যতা যাতে অটুট থাকে...পাহাড়ি নারীরা উন্নয়নের ছোঁয়ায় জিন্স টি-শার্ট পরলে আমরা মনোক্ষুন্ন হই...
কিন্তু আসলেই কিন্তু এই দেশে একটা রাষ্ট্রীয়-জাতীয় কৃষি নীতিমালা'র মাধ্যমে খাদ্যোৎপাদন sufficient করা সম্ভব...সেই আস্থাতেই ভাবি এই ভুখন্ডের মানুষ হয়তো অদূর ভবিষ্যতে আর কখনো নীরব দুর্ভিক্ষে মারা যাইবো না...
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।