--এই বেআদব ছেলে, রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে হা করে কী দেখছ? লোকজনকে রাস্তা দিয়ে হাঁটতে দেবে না নাকি? যতসব ফাজিল কোথাকার!
বিশুদ্ধ বাংলায় হতভম্ব হওয়া বলতে যা বোঝায় আমার অবস্থা তখন ঠিক তাই। অফিস থেকে বেড়িয়ে সবেমাত্র ফুটপাতের ধারে দাড়িয়েছি রিকশার জন্য, দু'একটার উদ্ধত প্রত্যাখ্যানও হজম করেছি। দাঁড়িয়ে আছি একজন সহৃদয় রিকসাওয়ালার জন্য যে দয়া করে আমাকে বাসায় পৌঁছে দেবে। ঠিক তখনই পেছন থেকে হঠাৎ এক রামধাক্কা মেরে আমাকে প্রায় ফেলেই দিচ্ছিলেন ভদ্রলোক। আমি কোনমতে সামলে উঠে দাড়াতেই এই অমৃতবচন আমাকে তাক করে ছুঁড়লেন চোখমুখ লাল করে।
আমি বলতে গেলাম,
--আন্কেল আমি তো সাইডে....................
-- চুপ কর বেআদব কোথাকার! আবার মুখে মুখে তর্ক করে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে বখাটেপনা করতে খুব মজা লাগে, তাই না?
আরও যেন তেতে উঠলেন ভদ্রলোক।
লে হালুয়া!! আমারও রাগ হচ্ছিল। কিন্তু ভাবছিলাম রেগে গিয়ে আবার সত্যিই সত্যিই না বেআদবি করে বসি, তাই আরও বিনীত হয়ে বলার চেষ্টা করলাম,
--আচ্ছা আ'ম সরি আন্কেল। বুঝতে পারিনি যে....................
--চুপ কর! লেখাপড়ার নাম নেই, রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাংকি মারা হচ্ছে, তাই না? তোমাদেরকে আমার ভালই জানা আছে।
এইসব ছেলেপেলের যে কী হবে? সব নষ্ট হয়ে গেল।
বলে গজগজ করতে করতে হনহন করে সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করলেন।
আমি আর তাকে পেছন থেকে ডাকলাম না। বিমুঢ় হয়ে ভাবতে লাগলাম ঘটনাটা কী ঘটল? রাগও হচ্ছিল অসম্ভব রকমের।
অনেকক্ষণ পর আমার হাসি পেল ঘটনাটা মনে করে।
বুঝতে পারলাম, ভদ্রলোক তার নিজের অফিসে বসের ঝাড়ি নামক ট্যাবলেট খেয়ে বের হয়েছেন এবং আমার সাথে যেটা করেছেন তা হল সেটার সাইড ইফেক্ট। অর্থাৎ উদোর পিন্ডিটা আমার ঘাড়েই পড়ল।
আচ্ছা এখন আপনারাই বলুন তো দোষটা কার? আমার দোষ? সম্ভবত কেউই তা দেবেন না। ভদ্রলোকের দোষ? না, সেটিও আমি মানতে নারাজ। আসলে দোষটা আমাদের জাতীয় দোষে পরিণত হয়ে গিয়েছে।
আমরা সবাই একখানে ঝাড়ি খাই আর সুযোগ পেলেই আরেক জায়গায় তা রিপ্লেস করি মাত্র। একম ঘটনার উদাহরণ চান? দেব, তবে আজ আর না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।