আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

=মসলিনের আঙ্গুলকাটা রক্ত ঝরছে আজো এবং নীল বেনারসীর হাতে ভিক্ষার ঝুলি

কাব্য-দিনের কথাঃ স্পর্শের আগুনে! অন্যদিগন্ত: www.fazleelahi.com

মসলিন, একদা যা ছিল বিশ্বের শিল্প জগতে বাংলার মাথা উঁচু করা গৌরব। এখন কেবলি ইতিহাস! সেকালের ষড়যন্ত্র ছিল নগ্ন, প্রকাশ্যে আঙ্গুল কেটে নেয়া হয়েছিল মসলিনের কারিগরদের। সোনার গাঁয়ে সে ব্যাথা যেন আজো কঁকিয়ে উঠে থেকে থেকে সেখানকার বাসিন্দাদের অন্তর থেকে পর্যটকদের হৃদয়ে হৃদয়ে। মসলিন আর ফিরে আসেনি, এ যেন মৃত্যুর মত হয়ে গেছে, একবার চলে গেলে আর ফেরে না। আমাদের শিল্পে স্থান করে বেনারসী, আমাদের সংস্কৃতিতে, আবেগে, ভালবাসায় শাড়ীর ঐতিহ্যে 'বেনারসী' যেন ভালবাসার এক অন্যতম উপহার।

নীল বেনারসীর সুতোয় সুতোয় যেন ভালবাসা গাঁথা থাকতো। ভালবাসা যে ঐক্য, সংহতি, সম্প্রীতির ধারক; একথা এ ক্ষুদ্র স্বাধীন দেশের চারপাশের শত্রুরা খুব সহজেই বুঝে নেয়। বিগত দশকে বাংলাদেশ বস্ত্রখাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করায় পার্শ্ববর্তী দেশের দাদাগিরীতে ধ্বস নামার সম্ভাবনা থাকায় এবং বেশ কিছু দাতা দেশ ভিক্ষার বদলে নিজেদের মত চাপিয়ে দেয়ার সুযোগ থেকে কিছুটা হলেও বঞ্ছিত হবার অবস্থা সৃষ্টি হওয়া এসব উন্নয়ন তাদের নিকট অসহ্য ঠেকে। পৃথিবী আধুনিক হয়েছে, চক্রান্তেরও আধুনিকায়ন হয়েছে এখন। আগেকার সাম্রাজ্যবাদী তাদের সিপাই দিয়ে যেভাবে সরাসরি হত্যা কিংবা আঙ্গুল কেটে দেয়ার পন্থা অবলম্বন করতো, এখন সেসব ষড়যন্ত্র ও আক্রমণকে পরানো হয়েছে নতুন জামা।

এ জামায় কখনো লেখা থাকে 'বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুন লেগে গার্মেন্টস ছাই', কখনো 'কে বা কাহারা গ্যাসফিল্ডে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে', কখনো 'হরতাল অবরোধে দেশ অচল' ইত্যাদি। আর এসব "ষড়যন্ত্রের জামা" তৈরীর কারখানা শত্রুরা গড়ে তুলেছে আমাদেরই বাংলাদেশে। সীমান্তে ইঁদুরের গর্ত গলে প্রতিদিন ঢুকে পড়ছে হাজার হাজার ভারতীয় শাড়ী। আমাদের বাজারে কখনো চুক্তির মোড়কে, কখনো চোরাচালানের হিড়িকে দৌরাত্ম করে ভারতের বস্ত্র। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে শিল্প নয়; শুধুমাত্র বাঁচার স্বপ্ন দেখেন আমাদের গরীব তাঁতীরা।

এক সময় তাঁতে মাকড়সা বাসা বুনে, ইঁদুর সুতো কাটে, তাঁতের গর্তে জমে উঠে কাটা সুতো, তাঁতের টুকরো শরীর, কবর হয়ে যায় আমাদের বেনারসী শিল্প! আমাদের তাঁতীরা ভিক্ষার ঝুলি হাতে তুলে নেন, ঋণের দায়ে জীবন থেকে পালানোর পথ খুঁজে ফেরেন, অর্ধাহার-অনাহারে মৃত্যুর প্রহর গোনেন; তবু আমাদের দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দের নজর কাড়তে পারেন না তারা। আপনারা কি বলে দেবেন হে জাতির নেতাগণ! আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য আমাদের তাঁতীদের আর কি কি কুরবানী করতে হবে? তুহিন সানজিদের লেখাটি পড়ুন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।