আসেন দুর্নীতি করি। আর এই দুনিয়াটাকেই খুচাই!
সবসময় অলৌকিক কিছু চিন্তা করা আমার বদঅভ্যাস ছিলো। সমস্যায় পড়লেই মনে হতো এখন হয়তো কেউ এসে আমাকে বিপদ থেকে মুক্তি করবে। কিন্তু কেউ আসেনি। আমি এখনো বিশ্বাস করি টাইম মেশিন মানুষ একদিন তৈরী করবে।
মানুষ অতীতে গিয়ে শুধরে নেবে তার ভুলগুলো। কিন্তু পরক্ষনেই একটা প্রশ্ন জাগে, যদি তৈরী হতো তাহলে তো আমি আমার ভবিষ্যতের আমি'র দেখা পেতাম, তাহলে পেলাম না কেন? হয়তো আমি দেখে যেতে পারিনি টাইম মেশিন আবিস্কারের ঘটনা। অন্য কেউ দেখবে সেটা, কিন্তু কৈ, কোনো ভুল তো ঠিক হচ্ছে না!
আসলে প্রকৃতিতে প্রতিটার সমস্যারই সমাধান রয়েছে সেটা বস্তুবাদী চিন্তায় হোক অথবা অপার্থিব। কিন্তু মানুষ হয়তো সেটার সমাধান খুজতে বাধ্য নয়। তার কারন অনেক হতে পারে, হতে পারে সে সামাজিক জীব,অথবা সে ভুল করবে এটা জেনেটিক্যাল বৈশিস্ট্য।
তাই বলে হয়তো আর্কিমিডিসকে হত্যার পর সে দলের সেনাপতি বেশ আক্ষেপ করে বলেছিলো কাকে হত্যা করা হলো! তবে আমরা আফসোস সবাই কম বেশী করতে পারি।
আজকে অনেক দিন পর ব্লগে আসলাম। গত মাসে বা তার আগের মাসেও দেখতাম এ সময়ে প্রায় ৭০-৮০ জন লগড ইন থাকতো আর ভিজিটর থাকতো ৩০-৪০ জনের মতো। আরিল কে তখন বেশ খুশীই মনে হয়েছিলো। আমিও খুশী ছিলাম কারন আমি লগড ইন থাকবো না সেটা চিন্তাই করা যায় না যত ব্যাস্ততাই থাকুক।
আরিলের সাথে প্রথম কথা জানতে পেরেছিলাম তার স্বপ্নের কথা। আমরাও তার সাথে স্বপ্ন দেখেছিলাম একটা সুন্দর ভবিষ্যতের এই ব্লগ নিয়ে। একটা ছকে বাধা প্লাটফরম নিয়ে স্বপ্ন বাধা ছিলো হাজারো মানুষের সুখ।
টাইটানিকও অনেক স্বপ্ন মিলে তৈরী হয়েছিলো। বিজ্ঞানী, ডিজাইনার, ইজ্ঞিনীয়ার সবাই গর্ব করে বলতো একটা কর্ক ডুবে যেতে পারে কিন্তু টাইটানিক ডুববে না।
কিন্তু সেই টাইটানিকও ডুবে গেলো। কারন তাতেও ছিলো ডিজাইনের ভুল, নাহলে এতটুকু একটা ফুটায় জাহাজ ডুবে কিভাবে?
আমি যখন সামহোয়্যার ইনে আসছিলাম তার কিছুদিন আগে আমি আইটি থেকে ল্যাপটপ ফেরত পাই। তাদের অভিযোগ ছিলো আমি নাকি রাশিয়ান ওয়েবসাইট থেকে সমানে টিকিট বাইপাস করে ডাউনলোড করেছি যার কারনে নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাস। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো তার কিছু দিন পর পুরো নেটওয়ার্ক নাকি আপগ্রেড করতে হইছে। যাই হোউক, আমার দুই কলিগ আমার এহেন বদঅভ্যাস থেকে সরানোর জন্য সামহোয়্যার ইন ব্লগ দেখালো।
তার পর দেখতে দেখতে কেটে গেলো ১০টা মাস। আশ্চর্য্যের ১০ টা মাস। জীবনে ভাবিনি আমার লেখার ফ্যান হবে কেউ, আমাকে গুরু বলবে, আবার আমার লেখা কমেন্ট নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হবে। আমাকে একসময় আমার মনের মতো একটা গ্রুপ খুলতে দেয়া হলো। আমি প্রথমে ভেবেছিলাম আমার গ্রুপটি সবচেয়ে ফ্লপ গ্রুপ কারন নামখকানা বান্দ॥ কিন্তু ভুল ভাঙ্গে এক মাসের মধ্যে।
এ্যাডমিন আর মডারেশন প্যানেলের সাইজ আমার বড় করতে বাধ্য হয়। সবাই নিজের মতো তাদের কাজ তুলে দেয়। যেহেতু আমার লীডার হিসেবে কোনো গুনই নাই, আমি ঠিক করলাম আমদের গ্রুপে কেউ লীডার না। তবে এতটা সাড়া পাবো হয়তো আমি কোনোদিন আশা করিনি। আমার বন্ধু বান্ধব, আত্নিয় স্বজন, বাবা-মা টারাও হয়তো ভাবতে পারবে না আমি এখানে কি করেছি? সবাইকে ধন্যবাদ দিলেও হয়তো এ ঋন ফুরোবে না।
তবে যাই হোউক, জীবনে আমি কখনও এত আলোচনা-সমালোচনার লোক ছিলাম না। খারাপ ছাত্র ছিলাম বলে সবসময় ডাকসাইটে আকাম কুকাম করতাম নিজের মনে। তবে জীবনে আমি কয়েকটা জিনিসকে খুব ঘৃণা করি, তার মধ্যে দুটি জিনিস আমি এই ব্লগে দেখতে পাই। আমি তখন চিন্তা করতাম এরকম একটা ব্লগে এসব কি হচ্ছে? দেশের সাথে গাদ্দারী করা কিছু খারাপ মানুষ আর তার সাপোর্টাররা সমানে তাদের ম্যানিপুলেশন আর মতবাদ প্রচার করছে দেশের বিরুদ্ধে, আরেক দিকে রাস্তার আবর্জনার মতো মুখ নিয়ে সমানে খিস্তি খেউড়। এসব অন্তত মানুষের কাজ হতে পারে না।
আমি তাদের মতো একজনকে প্রশ্ন করেছিলাম, ধরেন আপনার ছোট মেয়েটি আপনার সামনে এরকম একটা গাল দিয়ে বসলো, তখন আপনার কেমন লাগবে বাবা হিসেবে?কোনো উত্তর পাইনি। মনে হয় সে কুকুরকে শাস্তি হবার জন্য কুকুর হতে পছন্দ করবেন!
যাই হোউক, সমস্যা প্রকটতর হয় যখন কিছু সত্যিকারের কুকুর এদেশের খেয়ে এদেশের বিরোধিতা কারীর সাপোর্ট করে উল্টাপাল্টা পোস্ট দেয়া শুরু করে। তাদের প্রতিরোধে এ ব্লগেও চলে পাল্টাপাল্টি পোস্ট। শুরু হয়ে গেলো এক অযাচিত মচ্ছব। সকালে মডারেশন প্যানেলের প্রধান শুধু একটা কারন দেখিয়ে ব্যান করলেন: কিছু সৎ অসৎ ব্লগারদের ব্যান করা হলো।
কিন্তু এখানে বেশ কিছু প্রশ্ন আসলো:
১) মডারেটর কেন তার নিজের বানানো এত গুলো নিয়মের মধ্যে শুধু ফ্লাডিংকেই প্রাধান্য দিলেন?
২) যেহেতু এটা একটা বাংলা ব্লগ, এই ব্লগের নীতিমালায় কেনো এদেশের ধর্ম, সার্বভৌমত্ব ব্যাপারটা রাখা হয়নি?
৩) আর এত কিছু থাকতে কেনই বা ফ্লাডিং ইস্যুকে জোড় দেয়া হলো? এটা দেশ, ধর্মের অবমাননাকারী পোস্ট হতে এতই ইম্পোর্ট্যান্ট? নাকি এখানেও সার্ভার রিসোর্সের ব্যাপারটা এসে পড়েছে?
যাই হোউক মানুষ, বি মা, মুর্তজা, নরাধম সম্পর্কে বলার কিছুই নেই। তবে এটা বলতে পারি, এদের মতো কয়েকজন ব্লগার এমন কিছু ব্লগ লিখেছে যা আমি কোনোদিনও লিখতে পারবো না, শুধু একটা কাজ করবো যেদিন আমার অনেক টাকা হবে এদের হাতের ছবি তুলে সোনা দিয়ে বাধিয়ে রাখবো! আর মানুষ নামক ব্লগারের মা-এর পাছুয়ে একদিন সালাম করবো।
আর জেনারেল, রোকনের ব্যাপারে আমার কোনো কথা নেই। একবার এই ব্লগে দেখেছিলাম বেশ কিছু নিকের ডুপ্লিকেট বেরিয়েছিলো। তখন আমি বুঝি নাই এরা করা, এখন বুঝতে পেরেছি এ কে ছিলো।
এর বর্তমান নিক হচ্ছে পথহারা। আর জেনারেল, রোকন হলো অনেকটা অক্ষম পুরুষের মতো যারা শুধু লোকচক্ষুর অন্তরালে চিল্লাচিল্লি করে কিন্তু সামনে নিপাট সব কিছু মেনে নেয়া পাবলিক। আমাদের ভার্সিটিতে শিবিরের ছেলেদের পিটিয়েছিলাম, কারন ইস্যুটা ছিলো খুবই সিলি একটা ইস্যু। তারা আমাদের প্রভোস্টকে বলে ইনকিলাব রেখেছিলো সেদিন। আমাদের এ দৃশ্য সহ্য হয়নি।
আমরা সাথে সাথে টেনে ছিড়ে ফেলেছিলাম। তারপরের ঘটনা যেকোনো চুয়েটিকে জিজ্ঞেস করলেই পরিস্কার করে বলতে পারবে। তবে একটি কথাই বলতে চাই, পৌরুষ্যত্ব মুখে নয় কর্মে। যদি আওরঙ্গের মতো জামাতী আমাদের ভার্সিটিতে দেখতাম খোদার কসম ওখানেই পুতে ফেলতাম সেরাত, কারন সুযোগ বারবার আসে না। দুঃখ হয় এসব কাগুজে মুক্তিযোদ্ধা স্বপক্ষের প্রতি।
তবে যাই হোউক, এবার আমি আমার বান্দর গ্রুপ সম্পর্কে কিছু বলি। আমাদের গ্রুপের অনেকেই কিবোর্ড বিরতীতে আছে, আবার অনেকেই কিবোর্ড দিয়ে প্রতিবাদ করছে। আমার মনে হয় সবাই এরকম মাল্টিডাইমেনশন প্রতিবাদ নিয়ে এগুলে তার কর্মক্ষমতা বেড়ে যায় যদি তাদের লক্ষ্য এক হয়। তাই সবাই নিজের মতো প্রতিবাদ করুক। আমার প্রতিবাদের টার্গেট ছিলো আমরা এই ব্লগের হিট সংখ্যা কমিয়ে দেবো।
এবং তা এখনকার লগ ইন আর লেখার প্রকাশের সংখ্যা দেখে বোঝা যায়। এবং এটা বলতে পারি, আগামী কয়েকমাসের মধ্যে সামহোয়্যারইন হবে সবচেয়ে কম পঠিত ব্লগ। তবু আমি আরিলকে একটা মার্সি করবো। আমার বান্দর গ্রুপ এখন অচল কারন আমাদের এ্যাডমিন প্যানেলের দুই জনই কলম বিরতীতে আছে। আর মডারেশন প্যানেলের একজন ব্যান।
তাই দুজন মডারেটরকে আমি আ্যডমিন পাওয়ার দিয়ে দিলাম যারা এই গ্রুপ ব্লগেও তাদের কর্মকান্ড অব্যাহত রাখবে। আর যে যত ভাবেই পারুক না কেন, প্রতিবাদ চালিয়ে যাক। হয়তো একদিন এর কারনেই আর অন্য কারনেই হোক আমাদের প্রিয় সামহোয়্যারইন আবারও কলকাকলিতে মধুর হয়ে উঠবে।
আর আমার দাবীগুলো সবাইকে জানিয়ে দিয়ে যাই:
১) ব্লগের নীতিমালায় দেশের সার্বভৌমত্ব, গালাগালি আর ধর্ম নিয়ে সুস্পস্ট নীতিমালা করতে হবে।
২) শুধুমাত্র ফ্লাডিংএর কারনে যাদেরকে ব্যান করা হয়েছে তাদের ব্যান উঠিয়ে নিতে হবে।
জাস্ট এদুটোই। ততদিন আমি আর ফিরছি না। হয়তো এটা হতে পারে এ ব্লগে আমার শেষ লেখা।
কস্ট লাগছে তবুও নীতির কাছে মাথা নোয়াতে পারছি না। অবশ্য নিজের লজ্জাটা আমি অনেক আগেই বিক্রি করে দিয়েছি যেদিন গোলাম আযমের এ দেশের প্রথম শ্রেনীর নাগরিকত্ব পায়।
এসব তো কিছু না।
কত জাহানারা ইমাম আইলো গেলো, উদাসী তো কিছুই না!সে আবার পথে নামুক। হয়তো পথেই দেখা হবে কারো না কারো সাথে!
Arild I Think you need an interpreter!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।