আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি (প্রিয় কবিতার প্রিয় কিছু লাইন)

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই...

...যারা গুলি ভরতি রাইফেল নিয়ে এসেছিল ওখানে যারা এসেছিল নির্দয়ভাবে হত্যা করার আদেশ নিয়ে আমরা তাদের কাছে ভাষার জন্য আবেদন জানাতেও আসিনি আজ। আমরা এসেছি খুনি জালিমের ফাঁসির দাবি নিয়ে। আমরা জানি ওদের হত্যা করা হয়েছে নির্দয়ভাবে ওদের গুলি করা হয়েছে ওদের কারো নাম তোমারই মতো ওসমান কারো বাবা তোমারই বাবার মতো হয়তো কেরানি, কিংবা পূর্ব বাংলার নিভৃত কোনো গাঁয়ে কারো বাবা মাটির বুক থেকে সোনা ফলায় হয়তো কারো বাবা কোনো সরকারি চাকুরে। তোমারই আমারই মতো যারা হয়তো আজকেও বেঁচে থাকতে পারতো, আমারই মতো তাদের কোনো একজনের হয়তো বিয়ের দিনটি পর্যন্ত ধার্য হয়ে গিয়েছিল, তোমারই মতো তাদের কোনো একজন হয়তো মায়ের সদ্যপ্রাপ্ত চিঠিখানা এসে পড়বার আশায় টেবিলে রেখে মিছিলে যোগ দিতে গিয়েছিল। এমন এক একটি মূর্তিমান স্বপ্নকে বুকে চেপে জালিমের গুলিতে যারা প্রাণ দিল সেই সব মৃতদের নামে আমি ফাঁসি দাবি করছি।

... খুনি জালিমের নিপীড়নকারী কঠিন হাত কোনোদিনও চেপে দিতে পারবে না তোমাদের সেই লক্ষদিনের আশাকে, যেদিন আমরা লড়াই করে জিতে নেব ন্যায়-নীতির দিন হে আমার মৃত ভাইরা, সেই দিন নিস্তব্ধতার মধ্য থেকে তোমাদের কন্ঠস্বর স্বাধীনতার বলিষ্ঠ চিৎকারে ভেসে আসবে সেই দিন আমার দেশের জনতা খুনি জালিমকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলাবেই ঝুলাবে তোমাদের আশা অগ্নিশিখার মতো জ্বলবে প্রতিশোধ এবং বিজয়ের আনন্দে। ---------------------------------------------- 'কাঁদতে আসিনি ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি' একুশের প্রথম কবিতা। কবিতাটির সাথে সবাই কমবেশী পরিচিত। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ঢাকায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলিবর্ষনের খবর পেয়ে সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে বসে কবি মাহবুব উল আলম চৌধুরী জ্বরাক্রান্ত অবস্থায় কবিতাটি লিখেন। মূল কবিতাটি ছিল প্রায় ১৭ পৃষ্টার।

দীর্ঘকাল নিষিদ্ধ থাকায় সমগ্র কবিতাটি এখন আর পাওয়া যায় না। চট্টগ্রাম থেকে বই আকারে কবিতাটি বের হবার পর কবিতাটি বাজেয়াপ্ত করে তৎকালীন পাকিস্থান সরকার। সদ্য প্রয়াত এই বিপ্লবী কবির প্রতি শ্রদ্ধা... তথ্যসূত্রঃ মায়ের ভাষার গান-রবীন্দ্র গোপ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.