ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কোনো কোনো নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। তীরবর্তী এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। এতে কয়েক সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়েছে।
কোনো কোনো স্থানে বন্যার পানির তোড়ে সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত-
কুড়িগ্রাম : তিস্তা, ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গাধর ও ঝিঞ্জিরামসহ ১৫টি নদ-নদীর তীরবর্তী এলাকায় আবারও দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোর অনেকে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ : জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা, আলাতুলী, নারায়ণপুর, সুন্দরপুর, শাহজাহানপুর, দেবীনগর, চরঅনুপনগর ও মহারাজপুর ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রাজশাহী : রাজশাহীর পদ্মা নদীতে সর্বোচ্চ পানির উচ্চতায় দুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। রবিবার ও গতকাল পানির উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার, যা বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে। এটি গত ১০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। পর্যাপ্ত ত্রাণের অভাবে বন্যাকবলিত মানুষ চার-পাঁচ দিন ধরে চরম সংকটে দিন কাটাচ্ছে। গাইবান্ধা : ব্রহ্মপুত্র নদ ও ঘাঘট নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে গাইবান্ধার তিনটি উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বর্তমানে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ৪৩ ও ঘাঘটের পানি ৪৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়। সিরাজগঞ্জ : সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে সিরাজগঞ্জ শহরসংলগ্ন পাঁচটি গ্রামসহ জেলার অন্তত ৪০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। মাদারীপুর : পদ্মার পানি বেড়ে শিবচরের কাওড়াকান্দি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল দুপুর থেকে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে ঘাট সূত্রে জানা গেছে।
এতে শিবচরের পদ্মাবেষ্টিত চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মানিকগঞ্জ : শিবালয় উপজেলার আরিচা পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদীতীরবর্তী বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে। জামালপুর : যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে যমুনার পানি আরও ২৫ সেন্টিমিটার বেড়ে গতকাল সকালে ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার ইসলামপুর ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। দুর্গত এলাকায় এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণ পেঁৗছায়নি বলে জানিয়েছেন বন্যার্তরা। ফরিদপুর : জেলার চরভদ্রাসন পয়েন্টে পদ্মার পানি বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকাই প্লাবিত হয়েছে। বর্তমানে দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।