আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্যপুরাকীর্তি চুরি মামলায় ফেঁসে যেতে পারেন সাবেক উপদেষ্টা এডভোকেট সুলতানা কামাল চক্রবর্তী!!!



ফ্রান্সের বেসরকারি গিমে জাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য পাঠানোর সময় জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে পুরাকীর্তি চুরির ঘটনায় ফেঁসে যেতে পারেন চলতি মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এক উপদেষ্টা। গতকাল বুধবার সন্দেহভাজনদের কয়েকজন রিমান্ড চলাকালে এ বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ঐ উপদেষ্টার নাম উল্লেখ বা বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। উল্লেখ্য, গিমে জাদুঘর কর্তৃপক্ষের সাথে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক অসম চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রায় দু’শ’ দুর্লভ, মহামূল্যবান পুরাকীর্তি ফ্রান্সে পাঠানোর সময় শেষ চালানে দু’টি টেরাকোটা বিষ্ণুমূর্তি চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় জিয়া বিমানবন্দর থানায় মামলা এবং চুরির ঘটনা তদন্তে সরকার ২টি পৃথক কমিটি গঠন করে।

উক্ত মামলায় গ্রেফতার ১৫ জনের ৫ দিনের রিমাণ্ডের প্রথম দিন অতিবাহিত হয়েছে। আসামীদের মধ্যে এয়ার ফ্রান্সের স্থানীয় কর্মী ৩ জন এবং ৭ জন লোডার রয়েছে। সূত্র জানায়, টিএফআই সেলে রিমান্ডের প্রথম দিবসে পুরাকীর্তি চুরি মামলায় গ্রেফতারকৃতদের ৩ জন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। এ সময় তারা তাদের প্রভাবিত ও প্ররোচিত করেছে মর্মে চলতি মেয়াদে প্রথম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এক উপদেষ্টার কথা বলেছে। ঐ উপদেষ্টা নিজেকে একজন মানবাধিকার কর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি দাবি করেন বলে সূত্র উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে বিমানবন্দর থানার ওসি রুহুল আমিন জানান, আসামীরা রিমান্ডের প্রথম দিনে বেশ কিছু নতুন ও চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। তবে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কোন তথ্য পত্রিকায় এলে রহস্য উদঘাটন বাধাগ্রস্ত হতে পারে। তথ্যানুসানে জানা যায়, ৪৭টি ‘মাস্টারপিস’ পুরাকীর্তিসহ ১৮৯টি দুর্লভ ও মহামূল্যবান প্রত্নতত্ত্ব প্রদর্শনীর জন্য ফ্রান্সে পাঠাতে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী জনমত গড়ে উঠলে এবং আদালতে রীট হলে ঢাকাস্থ ফরাসী দূতাবাসের উদ্যোগে রাজধানীতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর একটি সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে তৎকালীন ফরাসী দূতাবাস এ দেশীয় গণমাধ্যম এবং বিশেষজ্ঞ ও সুধী সমাজের ব্যাপারে আপত্তিকর বক্তব্য রাখেন।

এর কয়েকদিন পর সেগুনবাগিচাস্থ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে কয়েকজন সচেতন ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তির ব্যানারে গিমে জাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য প্রত্নবস্তুসমূহ পাঠাতে দূতিয়ালী করার উদ্দেশ্যে অপর এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে। সেদিন আয়োজক হিসেবে ছিলেন সাবেক উপদেষ্টা এডভোকেট সুলতানা কামাল চক্রবর্তী, ড. আনিসুজ্জামান, আলী যাকের প্রমুখ। তারা সেদিন বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্বের জনক ড. নাজিমউদ্দিন আহম্মেদকেও হেয় করতে দ্বিধাবোধ করেননি। লিখিত বক্তব্যে মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করেছিলেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নবানে জর্জরিত এসব গুণীজনরা সেদিন তড়িঘড়ি করে সাংবাদিক সম্মেলন শেষ করেছিলেন।

এসব ব্যক্তিত্ব এয়ার ফ্রান্সের কাছে হস্তান্তরের পর মহামূল্যবান দু’টি পুরাকীর্তি চুরি ও পরে ঢাকাস্থ ফরাসী দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ার্স জঁ রমনি সিয়ালোর কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহিভুêত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সাংবাদিক সম্মেলন তো দূরের কথা একটি বিবৃতিও দেননি। এ অবস্থায় ওয়াকিবহাল মহলে সুলতানা কামালদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাতীয় প্রত্নসম্পদ রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক ড. এম এ কামাল ইউরী বলেন, কতিপয় ব্যক্তি শুরু থেকেই গিমে জাদুঘরের পক্ষাবলম্বন করছে। দেশের স্বার্থকে বাদ দিয়ে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের জন্য তারা চাচ্ছিলো পুরাকীর্তিগুলো ফ্রান্সে পাঠানো হোক। তারা নব্য রাজাকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ফরাসী দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ার্সের শিষ্টাচার বহিভূêত আচণের জন্য তাকে বাংলাদেশ থেকে বহিষ্কারেরও দাবি জানান ড. ইউরী। এদিকে গত মঙ্গলবার রাতেই জিয়া বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ থেকে কড়া নিরাপত্তায় পুরাকীর্তিগুলো হোম বাউন্ড কুরিয়ার সার্ভিসের ট্রাকে করে জাতীয় জাদুঘরে ফিরিয়ে আনা হয়। গতকাল জাদুঘরের মহাপরিচালক সমর চন্দ্র পাল সাংবাদিকদের জানান, ফিরিয়ে আনা শেষ চালানোর ১২টি বাক্স ভর্তি পুরাকীর্তি কড়া প্রহরায় জাতীয় জাদুঘরে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে দ্বিতীয় দফায় প্রথম চালানে যাওয়া ১০টি বাক্স ভর্তি ৪২টি পুরাকীর্তি গিমে জাদুঘর থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। গতকাল অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সংস্কৃতি উপদেষ্টা আইয়ুব কাদরী পুরাকীর্তি নিয়ে সৃষ্ট ঘটনার সর্বশেষ পরিস্থিতি বৈঠককে অবহিত করেছেন।

বৈঠকের একটি সূত্র জানিয়েছে, আজকের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ বিষয়টি আলোচনা হতে পারে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।