প্রেক্ষাপটঃ (কল্পনা)
ঝাকরা চুলের বাবরী দোলানো কালপুরুষের বয়স তখন চব্বিষ কি পঁচিশ। কবি মানুষ। পড়নে খাদির পাঞ্জাবী, কাঁধে ঝোলা ব্যাগ। মেয়েটির নাম কেউ জানেনা। সবাই বলে দেবীপ্রতিমা।
সেদিন ১৪ ই ফেব্রুয়ারী। কেউ বলে বন্ধুত্ব, কেউ বলে ভালোবাসার দিন।
ভোর হইতেই অতিশয় ভদ্র ,লাজুক কালপুরুষ নিজের সমস্ত লজ্জা,উৎকন্ঠা আর উদ্বেগ কে পাশ কাটাইয়া হাতে এক খানা চিরকুট লইয়া ,সটানে পদ্মদিঘীর পারে গিয়া হাজির হইলেন-উদ্দেশ্য দেবীপ্রতিমার জন্য গতাকাল সারা রাত জাগিয়া লেখা সংলাপ দিঘীর পাড়ে বসিয়া একবার আওড়াইয়া লওয়া। কালপুরুষ তার আবেগ ভরা কন্ঠে উচ্চারণ করিলেনঃ
আজ আমায় একটা গোলাপ উপহার দেবে কী? হোক সে
গোলাপ যে কোন রঙের- লাল, সাদা, হলুদ, গোলাপী- যে
কোন একটা হলেই হলো- দেবে কী আমায়? পথের ধারে
ফুলের দোকান। শত শত বাহারী ফুল।
দু’টাকা, পাঁচ টাকা,
দশ টাকা- খরচ করলেই পেতে পারি পছন্দের কোন তাজা
গোলাপ। সেতো উপহার নয়, ভালবেসে কারো দেয়া নয়।
তুমি বন্ধু, তোমার কাছে একটা গোলাপ চাইতেই পারি।
দেবে কী আমায় একটা গোলাপ? নাইবা হলো তা লাল।
অন্য রঙের হলেও বা কম কিসের? তোমার দেয়া একটা
গোলাপ চাই’ই আমার চাই।
থাকুক তাতে বিষের কাঁটা,
থাকলো না হয় লুকিয়ে কীট- প্রাণের যদি ছোঁয়া থাকে
দেখবো না আর অন্য কিছু। ভাবছো কেন অমন করে?
দিলেই না হয় ভালবেসে, সামান্যইতো একটা গোলাপ।
মনে করো, আজকে আমার জন্মদিন। হাসলে যে! ঈদের
খুশী ভেবেই না হয় দিলে একটা লাল গোলাপ। মেহেদী
রাঙ্গা হাতে তোমার মানায় ভাল লাল গোলাপ।
তোমার জন্য
হতে পারি ছোট্ট সে এক ফুলদানী, তুমি কী তবে গোলাপ হবে?
ঠিক এই সময় গাছের আড়াল হইতে দুষ্ট কালবেলা বাহির হইয়া বায়না ধরিল বৃত্তান্ত কি জানিবার। যাবতীয় বৃত্তান্ত বুঝিয়া শুনিয়া,কালবেলা ঈষৎ হাসিয়া কহিলঃ
মনে যদি ধরে
ফুল রাখা দানী,
নিশ্চিত জেনো
আসিবে ঘুর্নি।
‘প’ চলে যাবে সবার আগে
সাথে নিয়ে যাবে ‘ল’ এর ‘আ’ কার
গোঁ ধরে থাকা ‘গ’ এর ‘ও’ কার
থাকল কি না, থাকল-
‘ল’ বেচারী শেষে বসে,
‘পাগল’ বনে রইল।
স্বপনের ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখো-
মুঠোয় ধরা ফুলদানীতে,
পাগল হয়ে চেয়ে রবে সে
গোলাপ ভেবে যারে চাহিতে!
(কপিরাইট সংক্রান্ত পুনশ্চঃ লেখার কালপুরুষ চরিত্র টির সংলাপ টুকু কালপুরুষ’দার ব্লগে লেখা“তুমি কী তবে গোলাপ হবে?” কবিতাটির হুবহু কপি এবং কালবেলা’র সংলাপটি উক্ত কবিতায় আমার নিজের করা মন্তব্য। )
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।