আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণআদালত ১৯৯২



এসএসসি পরীক্ষার মাসখানেক বাকি। আগেরদিন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে পাকিস্তান জিতে যাওয়ায় মন খারাপ। ২৬ শে মার্চ সকালে মনে হলো গণআদালতে কি হয় দেখে আসি। এর আগে ক্লাস নাইনে থাকতে ১৯৯০ এর গণ আন্দোলনের সময় কঠিণ মজা পাইছিলাম। বিডিআররে ইটা মাইরা আবার দৌড়াইয়া ঘরে আসার মধ্যে একটা মাদকতা ছিল।

গোলাম আজমরে ঘৃণা করতাম পারিবারিকভাবে। ছোটবেলা থিকা শুইনা আসছি আমার জ্যাঠামশাইরে রাজাকাররা ধইরা নিয়া গেছিল আর ফিরা আসে নাই। সুতরাং গোলাম আজমের বিচার করা হবে গণআদালতে ব্যাপারটা এমনিতেও খুব ইন্টারেস্টিং ছিল। বাসা থিকা বাইর হইতে দিতে চায় না। মা ভয় পায়।

এইটা সেইটা বইলা বাইর হইছিলাম। যখন গিয়া পৌছাইলাম ততক্ষণে বিচার শুরু হইয়া গেছে। মাইক বন্ধ কইরা দিছিল সরকার। আমরা পরিস্কার কিছু শুনতে পাইতেছিলাম না। তবে একটা জিনিস খুব মজা লাগতেছিল।

সবাই কোনরকম কোন লাগাম ছাড়া ইচ্ছা মতো জামাতরে গোলাম আজমরে গালি দিতেছিল। মৃত্যুদন্ড ঘোষনার আগে পুলিশ দুই এক দফা হালকা দৌড়ানি দিছে। ঘোষনার পরে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়া একটা বড়সড় ধাওয়া দিছে। আমরা ইউরেশিয়া তন্দুরি হাউজের দিকে গিয়া খাড়াইছি। তারপর হুট কইরা প্ল্যান হইল ইনকিলাব অফিস জ্বালানো হইবো।

গেলাম মিছিলের লগে লগে। ইটাইছিলাম ইচ্ছামতো। এর মধ্যে একজন মশাল ধরাইয়া আনছে। মেশিনরুমে ঢুকাইতে পারতেছে না। উদ্দেশ্য ছিল অফিস উড়াইয়া দেওয়া।

নীচতলায় একটু আগুন লাগতে লাগতেই ঠোলার দৌড়ানি খাইয়া ভাগলাম। তারপর বিজয় নগরের ভিতর দিয়া বাড়ি ফিরলাম। খুব ছোট সংক্ষিপ্ত অভিজ্ঞতা। কিন্তু ঘটনাটা সারাজীবন মনে রাখার মতো। গণআদালতে খুনী গোলাম আজমের মৃত্যুদন্ড ঘোষনার চাক্ষুষ সাক্ষীদের আমিও একজন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।