আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

@শুধুমাত্র তাওহীদুর্ রুবুবিয়্যাহর স্বীকৃতি প্রকৃত মুসলমান হওয়া ও আযাব মুক্তির জন্য যথেষ্ট নয়-১

জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com

আগের পর্ব পড়ুন। তাওহীদ তথা একত্ববাদে বিশ্বাস ব্যতীত মানুষের পক্ষে আল্লাহর প্রকৃত বান্দা হওয়ার কোন অবকাশ নেই। ইতিপূর্বে আমরা জেনেছি যে, তাওহীদ তিন প্রকার- তাওহীদুর্ রুবুবিয়্যাহ্ (প্রভুত্বে একত্ববাদ), তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ্ (ইবাদাতে একত্ববাদ) ও তাওহীদুল আসমা ওয়াস্ সিফাত (নাম ও গুণাবলীতে একত্ববাদ)। এ পর্বে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- কেউ শুধুমাত্র তাওহীদুর্ রুবুবিয়্যাহতে বিশ্বাস স্থাপন করলে সে সত্যিকার অর্থে তাওহীদ পন্থী নয়; কেননা, উল্লেখিত তিন প্রকার তাওহীদে বিশ্বাসের সমন্বয়ই হলে পরিপূর্ণ তাওহীদ, আর এই তিন প্রকার তাওহীদে বিশ্বাসের ফলেই মানুষ সত্যিকার অর্থে আল্লাহর বন্দেগীর সীমানায় প্রবেশ করে তথা মুসলমান হয়ে থাকে। বলা হয়েছে যে- "দুনিয়া আখেরাতের শস্যক্ষেত্র"।

তাই এই শস্যক্ষেত্রে আপনার আবাদ করা ও তা থেকে অর্জন করার জন্য সর্ব প্রথম কাজটিই হলো এই আবাদী ভূমির প্রকৃত মালিকের সম্মতি আদায়। আর একথা বলাই বাহুল্য যে, সম্মতি আদায় করতে হলে অবশ্যই ভালভাবে তাঁকে চিনতে হবে। সেই চেনার প্রকিয়াটাকেই তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যা তিন প্রকার তাওহীদ নামে পরিচিত। অতএব, আমাদের ও আমাদের এই আখেরাতের আবাদভূমি পৃথিবীর প্রকৃত মালিককে চিনতে হলে, তাঁর প্রকৃত গোলাম হতে হলে এবং আখেরাতে তাঁর নিকট হতে দুনিয়াবী শ্রমের প্রতিদান-ফসল লাভ করতে হলে অবশ্যই একই সাথে তিন প্রকার তাওহীদে বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে; এর কোন বিকল্প নেই। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন: وَمَا يُؤْمِنُ أَكْثَرُهُمْ بِاللَّهِ إِلَّا وَهُمْ مُشْرِكُونَ . ((আর তাদের অধিকাংশই আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করে এমতাবস্থায় যে, তারা মুশরিক।

)) [সূরা ইউসুফ: ১০৬] অর্থাৎ, তারা আল্লাহর প্রভুত্বে তথা তাওহীদুর্ রুবুবিয়্যাতে বিশ্বাস স্থাপন করে থাকে। তিনি যে সৃষ্টিকর্তা, রিযিকদাতা, বিশ্বব্যবস্থার পরিচালক তা স্বীকার করে। কিন্তু ইবাদাতের ক্ষেত্রে তথা তাওহীদুল উলুহিয়্যাতে এসে আল্লাহর সাথে শির্ক করে বা তাঁর ইবাদাতে অংশীদার স্থাপন করে থাকে। আল্লাহ্ তা'আলা কুরআনে বলেন: وَلَئِنْ سَأَلْتَهُمْ مَنْ خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ لَيَقُولُنَّ اللَّهُ ... ((আপনি যদি তাদেরকে জিজ্ঞেস করেন, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী কে সৃষ্টি করেছেন? তারা অবশ্যই বলবে, 'আল্লাহ্। )) [সূরা আয্-যুমার: ৩৮] তাওহীদুর্ রুবুবিয়্যাহতে বিশ্বাসী এ পর্যায়ের মুশরিকদের সম্পর্কে বিশিষ্ট তাফসীরবিদগণের কয়েকজনের মন্তব্য নিচে তুলে ধরা হলো: ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন: 'তাদের ঈমান হলো এমন যে, যখন তাদেরকে বলা হয়: কে আসমান সৃষ্টি করেছেন? কে যমীন সৃষ্টি করেছেন? কে পর্বতমালা সৃষ্টি করেছেন? তখন তারা বলে: "আল্লাহ্", অথচ তারা মুশরিক।

' ইকরিমা বলেন: 'আপনি যদি তাদেরকে প্রশ্ন করেন যে, কে তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং কে আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছেন? তবে তারা বলবে: আল্লাহ্। এটাই হলো আল্লাহর প্রতি তাদের ঈমান, অথচ তারা আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কিছুর ইবাদাত করে থাকে। ' মুজাহিদ বলেন: 'তাদের ঈমান হলো একথা বলা যে, আল্লাহ্ আমাদের স্রষ্টা এবং তিনিই আমাদের রিযিক দান করেন ও মৃত্যু দান করেন। এটাই হলো গাইরুল্লাহর (আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কারো) ইবাদাতের মাধ্যমে শির্ক করার পাশাপাশি তাদের ঈমানের স্বরূপ। ' আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ ইবনে আসলাম ইবনে যায়েদ বলেন: ' যে ব্যক্তিই আল্লাহর সাথে অন্য কারো ইবাদাত করে, সে-ই আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে এবং জানে যে, আল্লাহ্ তার রব, তার স্রস্টা ও রিযিকদাতা।

অথচ সে আল্লাহর সাথে শির্ক করে। আপনি কি দেখেননি ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম কিরূপ বলেছেন: قَالَ أَفَرَأَيْتُمْ مَا كُنْتُمْ تَعْبُدُونَ * أَنْتُمْ وَآَبَاؤُكُمُ الْأَقْدَمُونَ * فَإِنَّهُمْ عَدُوٌّ لِي إِلَّا رَبَّ الْعَالَمِينَ . ((তিনি (ইবরাহীম) বললেন, 'তোমরা কি ভেবে দেখেছ, কিসের ইবাদাত তোমরা করে আসছো- তোমরা এবং তোমাদের অতীত পিতৃপুরুষেরা? নিশ্চয়ই বিশ্বজাহানের প্রতিপালক ব্যতীত এরা সকলেই আমার শত্রু। )) [সূরা আশ্-শু'আরা: ৭৫-৭৭] (অসমাপ্ত)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.