জন্মোপার থেকে পৃথিবী হয়ে অনন্তে >>> ©www.fazleelahi.com
পৃথিবীতে সকল কাজই আমরা প্রতিদানের আশায় সম্পাদন করে থাকি, তবে এসবের মধ্যে নগদের হিসেবটাই সবচেয়ে বেশী কষে থাকি অর্থাৎ, যেসব কাজের প্রতিদান পৃথিবীর জীবনেই দ্রুত পাওয়া যাবে সেসবকেই মানুষের অগ্র অধিকার দিয়ে থাকে। আর এই প্রবণতায় দেখা যায় অনেকেরই বাকীর খাতাটা পুরোপুরিই শূন্য থেকে যায়। বাকীর খাতা তো তা, যা আপনি শ্রম দিয়ে দিয়ে সঞ্চয় করে রেখেছেন আর আপনার প্রতিপালকের ওয়াদা মোতাবেক পৃথিবীর পরবর্তী জীবনে সেসবের পুংখানুপুংখ প্রতিফল পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ((প্রত্যেক কাজই নিয়্যতের উপর নির্ভরশীল। )) [বুখারী: ১] –এই হাদীসের আলোকে কারো সৎকাজ প্রকাশ্যে আখেরাতের জন্য দৃশ্যমান হলেও যদি সে তা দুনিয়ার জন্য সম্পাদন করে থাকে তবে তাকে এখানেই প্রতিদান দেয়া হবে এবং বিনিময়ে আখেরাতে তার জন্য শূন্য নির্ধারিত হবে।
তবে অন্তরের নিয়তে যদি বান্দা আখেরাতকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে তাহলে সুমহান দয়াবান আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর বান্দাদেরকে অতিরিক্ত পাওনা প্রদান করে থাকেন দুনিয়াতেই; পরন্তু আখেরাতেও কিছুমাত্র ঘাটতি করেন না। উদাহরণত: এক ব্যক্তি সমস্ত মুখ, হাত, পা ধৌত করল এবং ধুলো সরানোর জন্য মাথাটাও মুছে নিল, এতে সে পরিচ্ছন্নতা অর্জন করলো; এর বেশী কিছু নয়। পক্ষান্তরে একজন মুমিনও অনুরূপ করে পরিচ্ছন্নতা অর্জন করলো এবং এর পাশাপাশি অযূর নিয়্যত অন্তরে পোষণ করার প্রেক্ষিতে সে আল্লাহর নিকট পবিত্র হিসেবে মূল্যায়ণ পেল আর এর প্রতিদানে হাশরের ময়দানের সেই কঠিন দিনে অযূ করে পবিত্র হওয়া মুমিন হিসেবে তার অযূর স্থানগুলো পূর্ণিমার চাঁদের মত ঔজ্জ্বল্য ছড়াবে; যা মহাপ্রতিদান হিসেবে বিবেচিত হবে।
এতো গেল ইবাদাতের দুনিয়ার ও আখেরাতী পাওনার একটা সংক্ষিপ্ত হিসেব, এবার আসা যাক সেই ইবাদাতের কথায় যার কোন হিসেব আল্লাহ্ তা'আলা মানুষকে জানাননি, যা তিনি নিজ হাতে প্রদান করবেন এবং যা হবে বেহিসাব।
হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন: الصَّوْمُ لِي وَأَنَا أَجْزِي بِهِ ((সওম আমার জন্য এবং আমিই এর প্রতিদান দেব।
)) [বুখারী: ৬৯৩৮, মুসলিম: ১৯৪৬] অর্থাৎ, বান্দা আল্লাহর জন্যই কেবলমাত্র সওম সাধনা করে থাকে তাই তিনি নিজ হাতেই তার প্রতিদান দেবেন। সোবহান আল্লাহ্!
আবূ হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত অন্য এক হাদিসে কুদসীতে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ((আল্লাহ্ বলেছেন: সওম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য; তবে সওম আমার জন্য। অতএব আমি নিজে এর পুরস্কার প্রদান করব। )) [বুখারী: ১৯০৪, মুসলিম: ১১৫১]
আবূ হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু 'আনহু থেকে বর্ণিত অপর এক হাদীসে এসেছে: ((প্রত্যেক সৎকাজের প্রতিদান দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যস্ত বর্ধিত হয়; শুধুমাত্র সিয়াম ব্যতীত। কেননা, তা আমার (আল্লাহর) জন্য এবং আমিই তার প্রতিদান দেব।
)) [মুয়াত্তা মালেক: ৬০৩]
সর্বশক্তিমান ও দয়াময় আল্লাহ্ তা'আলার নিকট আমাদের আকুল আবেদন-
আমাদের সিয়াম, আমাদের ক্বিয়াম, আমাদের সকল সৎকর্ম কবূল করুন এবং আপনি যে বেহিসাব প্রতিদানের ওয়াদা দিয়েছেন তা পাওয়ার যোগ্যতা দান করুন, তা অর্জনের তৌফিক দান করুন এবং তা থেকে কোনভাবেই যেন আমরা বঞ্চিত না হই সেভাবেই সাহায্য করুন আমাদেরকে। আমীন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।