কে জানে কখন কেটেছে তোমার স্বপ্নমুগ্ধ রাত,আজকে কঠিন ঝড়ের বাতাসে দ্বারে করে কশাঘাত
গিজ গিজ করা অসংখ্য মানুষ ক্ষুদ্র দেশ বাংলাদেশের জন্য বোঝা হলেও বিশ্বের বড় বড় বনিক ও ধণিক শ্রেণীর জন্য এসব অত্যন্ত লোভাতুর, মহাসম্পদ। পছন্দের স্থিতিশীল সরকার এবং তা পরিবর্তনের পছন্দনীয় সুনির্দিষ্ট ধারা অব্যাহত থাকলে যেনতেন ভাবে যে কেউই এদেশে বিনিয়োগ করে সম্পদ নিয়ে যেতে চায়। কারণ একটাই, এত মানুষ আর এত সস্তা শ্রম দুনিয়ায় আর দ্বিতীয়টি পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। ছোট বড় যা দিয়েই শুরু করা হোক না কেন চৌদ্দ কোটি মানুষের সহজল্ভ্য ও বিশাল বাজারে মুনাফার অংক যে প্রত্যাশার মাত্রার চেয়ে বহুগুন অতিক্রম করবে তা হলফ করে বলা যায়। সেজন্য বড় বড় দেশগুলো আমাদের ছোট্ট এই দেশ টুকোন নিয়ে খুব বেশী চিন্তা করে এবং সেই সাথে মোটামুটি একটা স্থায়ী মেরুদন্ডহীন ও অনুগত সরকার গঠণের জন্য নিজেরাই নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগীতাও কম করেনা।
দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার সাথে যোগাযোগের সেতুবন্ধন হিসেবে বাংলাদেশকে কিভাবে একটা ব্রীজ বানানো যায় বর্তমানে সে চিন্তা তাদের পেয়ে বসেছে। এটা দিবালোকের মত সুস্পষ্ট যে কোন দেশের রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তির মধ্যকার ঐক্যমিলন সে পথে দুটি মস্ত বড় বাধা। এ দুটি শক্তিকে সমূলে ধ্বংস করতে না পারলেও অন্ততপক্ষে নির্জীব করা বা সুচতুরতার সাথে একে অপরের প্রতিপক্ষ বানায়ে নিজেদের হীন স্বার্থ উদ্ধার করা বিশ্ব মোড়লদের পুরোনো স্ট্র্যাটেজি।
বিগত জোট সরকারের শাসনামলে আমেরিকায় সফররত একজন জার্নালিষ্ট কাম পলিটিশিয়ানকে তৃতীয় বিশ্বের দায়িত্বে থাকা স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক সেক্রেটারী বাংলাদেশে গণতন্ত্রের অবস্থান প্রসঙ্গে বলেছিলেন, তোমাদের দেশের গণতন্ত্র হল ‘ভেরী পুওর ডেমোক্রেসি’। মানসম্মানে সচেতন জার্নালিষ্ট উত্তরে বলেছিলেন ‘পুওর ডেমোক্রেসি ইজ বেটার দ্যান নো ডেমোক্রেসি’।
প্রকারান্তরে সেক্রেটারীকে এর মাধ্যমে তিনি বুঝাতে চেয়েছিলেন যে, নো ডেমোক্রেসির দেশগুলোর সাথে তো তোমাদের দহরম বেশ, তবে আমাদের দেশের পুওর ডেমোক্রেসিতে ক্রমান্বয়ে শক্তি সঞ্চয় করতে দিতে তোমাদের এত মাথা ব্যথা কেন?
যাহোক, ঘরোয়া রাজনীতি তো বাংলাদেশে কারো কারো জন্য নিষিদ্ধ (তাও শুধুমাত্র ভূ-মন্ডলে) ছিল, কিন্ত নভোমন্ডলের রাজনীতি ঠেকানোর সাধ্য কার? উপরে গড্ কিংবা নীচে বুশ এখনো এ পথে অন্তরায় হয়ে দাড়াননি। গত একুশে আগষ্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভূত ও পরবর্তীতে সব অনাকাংখিত ও রহস্যজনকভাবে বিস্তৃত পরিস্থিতির সূত্র ধরে এক সপ্তাহ পর (২৮শে আগষ্ট) মুক্ত আকাশ সংস্কৃতির কল্যাণে বিবিসি বিশ্বময় ছড়িয়ে দিল ভীত ও পলায়নরত এক সেনা সদস্যের পিছনে স্যান্ডেল পরিহিত এক যুবকের সর্বশক্তি দিয়ে ফ্লাইং কিকের ছবি। গত বছরের ২৮শে অক্টোবরের বীভৎস ও কুৎসিত দৃশ্যের পর সারা বিশ্বের খবর পিপাসু ও উৎসুক পাঠকদের সাথে প্রবাসী বাংলাদশীরাও উন্মুখ হয়ে আবারো পড়ল প্রিয় মাতৃভূমির নতুন আরেক কাহিনীর কদাংশ যা শুধুমাত্র টালমাটাল দেশেই হয়ে থাকে। সেইসাথে বরাবরের মত এবারো পক্ষ, বিপক্ষ বিভিন্ন বিভাগে ভাগ হয়ে নিজেরাও সরস ও নিরস আলোচনায় মেতে উঠল।
বিবিসি ছবিটির প্রচ্ছদে নিউজের একদম শিরোভাগে লিখেছিল, If a single image can sum up the thorny mess into which Bangladesh has once again stumbled, then this perhaps it is (অর্থাৎ যদি একটি মাত্র ছবিই পুরো দেশের অরাজকতা ও পুনরায় অস্থিতিশীলতার ইমেজ ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয় তবে সম্ভবত এটি সেটিই)।
তারও একদিন আগে অর্থাত্ ২৭শে আগষ্ট নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক "বাংলা পত্রিকা”য় খবর বেরুলো নিউ ইয়র্ক সিটির এস্টোরিয়াতে অবস্থিত পি.এস. ১১২-তে অনুষ্ঠিত উদীচী যুক্তরাষ্ট্র শাখা আয়োজিত রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী ও দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষনে বিখ্যাত কলামিস্ট ও লেখক আব্দুল গাফফার চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের সকল সমস্যার উত্স হচ্ছে সেনাবাহিনী। বঙ্গবন্ধু, চার নেতা সহ দেশের সেরা সন্তানদের হত্যা করেছে ওরাই। এরাই এখন চক্রান্ত করছে আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনাকে শেষ করার। এজন্য বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া মুক্তির পথ নেই। এগারো জানুয়ারীর পর থেকে শেখ হাসিনার আমেরিকা সফরের আগ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর প্রতিটি কর্মকান্ডের ভূয়শী প্রশংসাকারী আগাচৌ আরো বলেন, বর্তমান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের নয়।
ওরা ভাড়াটে পাকিস্তানী। ৭১ সালে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম পাকিস্তানী হানাদারদের বিরুদ্ধে। আর এবার যুদ্ধ করতে হবে পাকিস্তানী দাসদের বিরুদ্ধে। তিনি জোড় দিয়ে আরো বলেন, এই সেনাবাহিনীই প্রতিটি হত্যাকান্ডের জন্য দায়ী। বাংলাদেশের জাতীয় নেতা ছাড়াও উদীচী ও রমনা বটমূল বোমা হামলার নেপথ্য নায়ক হচ্ছে তারাই।
সেজন্য এদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম ছাড়া জাতি মুক্তি পাবেনা।
এরও একদিন আগে (অর্থাত্ ২৬শে আগষ্ট) ভারতের হায়দারাবাদে মক্কা মসজিদে বোমা বিস্ফোরিত হয়ে নৃশংসভাবে বহু লোক হতাহত হওয়ার পরপরই তদন্তের জন্য অপেক্ষা না করেই স্থানীয় পুলিশ তাত্ক্ষণিকভাবে ঘটনার মূল হোতার নাম ‘বিলাল’ দিয়ে এই বলে প্রচারণা চালালো যে, এই ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞ বাংলাদেশ থেকেই পরিচালিত হয়েছে। টাইমস্ অফ ইন্ডিয়া ৫ই সেপ্টেম্বরে কথিত বিলালের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারী স্কুল শিক্ষক আব্দুল ওয়াহেদের সুত্র ধরে লিখেছে, আমার ছেলের নাম মোহাম্মদ শহীদ। আমরা পরিবারের কেউই এমনকি তার বন্ধুরাও তাকে বিলাল নামে ডাকে না। এ নামটি পুলিশই তাকে দিয়েছে।
স্ন্রাসের সাথে অপ্রয়োজনীয়ভাবে আমার ছেলেকে না জড়িয়ে পুলিশের উচিত হবে সে যেখানে আছে বলে দাবী করছে (অর্থাত্ বাংলাদেশে) সেখান থেকে খুঁজে বের করে নিয়ে আসা। মিশ্র বর্ণের অধিবাসীদের গ্রাম মোজারামবাগের এই পরিবারে ওয়াহেদের রয়েছে ৭ পুত্র ও ৪ কন্যা সন্তান। দুই পুত্র শহীদ ও জাহেদকে কয়েক বছর আগ থেকে হায়দারাবাদের পুলিশ সময়ে অসময়ে তুলে নিয়ে যায়। কতবার যে হবে তা স্কুল শিক্ষক বাবা আর গুণতে পারছেন না। তিনি মিডিয়াকে জানান, আমি জানি না কেন তারা আমার দু’ছেলের পেছনে লেগেছে।
প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে টাইম্স বিস্তারিতভাবে আরো লিখেছে, এই লাজুক প্রকৃতির টিন এজার ছেলেদের দিয়ে ২০০৪ সাল থেকে পুলিশের অজানা প্রকল্প বাস্তবায়নের কাহিনী। বিশ্বব্যাপী প্রফেশনাল টেররিষ্টদের নামের তালিকার সাথে মিলিয়ে সর্বশেষে মোহাম্মদ শহীদের নাম দেয়া হয়েছে মক্কা মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের নায়ক, মোষ্ট ওয়ান্টেড, জংগী দল হুজি (হরকাতুল জিহাদ) নেতা আব্দুল শহীদ মোহাম্মদ বিলাল, যে কিনা বাংলাদেশে বসে ৯/১১ এর আদলে ইন্ডিয়ায় সুইসাইড স্কোয়াড চালনার পরিকল্পনা করছে। তাই স্বাভাবিক কারনেই ক্লাশ টেনে পড়া সর্বশেষ সন্তান মজিদকে নিয়ে শহীদ, জাহেদদের দুখী বাবা আব্দুল ওয়াহেদ গ্রাম ছেড়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগে মজিদকেও পুলিশ দু’বার ধরেছিল।
৪ঠা সেপ্টেম্বরে দি হিন্দু লিখেছে, বাংলাদেশের পুলিশ মোহাম্মদ শরিফুদ্দিন ওরফে আবু হামযাকে ধরে নিয়ে হায়দারাবাদের বোমা বিস্ফোরণের ব্যাপারে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এই শরিফুদ্দিনের সাথে উক্ত হুজি কমান্ডার বিলালের নিবিড় সম্পর্ক বিদ্যমান। ওই দিনের ইন্ডিয়ান টাইম্স যোগ করে আরো লিখেছে, একই অভিযোগে ২৮ বছরের যুবতী আফসানাকে বাংগালোরের বানের ঘাট থেকে ধরা হয়েছে, তার আরেক আত্মীয়া শাফিরা রুস্তমযাহ্কেও ধরা হয়েছে চার দিন আগে। শাফিরার ভাই রিজভানকেও পুলিশ হন্য হয়ে খুঁজছে।
এদের পরিচয় হিসেবে পুলিশ সবাইকে মেয়াদোত্তীর্ণ বাংলাদেশী ছাত্র বলে চালিয়ে দিচ্ছে। তাড়াহুড়া করার জন্য ভারতের পুলিশ একটু ভুল করেছে বলে মনে হয়।
কারণ, সবাই জানেন রুস্তমযাহ্, রিজভান টাইপের নাম বাংলাদেশে এখনও আমদানী হয়নি। এগুলো উত্তর ইন্ডিয়ার মুসলমানদের প্রচলিত নাম।
জংগী দমনে বাংলাদেশের বিরল ভূমিকার প্রশংসা না করে সাউথ এশিয়ান এনালাইসিস গ্রুপ বা সায়াগের (SAAG) অতিথি লেখক ডঃ আনন্দ কুমার তার জংগী সম্পর্কিত সাম্প্রতিক (৩০শে আগষ্ট) আর্টিকেলে লিখেছেন কিভাবে এই তথাকথিত মহাশক্তি সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং তা দমনে সেনাবাহিনী, RAB, পুলিশ, প্রশাসন সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার আষাড়ে গল্প।
আজকের আলোচনায় তারিখসহ ‘কাকতালীয়ভাবে’ ঘটে যাওয়া এতগুলো ঘটনার উল্লেখ করার অর্থ বুঝতে আমাদেরকে হয়তো রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। কেন যেন মনে হয় জাতিসংঘের সহায়তায় প্রতিবেশী দেশ ও বিশ্বমোড়লদের স্বার্থ মিলে যাওয়ায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে রহস্যময় পুরুষের স্বপ্নানুযায়ী উপমহাদেশের সীমানা পরিবর্তনের কিংবা মানচিত্র বদলানোর পুরনো ফন্দি বাস্তবায়নের আর তর সইছে না।
সাময়িক সময়ের জন্য জাতিসংঘের অধীনে সারা বিশ্বে সফলভাবে শান্তি মিশনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জোয়ানদের জন্য দেশের তুলনায় বিপুল অংকের অর্থের বেতন ও ভূয়শী প্রশংসা আধিপাত্যবাদীদের টোপ হিসেবে ব্যবহ্নত হচ্ছে কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। একটু সময়ের তরেও যেন অলক্ষ্যে তারা মহাশক্তি পরাশক্তি কারো আজ্ঞাবহ না হয়ে সর্বনাশ ডেকে না আনেন সেটাই আমরা আশা করব।
দেশটাকে জংগী ও অকার্যকর রাষ্ট্র বানানোর বহুদিনের সাধটাকে কার্যকর করতে বাংলাদেশকে সেকেন্ড পাকিস্তান বানানোর ও আমেরিকার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ব্যস্তসমস্ত সায়াগের সাম্প্রতিক সামগ্রিক কর্মকান্ড চোখের পড়ার মত। পাঠকেরা নিশ্চয়ই অবগত আছেন সামনের ইলেকশনে জেতার জন্যে ডেমোক্রেট, রিপাবলিকানের বাছাই পর্বের সব প্রার্থীই পাকিস্থানের উপর দ্রুত হামলার বিষয়টাকে আর ধামাচাপা দিচ্ছেন না। ইতিমধ্যে হোয়াইট হাউসের শনিবারের সাপ্তাহিক ব্রিফিং-এ আমেরিকার নেতৃত্বে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী চলমান যুদ্ধের নানা আপডেটের সাথে বাংলাদেশের জরুরী অবস্থা, গণতন্ত্র, সেনা শাসন নানা বিষয়ের প্রসংগও নতুন করে স্থান পেয়েছে।
চট্টগ্রামের বন্দরটাকে আল ক্বায়েদার এশিয়ায় প্রবেশ দ্বারের ঘাঁটি বানানোর বিশ্বব্যাপী নতুনভাবে প্রচারনা চালনার রহস্য উদ্ঘাটনের এবং তা মোকাবেলায় কার্যকারী পদক্ষেপ না নিয়ে বিদেশ মিশনসমুহের বোবা পররাষ্ট্রনীতি অব্যাহত থাকলে ভয়ংকর ভবিষ্যত আমাদের জন্য অপেক্ষা করবে। বছর পাঁচেক আগ থেকে পশ্চিমবঙ্গে গজিয়ে উঠা বিপুল সংখ্যক এখনো অজনপ্রিয় ভারতের গার্মেন্ট্স ইন্ডাস্ট্রিসমূহকে পাশ্চাত্যের বাজারে আমাদের দেশের তুলনায় কোয়ালিটি প্রোডাক্ট হিসেবে টিকিয়ে রাখার জন্য বাংলাদেশকে অকার্যকর ও জংগী দেশ বানানোর ফর্মূলাটি পুড়িয়ে ধ্বংস করার চেয়ে অত্যন্ত সহজ ও স্থায়ী সমাধান। সেই সাথে আমেরিকার আশীর্বাদ এবং কাশ্মিরী বা প্রতিবেশী মুসলিম সন্ত্রাসী দমনের নামে ইসরাইলের সাথে সেদেশের সামরিক বাহিনীর নতুন ডিল যদি যোগ হয় তাহলে তো আর কথাই নেই। বিভিন্ন নাজুক পরিস্থিতিতে বিন লাদেনের এক একটা টেপ ইথারে ভেসে এসে বুশকে যেমন বাঁচিয়ে রাখছে, বেঁটে খাটো পাজামা, পাঞ্জাবী পরিহিত আরেকটা কল্পিত বিন লাদেন এ অঞ্চলে সৃষ্টি করে অবাধ্য ও অচ্ছুত প্রতিবেশীদের শায়েস্তা করার সুবর্ণ সুযোগ ভারত আর হাতছাড়া করতে চাইছে না। কারণ, ইতিমধ্যে আমরা জেনে ফেলেছি দেশের পর দেশ, সভ্যতার পর সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাবে কিন্ত বিদেহী বা অশরিরী বিন লাদেনদের টিকিটিও শক্তিধরেরা কখনো ছুঁতে পারবে না।
সব সরকারের সাথে সুসম্পর্ক এবং জনগণের সাথে সম্পর্কহীন সুশীল সমাজের আয়তাকার বৈঠকের গোল টেবিল আলোচনায় অসাড় তত্ত্বের মায়াভোলানো উপস্থাপনা ও সেনাপ্রধাণকে অযাযিত তোষণ নীতি নিয়ে আমাদের দেশের বিভিন্ন ধরনের বুদ্ধিজীবির সাথে সুবিধাবাদী রাজনীতিকরা তো সবসময়ই প্রস্তুত।
ক্ষুদ্র এই ব-দ্বীপটুকুর বিরুদ্ধে সামরিক ও মূল রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে দ্বন্দ্ব বাধানোর জন্য গুটিকতেক দেশীয় এজেন্টদের সহযোগীতায় দুনিয়ার চতুর্দিক থেকে একসাথে বুদ্ধিবৃত্তিক সাঁড়াশি আক্রমণের বিপরীতে আমাদের পররাষ্ট্রনীতি যদি ‘অতিকায় হস্তি লোপ পাইয়াছে কিন্ত ক্ষুদ্র পিপীলিকা টিকিয়া রহিয়াছে’ ভেবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তাহলে তো বলার কিছুই নাই, তবে সামরিক শক্তির নিকট বিনীত অনুরোধ থাকবে বনিক মারাঠা, বর্গীরা ক্ষণিকের জন্য ধণিক বানানোর ফাঁদে ফেলে ঘুম পাড়ানোর গান গেয়ে যেন ক্ষেতের সব ধান খেয়ে না ফেলে!
* আমার এই লেখাটি যায়যায়দিন ২০শে সেপ্টেম্বরে ও নয়াদিগন্ত ৪ই অক্টোবরে ২০০৭ ছেপেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।