আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজাকারদের প্রতিকী গণঅনশন।

মনে ভেতর দ্বিধা, পা বাড়াতে বাঁধা, শেকল পড়া পায়, কদিন বাঁচা যায় । বেঁচে থাকা যে দায়। দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুল, মনের আগল খোল, রক্ত আবির অঙ্গে মেখে " সূর্যস্নানে চল " দুপুরের দিকে ভার্সিটিতে যাই। শাহজালাল ইউনিভার্সিটি না। লিডিং ইউনিভার্সিটি।

আজকে বন্ধের দিনে ভার্সিটিতে গিয়েছি এবং প্রচণ্ড মেজাজ খারাপ করে ফিরেছি। রাজাকাররা দেখলাম ভার্সিটির সামনে সিলেটের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দাবী " আধ্যাত্মিক ( !!! ) বিশ্ববিদ্যালয়ে জাহানারা ইমামের মূর্তি ( !!! ) স্থাপন বন্ধ করতে হবে " হারামজাদাদের ঘোষণা দিয়েছে তারা নাকি মূর্তি ভেঙ্গে ফেলবে। এতে বক্তারা ( আসলে রাজাকার ) বলে " জাহানারা ইমাম একজন নারী হয়ে কেন তিনি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে আন্দোলন করবেন। তিনি থাকবেন ঘরে।

কালো পর্দার আড়ালে। কিন্তু না। তিনি থেকেছেন রাজ পথে। আর আজকে এই আমাদের আধ্যাত্মিক ( !!!) নগরী সিলেটে শাহজালালের নামের বিশ্ববিদ্যালয়ে তার মূর্তি স্থাপন করা হচ্ছে। " এখানে কয়েকজনের বক্তব্যের সার সংক্ষেপ দিয়ে দিলাম ঃ ১।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় এখন নাস্তিকদের হাতে চলে গেছে। এর পূর্বে আপনারা আন্দোলন করেছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরনের সময় এখন আবার সময় এসেছে আন্দোলনে নামার। জাহানারা ইমামের মূর্তি হতে পারে না। ২। আমরা ভিসির কাছে গিয়েছিলাম আমাদের প্রস্থাব নিয়ে তিনি আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন।

আমাদের আজকের এই গণঅনশনে আমরা আমন্ত্রন করেছিলাম সিলেটের মেয়র " কামরান " সাবকে। কিন্তু এখন গিয়ে উনার গাড়ি পেয়েছি কিন্তু উনাকে পাইনি। কিন্তু এই সিলেটের মুসলমান জাগ্রত। আপনারা মূর্তি তৈরি করতে দিবেন ??? নাআআআ ( সবাই উচ্চ স্বরে )। ৩।

যদি মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য নির্মাণ করতেই হয় তবে এমন একটা ভাস্কর্য নির্মাণ করা হোক যেখানে দুটি কামান থাকবে। একটি থাকবে পাকিস্তানের দিকে অন্যটি থাকবে দিল্লির দিকে। কিন্তু এরা এরকম ভাস্কর্য নির্মাণ না করে তৈরি করছেন " জাহানারা ইমামের " মূর্তি। ৪। এই জাফর ইকবাল একজন নাস্তিক।

শাহজালালের মাটিতে তার পা রাখার কোন অধিকার নেই। সে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূর্তি নির্মাণ করে, সে নারীদের সাথে নাচে, তার বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েরা বোরকা ছাড়া চলাচল করে। আমাদের আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় আজ নাস্তিকদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে। এখনি এদের উচ্ছেদ করে শাহাজালালের পূর্ণভূমিতে আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ৫।

তারপরও যদি ভাস্কর্য বসানো হয় তবে আমরা সেটা ধ্বংস করে দেবো। কি ? ধ্বংস হবে ?? হাঁ হবে ( উচ্চস্বরে ) ৬। এরা মূর্তি নির্মাণ করে আমাদের ধর্মানুভুতিতে আঘাত করছে। লক্ষ মুসলিমের ধর্মীয় অনুভূতিতে তারা আঘাত করছে। এটা মেনে নেওয়া যায় না।

এছাড়া অনেকেই অনেক ভাবে উস্কানি দিয়ে গেছেন। আজতারা গণঅনশনে নেমেছে। আগামীকাল তারা চাপাতি সংগ্রহ করবে পরশু তারা নেমে যাবে সিলেটকে আধ্যাত্মিক( !!! ) নগরী প্রতিষ্ঠা করার জন্য সিলেটের সকল মূর্তি ভাঙার জন্য। *** হঠাৎ করে খেয়াল করলাম একটি মিছিল এগিয়ে আসছে। একজন কে জিজ্ঞেস করলাম ভাই এই মিছিল কি এই গণঅনশনের জন্য আসছে ?? সেই মানুষটি আমার দিকে তাকিয়ে বলল।

" এই রাজাকারদের অনশন না চুদাুিতে কেডা যাবে ?? এই গুলা রাজাকার। ালরা না বুঝেই রাস্তায় বসে যায়। এদের রাস্তায় গুলি করে মারা উচিত। ঠিক মতো কথা কইতেই জানে না আর হেরা বুঝবো মূর্তি আর ভাস্কর্যের মধ্যে পার্থক্য ?? " আমি এই লোকটার কথা শুনে হতবাক। নেহাত সাধারণ একজন মানুষ।

মাথায় টুপি পড়নে লঙ্গি। কিন্তু ঐ সব আবালদের মতো না। রাজাকারা যে পড়াশুনা জানে না সেটাও আজকে ভালো করে প্রমাণ হলো। এরা সবাই খাঁটি সিলেটী ভাষায় কথা বলছে। পাশের হাসান মার্কেটে ঢুকতেই শুনলাম দুইটা প্যান্ট শাট পরা ভদ্র লোক কথা বলছেন " জাহানারা ইমাম হলো নাস্তিক।

উনি যুদ্ধের সময় কি না কি করছিল সে জন্যই উনি বিখ্যাত। সিলেট হলো আধ্যাত্মিক নগরী। এখানে মূর্তি বসাতে পারবে না। " তারপর উনাদের সাথে আমার একটু কথা হয়েছে। কথোপকথন নিম্নরূপ।

আমি ঃ ভাই, বাংলাদেশের শহীদ দিবস কবে ?? ভদ্রলোক ঃ আপনি কে ??? আমি ঃ না। আপনারা দেশের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলছেন তাই জিজ্ঞেস করলাম। দেশে যে রাজাকার আছে তাদের বিরুদ্ধে প্রথম কে আন্দোলন করেছে ?? ভদ্রলোক ঃ আমি কীভাবে জানবো। আমি ঃ আপনি নিশ্চয়ই জানেন আমাদের দেশের স্বাধীনতা দিবস কবে আর বিজয় দিবস করে। কে প্রথম স্বাধীনতার ডাক দিয়েছে ? ভদ্রলোক ঃ আরে ভাই আমার সময় নাই।

আমি যাই। আমি ঃ খারান। তুই তাইলে রাজাকার। থু থু। এই বলেই বাসার উদ্দেশের হাঁটা দিয়েছি।

এখন সময় মনে হয় চলে এসেছে ওদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে। তা না হলে ওরা গ্রিনিচ বুক অব ওয়ার্ল্ডে " বিশ্বের প্রথম আধ্যাত্মিক বিশ্ববিদ্যালয় __ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় " লিখে দেবে। আগামীকাল শাবিতে নারী শিক্ষা বন্ধ হয়ে যাবে। তারপরদিন বন্ধ হয়ে যাবে সকল বিজ্ঞান শিক্ষা। তারপরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে তৈরি হবে নানা বোমা।

কারণ সিলেটের সকল মূর্তি ভেঙ্গে ফেলতে হবে। তারপরদিন দেশের সকল মূর্তি ভেঙ্গে ফেলতে হবে। এভাবেই চলতে থাকবে আধ্যাত্মিক নগরী প্রতিষ্ঠা সাথে সাথে ইসলামের জয় জয়কার। ওরা একটা কামান পাকির দিকে রাখতে চায়, আর আরেকটা কামান রাখতে চায় দিল্লির দিকে। আর আমি ওদের দিকে রাখতে চাই কামান।

যাতে এক কামানের গোলায় ওরা উড়ে দিয়ে পাকিতে আর আফগানি পড়ে। যদি শাহজালালের নামের বিশ্ববিদ্যালয়ে মূর্তি নির্মাণ হারাম হয় তবে আমি বলবো বিজ্ঞানের সাথে শাহজালালের কোন সম্পর্ক নেই। এখনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নামটি অপসারণ করে " সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় " করা হোক। শাহজালাল তার গালিচায় ভেসে সুরমা পাড়ি দিয়েছেন। কিন্তু বিজ্ঞান তা মানে না।

বিজ্ঞানের সাথে শাহজালাল তাহলে সংঘর্ষিত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নামের সাথে শাহজালালের নাম থাকতে পারে না। __ একজন লেখকের উক্তি। প্রয়োজন হলে আমরা আগামীকাল থেকেই নেমে যাবো ভাস্কর্য তৈরি করতে। আমাদের ঘামে তৈরি হবে ভাস্কর্য।

প্রতিটি ইটের গাঁথুনিতে থাকবে আমাদের হাতের ছাপ। ভাস্কর্য হবেই। প্রয়োজন হলে আগামীকাল থেকেই আমরা সিলেটবাসিকে বুঝাতে নেমে যাবো। গণ স্বাক্ষর অভিযানে নেমে যাবো। এই সিলেটের মানুষদের বুঝাতে হবে এইটা কোন মূর্তি না।

এটা ভাস্কর্য। একজন মায়ের আশীর্বাদ নেওয়ার প্রতিকৃতি। সাথে সাথে আমরা দিখিয়ে দিতে পারি অন্য সকল মুসলিম প্রধান দেশের ভাস্কর্য। সিলেটের মানুষ ঐ রাজাকারদের মতো মূর্খ না। ভাস্কর্যকে যারা মূর্তি বলবে তাদের বলতে চাই " মূর্তি হবেই " শাবিপ্রবিতে নির্মাণাধীন ভাস্কর্যের নকশা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.