আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মুভি: দ্য পারস্যুট অফ হ্যাপিনেস-সত্য ঘটনা নিয়ে ছবি। অসাধারণ!!!

রাজনীতি ও অর্থনীতি এই দুই সাপ পরস্পর পরস্পরকে লেজের দিক থেকে অনবরত খেয়ে যাচ্ছে

১। দ্য পারস্যুট অফ হ্যাপিনেস নামের মুভিটা যে দেখা অবশ্যই উচিত তা আমাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জন বলেছেন। আমরাবন্ধু গ্রুপের রিয়াদ ভাই বললেন সর্বশেষ। ছবি কেনা আমার সবচেয়ে প্রিয় সখ। কিনে ফেললাম।

ক্রিস গার্ডনারের জীবন সংগ্রামের ছবি। ক্রিস (উইল স্মিথ) ও তার ছেলে ক্রিস্টোফারের (জাডেন স্মিথ) জীবনের কাহিনী এই ছবি। ক্রিস ও তার বান্ধবি জমানো সব অর্থ দিয়ে চিকিৎসা সামগ্রী-এক ধরনের স্কানার বিক্রি করে। দুই হাতে ভারি দুই স্কানার ফেরিওয়ালার মতো বিক্রি করে ক্রিস। সহজে বিক্রি হয় না।

বাড়ি ভাড়া বাকি, গাড়ি ক্রমাগত পার্কিং টিকেট খেতে খেতে এক পর্যায়ে গাড়িটাই হাতছাড়া হয়, ডে কেয়ারে রাখা ছেলের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে হিমসিম ক্রিস। স্কানারও চুরি হয় ক্রিসের। বান্ধবিও এক সময় ক্রিসকে ছেড়ে চলে যায় নিউইয়র্কে। সেই ক্রিস একদিন এক ব্রোকার হাউজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় একদল সুখী মানুষের চেহারা দেখে তারও ইচ্ছা হয় এখানে কাজ করতে। কিন্তু ক্রিসের সেই শিক্ষাও নেই, নেই কোনো পরিচিত।

তারপরেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে। কিভাবে সে ইন্টার্নির সুযোগ পায় সেও এক বিশাল গল্প। বিনা বেতনে ইন্টর্নি, ভাল করলে তারপরেই চাকরি। ইন্টার্নির ইন্টারভ্যুর আগের দিন পার্কিং ফি ক্রমাগতভাবে না দেওয়ায় জেলে যেতে হয় ক্রিসকে। পরেরদিন সাড়ে নটায় ছাড়া পেয়ে খালি পায়ে ক্রিস যায় ইন্টাভ্যু দিতে।

ইন্টার্নির কাশ শেষ করেই প্রতিদিন ক্রিস বের হয় স্কানার বিক্রি করতে। একদিন অর্থের অভাবে বাড়িও ছাড়তে হয় ক্রিসকে। ক্রিস ও তার ছেলে হয়ে পড়ে হোমলেস। শুরু হয় রাতের জন্য আশ্রয় খোঁজা। দিনে ছেলেকে ডে-কেয়ারে রেখে, স্যুটকেস একটা হাতে নিয়ে ক্রিস যায় ইন্টার্ণি করতে।

রাতে খুঁজে ফেরে থাকার জায়গা। অনেক সংস্থা একরাতের জন্য থাকার জায়গা দেয়। মার্কিন হোমলেসরা লাইন ধরে সেই জায়গা পেতে চেষ্টা করে। লাইনে দাঁড়ায় ক্রিস ও ক্রিস্টোফার। মাঝে মধ্যে চাতুরির আশ্রয় নেয়।

একদিন তো তারা স্টেশনের বাথরুমে সারা রাত কাটায়। ছবিটা না দেখলে এসব বুঝিয়ে লেখাটা কষ্টকর। একদিন শেষ হয় ইন্টার্ণি, ক্রিসকে ডেকে যখন বলা হয় চাকরিটা সেই পাচ্ছে সেসময়ে উইল স্মিথের অভিনয় চেয়ে চেয়ে দেখার মতো। এক দৌড়ে চলে যায় ছেলের কাছে, ডে-কেয়ার থেকে ছেলেকে নিয়ে বের হয় রাস্তায়। ছবি শেষ, শেষে লেখা পড়ি আমি এই ক্রিস এখন শিকাগোর গার্ডনার রিচ অ্যান্ড কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, এই ব্রোকারেজ ফার্মটির সামান্য শেয়ার ২০০৬ সালে ক্রিস বিক্রি করেছে ১ বিলিয়ন ডলারে।

অর্থাত যে ছবিটা দেখলাম তা একটি সত্যি ঘটনা। ২। ক্রিস গার্ডনারের জš§ ১৯৫৪ সালে। ২০০২ সালে তার এই জীবন সংগ্রাম ও সাফল্য নিয়ে তিনি একটা সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন। মানুষের আগ্রহ দেখে তিনি লিখে ফেলেন আÍজীবনী দ্য পারস্যুট অব হ্যাপিনেস।

সেই বই নিয়েই তৈরি ছবি, যা মুক্তি পায় ২০০৬ এর ডিসেম্বরে। ছবির প্রযোজকও তিনি। প্রথমে তিনি উইল স্মিথতে নিতে চাননি, পরে মেয়ের সুপারিশে নেন। অসাধারণ অভিনয় করেন উইল স্মিথ, অস্কারে মনোনয়নও পেয়েছিলেন। ছেলে ক্রিস্টোফারের ভূমিকায় অভিনয় করে উইলিরই ছেলে জ্যানেট স্মিথ।

অসাধারণ অভিনয়। শেষ দৃশ্যে যখন উইল ও তার ছেলে হেঁটে যায়, তার উল্টো দিক দিয়ে যাচ্ছিলেন প্রকৃত ক্রিস। ছবির ক্রিস (উইল) একবার পেছন ফিরে দেখে আবার হাঁটতে থাকেন। ক্রিস এখন একজন বড় দানবিরও। হোমলেসদের যারা সহায়তা দেয় তাদের সাহায্য করেন ক্রিস।

যারা তাকে আশ্রয় দিয়েছিল তাদের বড় পৃষ্ঠপোষক এখন ক্রিস। ছবি ও সত্যির মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে। ছবিতে দেখায় ক্রিস বিনা বেতনে ইন্টার্নি করে, আসলে ১ হাজার ডলার পেতো ক্রিস। ক্রিস একদিন নয়, জেলে ছিল ১০ দিন। ছবিতে দেখায় হোমলেস হিসাবে তারা ছিল অল্প কয়েকটা দিন, আসলে ছিল কয়েক বছর।

কোনো কোনো দিন ক্রিস অফিসে ডেস্কের নিচেও রাত কাটাতো। যারা দেখেননি, তারা জানেননা কি দেখেননি। আমি দেখেছি, আবার দেখবো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.