একজন আমি, একজন হারিয়ে যাওয়া এবং একজন দূর প্রবাসী
এক শুক্রবার বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক-এর ম্যানেজার এম.মতিন সাহেব রহস্যজনকভাবে খুন হলেন। পুলিশ-কে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে দেখতে পায় যে, মতিন সাহেব ড্রইং রুমের সোফায় মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। তার গলায় রশির দাগ রয়ে গেছে। এথেকে পুলিশ বুঝতে পারে যে, কেউ মতিন সাহেবের গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করেছেন।
পুলিশ লাশ মর্গে পাঠিয়ে দিয়ে একে একে বাসার সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় বাসায় উপস্থিত ছিলেনঃ
১. মতিন সাহেবের বৌ
২. বাসার কাজের লোক
৩. বাগানের মালি
৪. গাড়ির ড্রাইভার
মতিন সাহেবের বৌ-কে জিজ্ঞাসাবাদ করে যা জানা যায়ঃ
মতিন সাহেব গতকাল রাতে দেরী করে বাসায় ফিরেন। প্রায় রাত ১টার দিকে। মতিন সাহেবের বৌ তখনো জেগে তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। মতিন সাহেবকে খাবার পরিবেশনের কাজ তিনিই করেন।
এরপর তারা দুজনেই ঘুমাতে চলে যান। রাতের বেলা তার(মতিন সাহেবের বৌ) মাথা ব্যাথা শুরু করায় তিনি ঘুমের অষুধ খেয়েছিলেন। তাই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয়েছিল। মতিন সাহেবের বাসায় কারো সাথেই ঝগড়া ছিল না। তবে কিছুদিন আগে তাদের ড্রাইভার-এর সাথে বচসা হয়ায় মতিন সাহেব তাকে ১ মাসের নোটিশ দিয়েছিলেন চাকরী ছেড়ে দেয়ার জন্য।
কাজের লোক-কে জিজ্ঞাসাবাদ করে যা জানা যায়ঃ
মতিন সাহেব যে রাতের বেলা দেরীতে এসেছিলেন তা তার কথাতেও প্রমানিত হয়। ম্যাডাম এর কথায় সে ঘুমাতে চলে যায়। সকাল বেলা উঠে সে প্রতিদিনের মতই নাস্তা তৈরী করার কাজে মনোনিবেশ করে। রান্নাঘর আর ড্রইং রুম দুই কোনায় হওয়ায় সে কিছুই শুনতে পায়নি। এমনকি মালি আর ড্রাইভার কখন এসেছে তাও সে বলতে পারেনি।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, সে এ বাসায় প্রায় ১০ বছর ধরে আছে। তার মতে মতিন দম্পতির মত ভালো দম্পতি এ দুনিয়ায় হয় না।
ড্রাইভার-কে জিজ্ঞাসাবাদ করে যা জানা যায়ঃ
আজ সকাল বেলা ৭টার দিকে সে আসে। এর পর সে গাড়ির চাবি নিয়ে গাড়ি পরিষ্কার করতে চলে যায়। আজ আসতে একটু দেরী হয়ে যায়।
তাই সে জলদি জলদি গাড়ি পরিষ্কার করছিল যাতে সাহেব-এর অফিস যেতে দেরি না হয়। সে এও স্বীকার করে যে, কিছুদিন আগে তার সাথে সাহেব এর বচসা হয়েছিল। কিন্তু সে তার সাহেবকে খুবই পছন্দ করতো। তার সাহেব-এর মত এতো ভালো মালিক এর মৃত্যুতে সে বড়ই শোকাহত হয়েছে।
মালিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যা জানা যায়ঃ
মতিন সাহেব খুবই শৌখিন লোক ছিল।
তার বাগানে নানা জাতের বিভিন্ন ধরনের ফুল ছিল। মতিন সাহেব ফুল অনেক পছন্দ করতেন। প্রায়ই বাইরে গেলে তিনি বিভিন্ন ফুলের চারা নিয়ে আসতেন। আজ সকাল বেলা এসে সে বাগান পরিচর্যায় মনোযোগ দেন। সে ড্রাইভারকে বাসায় আসতে দেখেছে।
কিন্তু বাসা থেকে কাউকে বের হতে দেখেনি। সে প্রায় ভোর ৬টার দিকে এসেছিল এবং আগামীকাল সে গ্রামে যাবে বলেই আজ একটু বেশি কাজ করছিল। তার কাছ থেকে এও জানা যায় যে, কাজের লোক তার মেয়ের জামাইয়ের চাকরীর জন্য মালিকের কাছে সুপারিশ করেছিল। কিন্তু মালিক তাকে কোনো চাকরী দিতে পারেনি। পরে তার মেয়ের জামাই তার মেয়েকে তালাক দিয়ে বাসা থেকে বের করে দিয়েছিল।
এই ৪জন কে জিজ্ঞাসাবাদ করেই পুলিশ আসল খুনি কে বুঝতে পারে এবং তাকে ধরে নিয়ে যায়।
এখন কথা হল, কে খুন করেছে?এবং পুলিশ কেমনে বুঝলো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।