আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

উল্লুক। বিরল প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী। বাংলাদেশে প্রাণীটি খুব কম সংখ্যায় এখনো টিকে আছে। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এ প্রজাতিটি আর বেশিদিন টিকতে পারবে না। এর প্রধান কারণ হচ্ছে নির্বিচারে বন-জঙ্গল উজার এবং বনাঞ্চলে ফলজগাছের দুষ্প্রাপ্যতা।

উপজাতিয়রা খায় বলে ও এ প্রজাতিটির সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন। বর্তমানে বাংলাদেশে এ প্রাণীর সংখ্যা ২শ’ এর কম বলে জানা গেছে। দেশের বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে রয়েছে শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক। আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা এ প্রাণীটিকে অত্যন্ত বিপন্ন হিসেবে চিহ্নিত করেছে। খুব দ্রুত এদের সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে খুব তাড়াতাড়ি এরা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

সম্প্রতিককালে উল্লুক নিয়ে দেশে গবেষণা চলছে ২০০৩ সালের মার্চে শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক গবেষক ও ছাত্ররা উল্লুক সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রচারণামূলক সমাবেশ করেন। এর মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল-‘উল্লুক সংরক্ষণে এগিয়ে আসুন’। তখন এখানে কয়েকটি বিলবোর্ড ও স্থাপন করা হয়। নিসর্গ সহায়তা প্রকল্পের সিনিয়র এক কর্মকর্তা জানান, গত মে-জুন মাসে ইংল্যান্ডে অধ্যয়নরত ফিনল্যান্ডের ছাত্রী পেট্টা শ্রীমঙ্গলে এসে লাউয়াছড়ায় উল্লুকের ওপর গবেষণা করেন। তাঁর গবেষণার দেখা গেছে, লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে ১৪টি উল্লুক পরিবার বা গ্রুপ বসবাস করছে।

এদের প্রতি পরিবারের সদস্য সংখ্যা ২ থেকে ৫ এবং লাউয়াছড়া এখন মোট উল্লুকের সংখ্যা ৫১। বাংলাদেশে উল্লুকবিষয়ক গবেষণা অত্যন্ত সীমিত। এ ধরণের গবেষণা ও কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হলে এবং লাউয়াছড়া বর্তমানে বসবাসরত উল্লুকসমূহকে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হলে এখানে বিলুপ্তপ্রায় উল্লুক বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে বলে গবেষকগণ মনে করেন। গবেষকদের মতে, বাংলাদেশের অন্যান্য বনাঞ্চলের চেয়ে উল্লুক বসবাসের জন্য এখনো লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক অনেক বেশি উপযোগী। উল্লুকরা পরিবার কেন্দ্রীক হয়ে বসবাস করে এবং প্রতিটি পরিবার বা গ্রুপ একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে অবস্থান করে।

একেকটি দলে ২ থেকে ৫টি সদস্য থাকে। সাধারণত সকালের দিকে ‘হু-হা’ শব্দ করে দলগত অবস্থান ঘোষণা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এদের খাদ্য তালিকায় ৫১ শতাংশ পাকা ফল, ৩৮ শতাংশ ডুমুর, ৫ শতাংশ ফুল এবং ৬ শতাংশ পাতাকুঁড়ি রয়েছে। উল্লুকের আবাসস্থল ক্রমশ ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে। গাছ কাঁটা পড়লে এদের টিকে থাকা সম্ভব নয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক উল্লুকের শেষ আশ্রয়স্থল। তাই এ বনের পরিবেশ রা করা জরুরি। লাউয়াছড়ায় স্থাপিত একটি বিলবোর্ডে লেখা আছে-‘উল্লুক পরিবেশের অতি প্রয়োজনীয় প্রাণীদের একটি। মনে রাখবেন মানুষ হিসেবে আপনার যদি পৃথিবীতে টিকে থাকার অধিকার থাকে তাহলে এদেরও সমান অধিকার রয়েছে। এদের সংরণে আপনার সহযোগীতা একান্তভাবে কাম্য।

ছবির ক্যাপশনঃ লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের গাছে বিরল প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী উল্লুক ও শ্রীমঙ্গলের মিনি চিড়িয়াখানায় উল্লুক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.