আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'অদ্ভূত' বোরখা নিয়ে কিছু কথা--১

জীবন গঠনে নিজেস্ব প্রতিক্রিয়ার দায় বেশি, ঘটে যাওয়া ঘটনার ভূমিকা সামান্য।

কালকের পোস্টটা করার পরে দেখলাম বোরখা নিয়ে বেশ কয়েকটা পোস্ট পড়েছে। সবই পুরুষ ব্লগারদের কল্যানে। একদিকে পুরুষ আলেমদের জ্বালায় বাঁচা যায় না, অন্য দিকে বোরখা অপছন্দ করা পুরুষ। সবারই মেয়েদের পোশাক নিয়ে বড় মাথা ব্যাথা! বোরখা পরো, বোরখা পরতে পারবা না--সবাই তাহারাই বলে দেন।

আমরা আর কি করিব, মাথা নিচু করিয়া শুনিয়া যাই, মানিয়া লই। পৃথিবীর বেশির ভাগ নামকরা ফ্যাশন ডিজাইনার পুরুষ--জানেন তো? মেয়েদের পোশাক নিয়ে পুরুষদের যত মাতামাতি, কই, পুরুষদের পোশাক নিয়ে তো মেয়েদের এত মাতামাতি করতে দেখি না! ভেবে দেখলাম, ওই 'মেইল শ্যভিনিস্টিক' মোল্লারা দাগের উল্টা দিকে থাকলেই অন্য রকম হতো। বোরখা পড়ার কারণে মেয়েদের তিরষ্কার করে জ্বালিয়ে মারতো! পুরুষদের থেকেই বোরখা পরার কারণে মেয়েদের কটাক্ষ করা, আবার বোরখা না পরার কারনে মেয়েদের কটাক্ষ করা--দু'টো রোগই মেয়েদের পেয়ে বসে! মেয়েদের মুখে ওসব শুনলে সবচেয়ে কষ্ট হয়! আমার সবচেয়ে প্রিয় মামার (মানুষ হিসেবে খুবই ভালো, লিখে দিতে পারি)বউ পর্দানশীল। মামা খুব অ্যাডভেঞ্চারাস মানুষ, পৃথিবীর এখানে সেখানে ঘুরেছেন চাকরির প্রয়োজনে। বাসা ভর্তি হুমায়ূন, সুনীল আর রবি ঠাকুরের বই।

মামীর পর্দা করাটা প্রথম প্রথম কিছুতেই মেনে নিতে পারতো না। জোর কত আর করা যায়, ইমোশনাল ব্ল্যাক মেইলিং করতো অনেক। যেমন মটর সাইকেলে করে বন্ধুর বাসায় যাচ্ছে। মাঝ পথে থামিয়ে হুমকি--বোরখা না খুললে নিয়ে যাব না। মামী নির্বিকার--আচ্ছা, বাসায় চল তাইলে।

অনেকগুলো বছর হয়ে গিয়েছে, এখন দম্পত্তিটাকে দেখলেই ভালো লাগে। মামী পর্দা ছাড়ে নি। তবে সংসারটা ওদের আসলেই দারুন। সে যাক গে, যা বলছিলাম--শুধু এই মামাতেই না, আমার আত্মীয় পুরুষ/নারী বেশির ভাগের মধ্যই বোরখা সংক্রান্ত এলার্জি খুব বেশি। তাই সব ঢাকা বোরখা নিয়ে কটাক্ষ এই প্রথম শুনি নি।

ভাবলাম, নারীর পোশাক নিয়ে মাথা ব্যাথা করা পুরুষদের এত লেখার সুযোগ না দিয়ে নিজেই ম্যাগা সিরিজ নামিয়ে ফেলি। (চলছে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।