সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...
সৌন্দর্যের লীলাভূমি না মৃত্যুকূপ!মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে এপর্যন্ত ২০-২২ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
ঢাকা সাউথইষ্ট ইউনিভার্সিটির চতুর্থ বর্ষের ১২ জন ছাত্র ২৫ মে বিকেল ৩টায় মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে এসে পৌঁছে। তারুণ্যের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে সাড়ে ৩টায় তারা সবাই নেমে পড়ে জলপ্রপাতে। সাঁতার কাটা, লাফালাফি, ঝাঁপাঝাঁপির একপর্যায়ে জলপ্রপাতের ঘহßর্ণির টানে আনিসুর রহমানসহ (২৩) ৩ জন তলিয়ে যেতে থাকে। অপর দু’জন কোনোরকমে উঠে আসতে পারলেও আনিসুর রহমান আর উঠে আসতে পারেনি।
পরেরদিন সকাল সাড়ে ৮টায় ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে আনিসের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। জলপ্রপাতের সৌন্দর্য আর একটু আনন্দ উপভোগ করতে আসা ছাত্রদের লাশ নিয়ে ফিরে আসতে হয় বিষাদিত হয়ে।
আর এভাবেই প্রতিবছর বেড়াতে আসা পর্যটকদের মধ্যে এক বা একাধিক জলপ্রপাতে পড়ে মারা যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত ২০-২২ জন মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে পড়ে মারা গেছেন বলে স্থানীয় এলাকাবাসী ও বনবিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এদের অধিকাংশই ১০ থেকে ২৫ বছরের স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটির ছাত্র।
বনবিভাগ ও এলাকাবাসী জানান, ঢাকা চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ইউনিভার্সিটি ও সকুল-কলেজের ছাত্র ছাত্রীসহ তরুণ পর্যটকরা জলপ্রপাতের টানে ছুটে আসেন মৌলভীবাজারের মাধবকুন্ডে। জলপ্রপাতে এসে তারুণ্যের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে নিজেদের হারিয়ে ফেলেন।
পর্যটকরা মাধবকুন্ডের গভীরতার বিপজ্জনক দিক সর্ম্পকে সচেতন না হয়েই পানিতে নেমে লাফঝাঁপ বা সাঁতার কাটতে থাকেন। তরুণ-তরুণীরা গোসল করতে পানিতে নেমে বিপদসীমা অতিত্ক্রম করে জলপ্রপাতের গভীর গর্তে চলে যান। এ সময় কেউ কেউ ফিরে এলেও অনেকেই গর্তের ভেতরে পাথরের খাঁজে আটকে পড়েন এবং এর শেষ পরিণতি হিসেবে নিশ্চিত মৃত্যু।
এছাড়া মাধবকুন্ডের ২০০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে পা পিছলে পড়ে গিয়ে পর্যটকরা মৃত্যুবরণ করছেন।
তরুণ পর্যটক আবু নাঈম, সাইফুল ইসলাম ও নাজমুল শামস বলেন, গাইড নিয়োগ ও বিপদ সীমানা চিহিßত করে নিরাপত্তা বেষ্টনী দেওয়া হলে এ দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। এদিকে পাথারিয়ার লোকজন জানান, মাধবকন্ড জলপ্রপাতটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য শুধু দেখার জন্য; এখানে গোসল কিংবা বিপজ্জনক ২০০ ফুট উপরে উঠলে দুর্ঘটনা ঘটবেই। কৃর্তপরে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
পাথারিয়া এলাকার লোকজন জানান, ২০০২ সালে সিলেট শাহজালাল ইউনিভার্সিটির দুই ছাত্র মাধবকুন্ডের উঁচু পাহাড়ের ওপর থেকে পড়ে মারা যান।
এছাড়া ২০০৪ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত আড়াই বছরে ৫ ছাত্রসহ ৭ ব্যক্তি মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে পড়ে মারা গেছেন।
এলাকাবাসী জানান, মাধবকুন্ড ইকোপার্কের দেখাশোনা করে একটি ইজারা গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান। এর দেখাশোনার দায়িত্ব বনবিভাগের হাতে নেওয়া উচিত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।