দুই.
স্কুলের পাশেই ছোট্ট মন্দির। তার সাথে লাগোয়া অতি পুরোনো বটবৃক্ষ। শিকড়গুলো কত বড় বড় হয়ে গেছে। বটের গুড়িতে একটা ব্ল্যাকবোর্ড টাঙ্গানো থাকতো।
নামতা শেখানো হতো সুর করে।
আমাদের মাঝ থেকে কেউ একজন গিয়ে লিখতো, সুর করে বলতো, "এক এককে এক, দুই দুগুণে চার, তিন দুগুণে ছয়..." আমরা গলা মেলাতাম। অদূরে নদীর জলে সেই সুর প্রতিধবনিত হয়ে ফিরে আসতো।
আমার সবচাইতে ভাব ছিলো ছায়ার সাথে। ছায়ারাণী মন্ডল। বয়সে আমার চাইতে একটু বড়ই হবে।
এক সাথে পড়লেও দিদি দিদি ভাব নিয়ে আদর করতো। প্রতিদিনই আমার জন্য নিয়ে আসতো নাড়ু, পেয়ারা; কিংবা কুল। কত হরেক রঙের ফুল ছিলো স্কুলের আশেপাশে যত্ন করে সাজানো বাগানগুলোতে; কিংবা অযত্নে বেড়ে ওঠা ঝোঁপঝাড়ে। ছায়াকে ফুল তুলে দিতাম। ওর বড় চুলের বেণীতে ফুলগুলো তারার মত জ্বলজ্বল করতো।
আমি ছায়ার প্রেমে পড়ে যাই। এমন চমত্কার মেয়েটিকে ছাড়া আর কিছু কল্পনা করতে পারি না। কিন্তু বিধি বাম। ক্লাস ওয়ান শেষে আমাকে স্কুল পরিবর্তন করতে হয়। ছায়া থাকে পুরোনো স্কুলেই।
ছায়ার সাথে আবার দেখা হয় অনেক বছর পরে। আমি তখন ক্লাস নাইনে। ছায়া এক বছর লস করে এইটে। আমি চিনতে পারি। অথচ কথা হয় না আর।
সময়ের দেয়ালটা ডিঙোনোর প্রয়োজন এতদিনে একেবারেই ফুরিয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।