আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবহেলা আর অনাদরে বেঁচে আছে তারা (চা শিল্পাঞ্চল সিলেট পর্ব-২)

সময়... অনাদি... হতে... অনন্তের... পথে...

যাদের কষ্টে আয় হয় বৈদেশিক মুদ্রা তারা আজ অবহেলা আর অনাদরে বেঁচে আছে। বিশুদ্ধ পানিও তাদের ভাগ্যে জুটেনা। তাদের সমস্যা আজ পদে পদে। প্রতিনিয়ত বাগান কর্মকর্তাদের হাতে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে বাগানের প্রাণ চা জনগোষ্ঠীরা। বিদেশে চা রফতানি করে বাগান মালিক ও সরকার প্রতিবছর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করলেও যারা দিন রাত পরিশ্রম করে চা শিল্প টিকিয়ে রাখছে সেসব শ্রমিকদের খবর কেউ রাখেনা।

তাদের পরনে ভালো কাপড় নেই। বসবাস উপযোগী ঘর নেই। খাবার জন্য দেয়া হয় নিম্নমানের আটা। শ্রমিক সন্তানদের বিনোধনের জন্য কোন ব্যবস্থা নেই। কোন বাগানেই বিশুদ্ধ খাবার পানির টিউবওয়েল নেই।

বিশুদ্ধ পানির অভাবে খাওয়ার জন্য পানি সংগ্রহ করতে হয় ক্থপ থেকে। ফলে ক্থপ থেকে পানি তুলে গোসল ও খাওয়া-দাওয়া করে তৃষ্ণা মেটাতে হয় চা জনগোষ্ঠীদের। আর এক্থপ থেকে পানি পান করে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। এভাবেই অবহেলা ও অনাদরে জীবন কাটাতে হচ্ছে চা শ্রমিক জনগোষ্ঠির। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কাজ করে হাজিরা পায় ৩০টাকা।

সাপ্তাহের রোববার বাগানের কাজ থাকে বন্ধ। সে হিসাবে চা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক আয় ১৮০ টাকা। দেশের কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানে এত নিম্ন বেতনের শ্রমিক আছে বলে জানা নেই। চা শ্রমিকরা আয়ের বিকল্প রাস্তা না পেযে গরু পালন ও বাগানের পতিত জমিতে চাষাবাদ করতো। কিন্তু বর্তমানে কোম্পানীর বাঁধা বিপত্তির ফলে সেই সুযোগ থেকে তারা হচ্ছে বঞ্চিত।

কোন শ্রমিকের গরু অন্যত্র ঘাস খেতে প্রবেশ করলে ওই গরুকে যেতে হয় বাগানের পশু কারাগারে। সেখান থেকে ছাড়িয়ে আনতে জরিমানা গুনতে হয় ৫০ থেকে ১০০ টাকা। এর প্রতিবাদ করার সাহস নেই শ্রমিকদের। প্রতিবাদ করলে বাগানের কাজ বন্ধ করে দেয় বাগান কর্তৃপ। ফলে নিরবে সহ্য করতে হয় সংশিষ্টদের নির্যাতন।

তাছাড়া চা শ্রমিকদের রয়েছে জ্বালানী সংকট। চা বাগানের জঙ্গল কেটে পরিষ্ড়্গার করে দিচ্ছে কর্তৃপ। কিন্তু গাছের ডালপালা আনার অধিকার পর্যন্ত চা শ্রমিকদের নেই। শুধু বাগান কর্তৃপরে উপর নির্ভর করেই তাদের দাসত্বের শৃঙ্খলে বেঁছে থাকতে হচ্ছে। যেসব শ্রমিকদের দখলে কৃষি জমি রয়েছে তাদেরকে দেওয়া হয়না সাপ্তাহিক রেশন।

যাদের জমি নেই তারা রেশন হিসাবে সাপ্তাহে মাত্র সাড়ে তিন কেজি আটা পায়। যা খাওয়ার অনুপযোগী। রেশনের আটা খেয়ে জীবন বাঁচানো চেষ্টা করলেও আক্রান্ত হচ্ছে নানা রোগ ব্যাধিতে। এত সমস্যার পরও তাদের আজ সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছে বিশুদ্ধ পানি সংকট। তাদের অসনীয় দুঃখ দেখার এখন কেউ নেই।

চলবে...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।