একমাত্র ব্যানমুক্ত ব্লগ!
জীবে প্রেম করে যেইজন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর! ছোটবেলায় শেখা এই আপ্তবাক্য স্বরণ করে উত্তপ্ত হওয়ার হেতু - নারী। নারী এক প্রকার জীব- জীবনও বটে! জন্মেছিলাম অজ পাড়াগাঁয়ে। গাঁয়ের জীবদের গায়ে গা লাগিয়ে বড় হওয়ার কারনেই অতি অল্প বয়সে ইঁচড়ে পাকতে কষ্ট হয়নি একটুও! গায়ে গা লাগাতে গিয়ে লাগালাগি ব্যাপারটাও বুঝতে শিখে গেছি অতি অল্প বয়সেই!
পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াকালীন যে জীবটির প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম তার নাম ছিল "শামীম আরা সুমি"। নামের কারনেই হোক কিমবা তার সাথে আমার 6 ইঞ্চি উচ্চতার পার্থক্যের কারনেই হোক- তাকে সবসময়ই "স্বামী মারা" টাইপ মনে হত! ঈশ্বর সেবা না করলে শেষে অধর্ম হয়- সেই ভয়ে তার প্রতি একধরনের কোমল অনুভুতি জন্মায়! সে দেখতে যেমন সুন্দরী- তেমনি দানশীল! ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবাই তার দানশীলতার সাথে পরিচিত। অতি অল্পদিনেই তার হাতের এবং ক্লাসের সবার পিঠের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
ক্লাসের সবাই তার এই পৃষ্ঠপোষকতার আতিশয্যে অতিশয় তুষ্ট থাকতো! এই পৃষ্ঠপোষকতার ভয়েই দুর থেকে ঈশ্বর সেবা করেই সুখী হওয়ার ব্রত নিয়েছিলাম।
গোল বাধলো একদিন! কিছুদিন বাদেই বৃত্তি পরীক্ষা-তার জন্য স্কুলেও অতিরিক্ত পৃষ্ঠপোষকতার বন্দোবস্ত করা হয়েছে - সন্ধ্যা থেকে রাত অব্দি! আমি ও সুমি দুজনেই আছি সেখানে। হাশেম স্যার আমাদের পড়ান- আমরা একেকজন একেকদিন বাড়ি থেকে তার জন্য খানা নিয়ে আসি। মধ্যবিরতিতে হাশেম স্যার রাতের খানা সারেন- আমরাও যার যার প্রয়োজনে পায়খানা সারি!
রাতে আমি ও এনাম একসাথে বাড়ি ফিরি। পাড়াতুতো ভাই আমরা- ক্লাসতুতো ভাইও বলা চলে! হরিহর আত্মার মতোই চলাফেরা করি।
বৃত্তি কোচিং শেষে ফেরার পথে জনমানবহীন পথে অব্যক্ত কামনার ফোয়ারা ছুটাই- শামীম আরার ভবিষ্যত স্বামীকে গিলে খাই!
ঘটনার দিন আমি ও এনাম বাড়ি ফিরছি। এনাম উচু স্বরে গল্প করছে। স্বামী মারা বেগমের হৃদয় কিভাবে হরণ করবে তার গল্প! ফ্যান্টাসীর চোটে চোখে-মুখে পুলকিত ভাবের ফুলকি! ঈশ্বর সেবাই পরম ব্রত। প্রয়োজনে স্বামী মারার স্বামী হবে- মরবে!
জীব মানে তো দেহ! প্রাণী কিমবা উদ্ভিদ- যাইহোক না কেন জীবন থাকলেই তাকে জীব বলা চলে! আর জীবজগতের অন্তর্ভুক্ত হলে দেহ থাকবেই! গল্পও তাই ধীরে ধীরে ঈশ্বর থেকে সরে গিয়ে দেহের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। এমন সময় হা...রে....রে....রে- পেছন থেকে উঠল কে ডাক ছেড়ে! কণ্ঠ শুনে বুঝলাম হেডু! হেড মাষ্টারমশাই আমাদের গ্রামতুতো স্যার! এমতাবস্থায় যা করা কর্তব্য- দিগগজ পন্ডিতের ন্যায় রাস্তা ছেড়ে ক্ষেতের মাঝ দিয়ে শর্টকাট মারার আশায় ছুট দিলাম।
চাঁদের আলো ছিলনা বটে, তবে আলের গায়ে ঠোক্কর খেতে খেতে নাজেহাল হলাম।
পরের দিন স্কুলে যাওয়ার পর ডাক পড়লো হেডমাষ্টার মশাই এর ঘরে! হেডু জিজ্ঞাসা করলো, "কাল রাতে তুই আর এনাম শামীমাকে নিয়ে কি বলছিলি?" আমি বিপদ টের পেয়ে মীরজাফরের ভুমিকায় অবতীর্ন হলাম! অম্ল্লানবদনে স্বীকার করলাম সবকিছু। ভাবখানা এমন যেন আমার চাইতে ভদ্র ছেলে ভু-ভারতে মিলবে না - যত দোষ সব এনামের! ও শামীমাকে নিয়ে ঠোকাঠুকি খেলতে চেয়েছে।
পরবর্তি ঘটনা খুবই সংক্ষিপ্ত! হেডু স্ব-উদ্যোগে 4/5 খানা জালি বেত একত্র করে এনামকে এমন পৃষ্ঠপোষকতা দিলেন যে বেচারা সংজ্ঞাহীন হয়ে গেল। মার খেয়ে বেচারা পরবর্তি তিনদিন স্কুলে অনুপস্থিত রইল।
এই তিনদিনে আমি ভুলেও এনামের বাড়ির ত্রি-সীমানা মাড়াইনি। চতুর্থ দিন বেচারা স্কুলে এসেই সর্বপ্রথম আমাকে খুঁজে বের করলো- তারপর আমার উরুসন্ধিতে যে পিন্ডিদুটো আছে সেগুলো চটকে দিল। ফলাফল: এবার আমি নিজেই সংজ্ঞাহীন!
---------
[গাঢ়]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।