আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আহারে! ওকি আর বোঝে কতখিদে পেলেই তবে...

[অন্যর দোষ না খুঁজে আগে যদি সবাই নজের দোষটা খুঁজত তাহলে বোধহয় সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত]............... [পথের শেষ নেই, আমার শেষ আছে, তাইত দ্বন্দ্ব] http://mamunma.blogspot.com/

'দেখেছো মানুষের কোন কান্ডজ্ঞান আছে। সামনেই হাসপাতাল। দুনিয়ার নষ্ট নোংরা খাবারদাবার সব ফেলে রেখেছে রাস্তার ধারেই। এইটা কি সহ্য করা যায় । বিরক্তিকর জ্যাম।

উহ্! কি ভীষণ গরম। দূর। ' প্রচন্ড ঘৃণায় সূতোর মতো সরু ভ্রু দুটো কুচকে বিরক্তি নিয়ে কথা গুলো বলছিলেন পয়ত্রিশোর্ধ এক মহিলা। লেটেস্ট মডেলের দামী গাড়ীতে এসির মধ্যে বসে আছেন। গায়ে চর্বির অত্যাধিক্য ই বলে দেয় অনেক কিছূ।

আর সাজ সে তো সুনিপুণ। তবুও বয়স কি আর লুকানো যায়। জ্যামে আটকে আছে গাড়ী। ভর দুপুর । মহিলার পাশে লালস্কুল ড্রেসে নয় দশ বছরের একটি মেয়ে।

দুধে আলতা মেশালে যে রঙ হয় ঠিক তেমন তার গায়ের রঙ। চেহারাটাও খুব মায়া মায়া। সরল চিকন কন্ঠে বলল,' আম হাঙ্গরী মাম' মহিলার নির্দেশে ড্রাইভার গাড়ীটা সাইড করলো স্ন্যাকসের দোকানটির ধারে ,জ্যামের মধ্যেই বেশ কৌশল খাটিয়ে। মহিলা চিপস আর কোল্ড ড্রিংকস আনতে বললেন। কিন্তু দরজা খুলতেই ঠান্ডা খাঁচায় যেন গরম আঁচ ছুড়ে মারল তেজী দুপুরীয় সূর্য।

বাতাসও কম যায়না। ফুটপাতের ধারে পড়ে থাকা নষ্ট পঁচা খাবার গুলোর থেকে ক্রমাগত মুক্ত হওয়া দূর্গন্ধগুলো গাড়ীর আয়েসের মাঝে পাঠিয়ে দিল বিনা পারমিশনেই। মহিলা চিৎকার করে উঠলেন। 'গাড়ী আরেকটু সামনে রাখা গেলনা। ইডিয়েট' ড্রাইভার ততক্ষণে দরজা ভিড়িয়ে দোকানের দিকে পা চালিয়েছে।

ইংরেজ পুচ্ছধারক বালিকার চোখ চলে গেলো জানালা গলে রাস্তার সেই নষ্ট, বাসী, ময়লা খাবারের দিকে। শিশুসুলভ সরল দৃষ্টি চরম অবাক হয়ে অপলকায় দেখছে একজন মহিলা বসে আছে সেই ময়লা নোংরার উপরেই । সারা গায়েই কালি আর ধূলো। কি ভীষণ নোংরা । তারউপর প্রায় কাপড় হীনই বলা যায়।

কোমরের নিচে আর বুকের উপর যে দু টুকরো ছেড়া কাপড় আছে তা থাকা না থাকা একই । এসির বাতাসে স্বচ্ছ ত্বকের বালিকাটার চোখ আরও অবাক হতে থাকে। ময়লা মাখা সেই মহিলাটা হাপুসহুপুস করে গিলছে সেই সব আবর্জনা। 'মাম , ওয়াই সি ইস ইটিং দিস রাবিশ? ইস সি ইজ ট্রায়িং টু মেক এনি ওয়ার্ল্ড রেকর্ড? মাম, আমি শুনেচি ইন স্টেটস দে ডু সাচ ফর রেকর্ড এন্ড অলসো ফর হিউজ মানি টুহ। ' শিশুটি বোঝেইনা।

মা তাকাতে মানা করে। বলে , ওর ইচ্ছে হয়েছে তাই ...সি ইজ ম্যাড বেবী। 'ওরা না থাকলে কারও খাবার নষ্ট করার ক্ষমতা কুক্ষিগত হবে। ' মনে মনে ভাবে কিন্তুি মেয়েকে বলা হয়না। ' সে ওটাই খেতে ভালবাসে ...' ' দ্যান , মাম আমি ওকে আওয়ার হোমে নিয়হে যাহব।

আমিতো অনেক অনেক ফুডস নষ্ট করি। সি উইল ইট দোস। ' ' কিন্তু দেখছো না কি ও কি নোংরা আর বিশ্রী, ওর গায়ে ময়লা। ওকে বসাবে কোথায়। বেবী, এই পথই ওদের হোম ।

' 'ওয়াট!, দ্যা ডোন্ট হ্যাভ এ্যানি হাইস! হাউ ইন্টারেসটিং। ' ' হা মা, ওরা ম্যাড তো তাই ঘরে থাকতে পারেনা। পৃথিবীর এই নিয়ম। কারও থাকেনা বলেই কারও থাকে। কেউ সুস্থ বলেই কেউ পাগল।

যার যার টা নিয়েই তাকে চলতে হয়। ডোন্ট গিভ অ্যানি ফারদার লুক দেয়ার । ' ' ওকে মাম, বাট ওকে একটা ক্যান দিতে চাহই। সি ডোন্ট হ্যাভ এ্যানি ড্রিংকস! ' ড্রাইভারকে গাড়ী চালাতে বললেন বালিকার মা। 'মাম, লেট মি গিভ হার ওয়ান ক্যান, প্লিজ।

' উহ্! যন্ত্রনা করছো কেনো? দেখছোনা ও পঁচা খাবার খাচ্ছে। ফ্রেশ কোক ও খেতে পারেনা। ...' বালিকা থেমে যায়। সিগন্যাল টা ছেড়েছে। জ্যামটা একটু শিথিল।

পাশ দিয়ে চলে যাওয়া রিকশা গুলোতে বসে থাকা ভদ্রলোকদের দৃষ্টি চলে যায় প্রায় সবারই নষ্ট খাদ্য খাদক মহিলার পানে। বেশীর ভাগ দৃষ্টিতেই বিরক্তির উদ্রেগ। নারী আর মেয়েগুলোর সরু ভ্রু তে পড়ে ভাঁজ। পুরুষগুলো ও দৃষ্টি আবার এরই ফাঁকে আড়চোখে একবার খোঁজে দুটুকরো কাপড়রে ফাঁকগলে আবৃত কিঞ্চিৎ অদেখায় অন্যকিছুও। এসি গাড়ীটি অনেকদূর এগিয়ে যায়।

চিপস মুখে দিতে দিতে বালিকাটি ভাবে বাসায় ওর নষ্ট করা খাবারগুলো সব এখানে ওই পাগলীর জন্যে ফেলে যাবে কাল। কিন্তু মাকে বললে বকা দেবেন ভেবে আর বলার সাহস হয়না তার কোমল হৃদয়ের।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।