আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার বোনেরা।

মানবিক, যৌক্তিক আর অযৌক্তিক। সোজা কথা আরেকটা মানুষ। দশ জনের ভীরে ডুবে থাকার প্রানান্ত চেষ্টায় থাকা মানুষ। "... ভাই হিসেবে আমি ভয়ানক স্বার্থপর টাইপের, আমার আপন তিন বোন আর কাছের কাজিন রা মিলিয়ে বোনের সংখ্যা লাকি সেভেন... সাত ভাই চম্পা হলে, আমি সাত বোন কাঁঠাল টাইপ অবস্থা। এদের কাউরেই আমি কখনো কিছু দিতে পারি নাই, কিম্বা সামনা সামনি মধু মাখা ব্যাবহার ও কেউ পায় নাই।

ওইটা আমি দিতে জানিও না... ফাই- ফরমাশ খাটানো ছাড়া ওদের গুরুত্ব যে আছে সেটা বুঝতেই আমার অনেক দিন লেগে গেছে... যাই হোক, মোদ্দা কথা আমার অনেক বোন, এবং আমি নিজের চিন্তা বাদে আজীবন তাদের নিয়ে কোন চিন্তাই করি নাই। কখনো মনেই হয় নাই যে ওদের পৃথিবীটা কত বন্ধুর, কত অস্থির আর ভয়ানক। ইদানিং খুব ভয় লাগে, আমি অফিস থেকে এসে খবরের কাগজ হাতে নিতে পারিনা, কিম্বা টিভি ছেড়ে খবরের কোটেশন গুলোর দিকে তাকাই না... ফেবুতে বসলেও ভয় হয় এই বুঝি আরেকটা ভয়ানক কিছু চোখে পড়বে। দেশে দেশে কি এক কুৎসিত উৎসব শুরু হয়েছে। কি ইশকুল বাস, কি হাসপাতাল, কি নিজ ঘর... আমাদের মেয়েরা কোথাও নিরাপদ না।

আম্মা আর বোনদের নিয়ে বেড়াতে যাচ্ছিলাম গত সপ্তাহে, রাস্তায় খালি এপাশ, ওপাশ করলাম অনেকক্ষণ। পেছনে চোখ রেখে উল্টো হাঁটলাম। ওরা বাইরে গেলেই যে আমার খালি ভয় লাগে। দুনিয়ার সবাইরে তো আর সরাতে পারিনা, তাই ওদের চলার রাস্তা সরু করে দেই। আমার পিচ্চি বোনটারে উঠোনে ক্রিকেট খেলতে নিয়ে যেতাম আমি, ভয়ানক খেলত ও, ভাবতো ক্রিকেট নিয়ে।

আমার বন্ধুরাও সিরিয়াসলি ওকে ক্রিকেট খেলার কথা বলতো। আম্মা, আপা আমারে এসবের জন্য দিতো গালি আর আমি তখন প্রগতির কথা বলতাম। এখন বুঝি, মা- আপার দুনিয়াটা আমার মতো বস্তাবন্দি না, ওদের দুনিয়া বাস্তবের গরলে ঠাসা, সত্য কাঠিন্যে ভরপুর। এখন ওর হাতে ঘরেও যদি ব্যাট দেখি, কপট রাগ দেখাই। আমি/ আমরা এখন পর্যন্ত ব্যার্থ ভাই, কিন্তু এক- দু যুগ পরে যেন ব্যার্থ বাবা না হই।

আমাদের মেয়েরা হাঁটবে বিশাল রাস্তায়, একাকি পথে নির্ভীক। তাদের বাবা- ভাইয়েরা অফিস থেকে বসে দু মিনিট পর পর খোঁজ নেবেনা চিন্তায়। মায়েরা থাকবেন ব্যাস্ত নিজ ভুমে, ভয়ার্ত নন, সাহসী হয়ে নেবেন সাহসী সিদ্ধান্ত। বেশী কিছু না, আমাদের মেয়েদের ব্যাগে ব্যাগে সবকিছুর সাথে একটা বিশালাকার ছোরা বহনের অনুমতি দেয়া হোক, রাষ্ট্র তো বিচার করতে পারছেনা, ওরা সাথে সাথেই কিছু করুক। ওরা বাঁচুক, বাঁচার মতো।

মারুক, মারার মতো। আমার বোনেরা মানুষ হয়ে বাঁচুক, শুধু মেয়ে হয়ে নয়। খেলার মাঠে খেলতে আসুক, শুধু মায়াবি চোখ গুলান দিয়ে পুরুষের উল্লসিত চেহারা দেখতে নয়। " ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।