বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 43তম সমাবর্তন নিয়ে আবারো অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষকদের বর্জনের ঘোষণা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় কতর্ৃপক্ষ এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এখনো অনড়। এই সমাবর্তনে ড. ইউনূসকে প্রধান বক্তা করা এবং তাকে 'ডক্টর অব লজ' ডিগ্রি দেওয়া নিয়ে ছাত্র-শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিপরীতমুখী অবস্থান নেওয়ায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। গত 18 ফেব্রচ্ছারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় ড. ইউনূসকে সমাবর্তনে আনা নিয়ে তুমুল বিতর্ক হয়।
কিন' এরপরও উপাচার্য ড. ইউনূসকে নিয়ে সমাবর্তন করার ব্যাপারে অনড় থাকেন। আগামী 28 ফেব্রচ্ছারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এই সমাবর্তন হওয়ার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, সাধারণ ছাত্র/ছাত্রী, ছাত্রলীগের নেতৃত্বে গঠিত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, ছাত্রদল এবং অধিকাংশ শিক্ষক এখন ড. ইউনূসকে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে না আনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এই সমাবর্তন গত বছর 24 ডিসেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে তখন বিশ্ববিদ্যালয় কতর্ৃপক্ষ তা স্থগিত করতে বাধ্য হন। তবে সেবার সবাই ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক 'ডক্টর অব লজ' ডিগ্রি দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছিলেন।
কিন' বর্তমানে তিনি নানাভাবে বিতর্কিত হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতর্ৃপক্ষের তাকে সমাবর্তনে না আনাই ভালো হবে বলে ছাত্র-শিক্ষকরা মনে করেন।
ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার শহীদ আসাদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সভায় বক্তারা একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান ড. ইউনূসকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 43তম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা না করার আহ্বান জানিয়েছেন। সভায় বক্তারা বলেন, অতীতে সকল সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে এমন ব্যক্তিরা বক্তব্য রেখেছেন যারা দেশের সকল মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য, সম্মানিত ও দলনিরপেক্ষ ছিলেন। কিন' ড. ইউনূস রাজনৈতিক দল গঠন করে নিজেই নিজেকে সমাবর্তন বক্তা হওয়ার অযোগ্য প্রমাণ করেছেন। ইতিমধ্যেই তিনি দেশের সৎ, নীতিবান, আদর্শবাদী ও সংগ্রামী ত্যাগী হাজার হাজার নেতাকমর্ীর বির"দ্ধে কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য প্রদান করে বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন।
বক্তারা বলেন, ড. ইউনূসের গ্রামীণ ব্যাংক গ্রামের অসহায় ও দরিদ্র নারীদের কাছ থেকে সার্ভিস চার্জের নামে শতকরা 36 ভাগ সুদ আদায় এবং গ্রামীণফোন দেশের গ্রামের মানুষের কাছে ফোন পেঁৗছে দেওয়ার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। অমর একুশে ফেব্রচ্ছারিতে দেশের আপামর জনসাধারণ যখন শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন তখন তিনি সেখানে না গিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, তিনি ভাষা আন্দোলনের বিরোধী। বক্তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ড. ইউনূসের উপস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেবেন না বলে ঘোষণা করেন। সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক ও ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিষদের নেতা শরিফুল কবির স্বপন, আলী হাসান তর"ণ, সাজ্জাদ হোসেন, রফিকুল ইসলাম সুজন, মুক্তার হোসেন নাহিদ, জাকিনুর রহমান পিকুল প্রমুখ।
জানা গেছে, ছাত্রদলও সমাবর্তনে ড. ইউনূসকে সমাবর্তন বক্তা না করার পক্ষে।
এ সম্পর্কে ছাত্রদল ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ বলেন, গত 24 ডিসেম্বরের সমাবর্তন এবং বর্তমান সমাবর্তনের মধ্যে অনেক পার্থক্য। ড. ইউনূস নোবেল পাওয়ায় আমরাও খুশি হয়েছিলাম। কিন' বর্তমানে তিনি নিজেই দল গঠন করার মধ্য দিয়ে বিতর্কিত হয়ে পড়েছেন। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বিতর্কিত ব্যক্তিকে সম্মানসূচক ডিগ্রি দিতে পারে না, ছাত্রদলও তাকে ডিগ্রি দেওয়া সমর্থন করবে না।
জানা গেছে, ছাত্র-শিক্ষকদের মতের বির"দ্ধে গিয়ে যদি বিশ্ববিদ্যালয় কতর্ৃপক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগামী 43তম সমাবর্তনে ড. ইউনূসকে আনেন তাহলে সমাবর্তন অনুষ্ঠান থেকে শিক্ষাথর্ীদের একটা বিরাট অংশ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করে চলে আসতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষাথর্ীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের এই অবস্থানে ড. ইউনূসের উচিত সমাবর্তনে না আসার ঘোষণা দেওয়া।
(ভোরের কাগজ)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।