বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় সংস্কৃতির জন্য অপমানজনক কোনকিছু এই ব্লগে লেখা যাবে না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস দীর্ঘদিন ধরিয়াই জামায়াত-শিবিরের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত। প্রগতিশীল শিক্ষক ও ছাত্রসমাজ সেইখানে নিয়মিত হামলা ও হুমকির শিকার। রবিবার উহাই ঘটিয়াছে। ঐদিন দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন এবং ছাত্রফ্রন্টের নেতাকমর্ী ও সাংবাদিকদের উপর দফায় দফায় হামলা চালাইয়াছে জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত ছাত্রশিবিরের সশস্ত্র ক্যাডাররা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদশর্ীদের বরাত দিয়া জানা গিয়াছে, ক্যাম্পাসে উপস্থিতি লইয়া ছাত্রলীগ কমর্ী সুমনের সঙ্গে শিবিরের এক কমর্ীর কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। উহারই এক পর্যায়ে শিবির কমর্ীরা চারিদিক হইতে জড়ো হইয়া সুমনকে বেধড়ক মারধর করে। তাহারা হল, ক্যাফেটেরিয়াসহ যেইখানেই ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীদের পাইয়াছে সেইখানেই লাঠিসোটা, দা, কিরিচ, লোহার রড ও অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র লইয়া হামলা চালাইয়াছে। ঐ হামলা হইতে বাঁচিতে ছাত্রলীগ নেতাকমর্ীরা প্রক্টর অফিসে গিয়া আশ্রয় লইলে সেইখানেও হামলা চালায় শিবির কমর্ীরা। নৃশংস হামলার প্রতিবাদ জানাইলে শিবির কমর্ীরা ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্টসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকমর্ী ও সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের উপর হামলা চালায়।
সাধারণ ছাত্রছাত্রীসহ অর্ধশতাধিক নেতাকমর্ী আহত হইয়াছে। একটি জাতীয় দৈনিকের ফটোসাংবাদিক এমরান হোসাইন ছবি তুলিতে গেলে তাহার উপরও হামলা চালানো হয়। মারাত্দক আহত নেতাকমর্ী বহনকারী তিনটি অ্যাম্বুলেন্সেও হামলা চালাইয়া ব্যাপক ভাংচুর করে শিবির ক্যাডাররা। হামলায় আহত 20 জন নেতাকমর্ীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হইয়াছে। ছাত্র শিবিরের হামলার প্রতিবাদে ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় 1 নম্বর সড়কে ব্যারিকেড দিয়া 10-15টি গাড়ি ভাংচুর করিলে অপরাহ্ন হইতে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রামে যান চলাচল বন্ধ হইয়া যায়।
রাতের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হইয়া আসে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দ তাহাদের নেতাকমর্ীদের উপর শিবিরের হামলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টরকে দায়ী করিয়া তাহাদের পদত্যাগ দাবি করিয়াছে। চট্টগ্রাম সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী শিবির ক্যাডারদের হিংসাত্দক হামলার নিন্দা জানাইয়া ঘটনার সহিত জড়িতদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস-ির দাবি জানাইয়াছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে জামায়াত-শিবিরের হামলা আদৌ নূতন নহে। চট্টগ্রামের ন্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ও জামায়াত-শিবিরের শক্তিশালী ঘাঁটি বলিয়া পরিচিত।
একশ্রেণীর শিক্ষকের রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি, কোন্দল এবং ব্যক্তিগত রেষারেষিও দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ কলুষিত করিয়াছে। সর্বোপরি প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদী শক্তি ও স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবির চক্র দীর্ঘদিন হইতে এই স্থানে শক্ত ঘাঁটি গাড়িয়া বসিয়া আছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী শিক্ষকবৃন্দ ও ছাত্রসমাজ সেইখানে বরাবরই কোণঠাসা। উহারই জের ধরিয়া কোন প্রগতিশীল ছাত্রশক্তি ক্যাম্পাসে মাথা তুলিয়া কাজ করা দূরে, কথাও বলিতে পারে না। সকল পক্ষের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার অধিকার রক্ষায় প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকার কোন বিকল্প নাই।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও উহা নিশ্চিত হইতেছে না কেন বোধগম্য নহে। ঐ দুরবস্থা হইতে পরিত্রাণ লাভে সকল প্রগতিশীল মহলকে ঐক্যবদ্ধও হইতে হইবে। স্বাধীনতার সপক্ষের সকল শক্তিকে একত্র হইয়া মোকাবেলা করিতে হইবে স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীলদের। সরাসরি অপরাধমূলক তৎপরতায় জড়িত বলিয়া শিবির সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইন-শৃংখলা বাহিনীকেও সক্রিয় হইতে হইবে। যেই কোন মূল্যে শিক্ষাঙ্গনে প্রতিষ্ঠা করিতে হইবে সন্ত্রাসমুক্ত পরিবেশ
::::যুগান্তর::::
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।