একটি পুরুষ হয়ে ওঠার বৃত্তান্ত
কচির নিষ্পাপ মুখ ভেবে ভেবেই মন খুশি হয়ে উঠতো। একদিন বারান্দায় রেলিং এ ভর দিয়ে বসে আছি- আমাদের দোতালার উপর , নিচ তালায় ও বারান্দায় এসে দাড়ালো, কি দেখে কি জানি আমার দিকে তাকিয়ে ওর কি হাসি- সেই পাতা ভর্তি করে লিখি ওর নাম। এবার আর নিজের অজান্তে নয়। কোন এক ঘোরে ওর নাম লিখে যাই। কিন্তু কচিও হারিয়ে গেল সময়ের সাথে সাথে।
একদিন সকালে আমাদের পাড়া ছেড়ে ওরা চলে গেল গুলশান অথবা বনানীর বড়লোক পাড়ায়। এরপর আর কখনও ওকে দেখিনি। সাধারন সৌজন্যসূচক দৈনন্দিন টুকিটাকি দুই একটা কথা বলা ছাড়া আর কোন কথাই হয় নি ওর সাথে। ওদের বাসায় জীবনের প্রথম কোকাকোলা পান করি। এর আগে ফান্টা পর্যন্তই ছিল দৌড়।
কোকাকোলা ছিল বড়দের খাবার অনেকটা যেন মদের মতো নিষিদ্ধ কোন কিছু। কোকাকোলা পান করেই আমি যেন বড় হয়ে যাই।
ঠিক ওই সময়ই আমার সাইকেল চালানো শেখা। সাইকেল চালিয়ে ঘুরে বেড়াতে বেড়াতে রাস্তার দুপাশে রঙীন রঙীন সব মেয়েরা সরে সরে যায়। প্রত্যেকটি দিনই কি উত্তেজনাকর মনে হত।
সাইকেল চালানো নিযে মজার একটা ঘটনা ঘটেছিল। তখনও সাইকেলে পা রাখি নি - স্বপ্নে দেখি আমি মনের আনন্দে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছি। পাড়ার সবাই অবাক বলছে দেখো ??? সাইকেল চালাতে পারে - যাদের মুখ আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম - তার মধ্যে ছিল বনি - বনিকে আমার কখনওই ভাল লাগে নি। কেমন ছেলে ছেলে লাগতো। মেয়েদের কোমল কোমল চেহারাটার বাইরে বনিই প্রথম মেয়ে যাকে ছেলে ছেলে লাগতো।
গাট্টা গোট্টা শরীরের মাংস চামড়াগুলো কেমন শক্ত। এই সাইকেল যুগেই শুরু হয়ে গেছে যৌনতা বিষয়ক গল্প।
নারীদেহের গোপন বর্ণনার মধ্যে আমি কোন উত্তেজনা খুজে পেতাম না। রাত্রির কাছে এর চেয়েও জ্যান্ত বর্ণনা আমার শোনা হয়ে গেছে অনেক আগেই। নারীদেহের খোলা চেহারাটাও আমি চিনি।
ওরা যখন বর্ণনায় মেতে উঠতো তখন রাত্রির খালি গার ছবি মনে পড়তো। কিন্তু তখনও কোন উত্তেজনা টের পেতাম না। আসলে কেন রাত্রির খোলা দেহটা কোন উত্তেজনা তৈরী করে নি সেটা এখন ধরতে পারি তখন সেটা খোজার দরকারও হয় নি। আসলে রাত্রিকে ঠিক মেয়ে হিসেবে ভাবিনি এটা যেমন ঘটেছে তেমনি মেয়েদের নগ্ন ছবি বলতে রাত্রিকেই চিনতাম। এই কারনে নগ্ন মেয়ে মানেই নগ্ন রাত্রি ।
স্বাভাবিক, এবং সাধারন একটি ছবি। আর একটু পরেই মেয়েদের চিনতে শুরু করলাম আর একটি বৈশিষ্ট্য দিয়ে।
সেটি হলো বুক, আরো খোলাশা করে বললে বুকের উচ্চতা। সমতল বুকের রাত্রিকে তাই আমার কাছে ওমন স্বাভাবিক লাগতো, কবিতা আপাকে সেই কারনে অমন গনগনে মনে হত। আরো আট নয় বছর পরে একদিন রাত্রির সাথে দেখা হয়েছিল।
কয়েক বান্ধবীর সাথে রাস্তায় দাড়িয়ে কথা বলছিল। আমি ইন্টারমিডিয়েট শেষ করেছি মাত্র আর সে ডাক্তারী পড়ে। অনেকজন মেয়ে দেখে আম রাত্রির সাথে দেখা কথা বলে চলে যাচ্ছি, রাত্রি আমার হাতটা খপ করে করে ধরে ফেললো - কিরে তুই আমায় না চিনে চলে যাচ্ছিস। মুখ তুলে দেখি -রাত্রির হাসি। এই হাসিতে মনে হলো দুষ্টুমীর গন্ধ, যেন বান্ধবীদের সাথে বাজি ধ েছে - ঐ যে ছেলেটা আসছে - ওর হাত ধরতে পারি দেখবি।
স্কুলের শেষের দিকে মনে হত আচ্ছা রাত্রি এখন কেমন দেখতে হয়েছে। ও কি এখনও আমার সামনে খোলা শরীরে দাড়াবে। কিন্তু ওর সামনে গিয়ে ওর বুকের দিকে তাকানোর কথা মনে হয় নি। কিন্তু ও যখন বলেছিল ওদের বাসায় যেতে আমার কিন্তু ঠিকই মনে হয়েছিল পুরনো কথা। কখনো কখনো যৌন কাতরতার মূহূর্তে ওকে কল্পনা করে দু হাতে কয়েকবার জীবনের নির্যাস বইয়ে দিয়েছি।
মনে হয়েছে ...
এগুলো আরো পরের কথা। তখন বন্ধুদের গল্পের নারীরাজ্য আবিস্কারের অভিযানে আমি সামিল হতে পারতাম না। সেইসময় একাকী আমার কল্পনায় নারী কেবলই তার গা থেকে উড়ে আসা একমিষ্টি গন্ধ। খালি মেয়েদের গা থেকেই উড়ে আসতো এই গন্ধ। ছেলেদের গায়ে এই গন্ধ পেতাম না আর সেটা পেলে ভালোও লাগতো না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।