আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গুজব

সুন্দরী বালিকাদের যত্ন করে কামড়াই

আমি যখন এসএমএস পেলাম, মন্টু র্যাবের ক্রসফায়ারে মারা গেছে, ঘাবড়াই নাই। এসএমএস পাঠিয়েছে ভোদাই তুহিন, ও বিরাট ভোদাই। এসএমএস-এর জবাবে কোন হাহাকারসূচক প্রশ্ন বা বিস্ময়মথিত আপসোস গোছের কিছু না পেয়ে ভোদাই তুহিন এবার আমাকে মিসড কল দেয়। আমি চুপচাপ বসে বসে কুঁচকি চুলকাতে চুলকাতে টিভি দেখি। একটু পরে ভোদাই তুহিন আমাকে বাসায় ফোন করে।

"মন্টুকে র্যাব [গাঢ়] নাকি [/গাঢ়] ক্রসফায়ারে দিয়ে মেরে ফেলছে? হ্যাঁ?' ভোদাই তুহিন জানতে চায়, খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা "নাকি" শোনা যায় ওর প্রশ্নে। আমি বলি, "আমি কিভাবে বলবো রে ছাগল? তুই-ই না ব্যাটা এসএমএস করলি, তুই বল?" ভোদাই তুহিন একটু ঘাবড়ে যায়, বলে, "ইমরান তো তাই বললো!" আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে টিভিতে বোম্বাই নায়িকার কোমরের খাঁজে তাগুতি আন্দোলন দেখতে থাকি। কী সব নায়িকা ওদের! আর আমাদের নায়িকারা পানিতে ফেলে দিলে এমনি এমনি ভেসে থাকে। ভোদাই তুহিন বলে, "ইমরান বললো তো!" আমি এইবার বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে ইমরানকে ফোন দেই। সে ফোন ধরে বলে, "কী র্যা? মন্টুর খবর শুনছিস?" আমি বলি, "বল কী হইছে।

" ইমরান বলে, "মন্টুকে র্যাবে ধরে নিয়ে গেছে। " আমি বলি, "তুই ক্যামনে জানলি?" ইমরান অকপট স্বীকারোক্তি করে, "মুনিয়া বলছে। " আমি একটু উৎসাহ পাই এইবার। মুনিয়ার সম্পৃক্তি আমার তাগুতিয়া মনে একটু রং লাগায়। ইমরানের মতো একটা গবেটের সাথে আর কথা বলতে ইচ্ছা করে না।

মুনিয়াকে ফোন দেই। মুনিয়া একটা চিন্তা চিন্তা ভাব আনে স্বরে, "মন্টুর কী হবে বলো তো? ওদের বাসায় নাকি র্যাব গেছিলো?" আমি বলি, "র্যাব বাসায় গেছিলো? ধরে নিয়ে গুলি করে মেরে ফ্যালে নাই?" মুনিয়া হাসে। বলে, "আরে না! বাসায় গেছিলো, ঝাড়ি দিয়েছে নাকি। " আমি ভাবি, আসলেই, কারণ মন্টুকে সাথে নিয়ে কোন গোপন অস্ত্রভান্ডারে যাওয়ার পথে ওঁৎ পেতে থাকা মন্টুর বন্ধুরা র্যাবের ওপর গুলি করবে, এমন খবর শুনলে কাকও হাসবে। মুনিয়ার সাথে আরো আধা ঘন্টা গ্যাজাই।

ভালোই লাগে। কথা ফ্যানাতে ফ্যানাতে শেষে দেখা যায় সামনের শনিবার ওকে কফি খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে ফেলছি। ভালোই, খারাপ কী। ফোন রাখার আগে মন্টুর বাসায় র্যাবের পদার্পণের সংবাদদাতার পরিচয়টাও বার করি। টাউট তুহিন।

একটু খারাপ হয় মেজাজটা। এই টাউটটা মুনিয়ার সাথে কথা বলে কিভাবে? টাউট তুহিন কিন্তু ফোন ধরেই বলে, "কী যে দিনকাল পড়ছে! সবাই খালি র্যাবের ভয় দ্যাখায়। মন্টুরে তো রেপ কেসে ফাঁসায় দিছে ওর পাশের বাড়ির লম্বু, শুনছোস?" আমি চেয়ার থেকে পড়ে যাচ্ছিলাম আরেকটু হলেই। মন্টু করবে রেপ? বলি, "কাকে? কাকে রেপ করছে? কিভাবে?" টাউট তুহিন এক দারুণ রোমহর্ষক সংবাদ ফাঁস করে। মন্টু নাকি পরীক্ষামূলকভাবে পাশের বাড়ির জনৈকা সত্তর বছর বয়স্কা বুড়িকে ধর্ষণ করেছে।

কী পরীক্ষা করতে গিয়েছিলো খোদা জানে, তবে ব্যাপারটা এরকমই। মন্টু নাকি পার পেয়ে যাচ্ছিলো, বুড়ি খুব একটা মাইন্ড নাকি করে নাই, কিন্তু বুড়ির বাড়িওয়ালা লম্বু, যার সাথে সেই স্বৈরচারী এরশাদ আমল থেকে এই জাতীয়তাবাদী এরশাদ আমল পর্যন্ত মন্টুদের খিটিমিটি লেগেই আছে, সে-ই নাকি মন্টুকে ধর্ষণের দায়ে পাকড়াও করেছে। সামনে নাকি মন্টুর ডিএনএ পরীক্ষা। আমি খিকখিক করে হাসি। বলি, "মন্টু কি এই পরীক্ষার জন্যও রাত কাবার করে পড়াশোনা করছে?" টাউট তুহিনও হাসে, শালা, বলে, "হে হে হে ... এখন আর পড়ে কী হবে ...?" সে আরো জানায়, পাশের বাড়ির লম্বু [গাঢ়] নাকি [/গাঢ়] র্যাব ডাকিয়ে এনে প্রাথমিক শাসানি দিয়েছে মন্টুকে, ধর্ষণের কেসে কোনভাবে মন্টু উৎরে গেলেই ক্রসফায়ার।

"নাকি" শুনেই আমার খটকা লাগে, আমি বলি, "তুই কোত্থেকে শুনলি?" টাউট তুহিন তার সোর্স ওপেন করে, বলে, "লম্বুর মেয়ের সাথে খাতির আছে আমার, ও-ই বললো। " আমি টাউট তুহিনের মুখের ওপর ফোন রেখে এবার বিন্দিয়াকে ফোন লাগাই। সে ফোন ধরে বলে, "হ্যাঁ, মন্টু ভাই খুব বিপদে আছে। আব্বা ঝাড়ি দিছে মন্টু ভাইকে। " আমি বলি, "ঝাড়ি? মন্টু রেপ করলো আর তোর বাপ ঝাড়ি দিলো?" বিন্দিয়া হাসে, মন্টুর রেপাবিলিটি নিয়ে তার মনেও স্পষ্ট অবিশ্বাস দেখলাম।

সে বলে, "আরে না, ধুর, তুহিন তোমাকে চুপকি দিলো আর তুমি শুনলা ... মন্টু ভাই দিলারা আন্টির সাথে একটু চিল্লাচিলি্ল করছে, আব্বা তখন মন্টু ভাইকে ঝাড়ি দিছে, বাস। " আমি বলি, "র্যাব নাকি আসছিলো?" বিন্দিয়া হেসে খুন, বলে, "ধুর! আব্বা খালি বলছে, ঐ গেলি না র্যাব ডাকুম?" এবার আমি মন্টুকে ফোন করি। সে বিমর্ষ গলায় বলে, "হ্যালো। " আমি বলি, "কী রে, তুই নাকি আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যাচ্ছিস? র্যাব নাকি তোকে খুঁজে? আর বুড়ি রেপ করতে গেলি ক্যান? মরেটরে গেলে কী হতো ভেবে দেখেছিস?" মন্টু ক্ষেপে যায়। তারপর সব ব্যাখ্যা করে।

আলোচ্য ধর্ষিতা সত্তর বছরের বৃদ্ধাটি বাস্তবে জনৈকা ত্রিশ বছর বয়সী ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষিকা, নীরস সব জিনিস পড়াতে পড়াতে আর বেগম আখতারের ঠুমরি শুনতে শুনতে চেহারার ঐ হাল করেছেন, রোজ সকালে আবার উনি গলা সাধেন, মন্টু তখন সবেমাত্র ঘুমাতে যায়। আর থাকতে না পেরে সে বিছানার পাশে জানালা খুলে প্রতিবাদ করেছিলো যথেষ্ঠ মার্জিত ভাষায়, জবাবে সেই বেটি আর বদমায়েশ লম্বু দুইজনেই নাকি কাউকাউ করে পাড়া থেকে কাক উড়িয়ে দিয়েছে। মনটা একটু খারাপই হয় আমার। মন্টুটা র্যাবের ক্রসফায়ারে মরলে কত উত্তেজনাকর একটা ব্যাপার হতো, বান্ধবীদের কাছে কত রং চড়িয়ে গল্প করতে পারতাম। নিদেনপক্ষে সত্যি যদি ব্যাটা রেপ করতো, তাহলেও চলতো।

কিন্তু কোন বড়সড় উপকারেই আসতে চায় না শালা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।