একদিন তোর কথা শুনবে নদি...
ছোট বেলার ছবি আমার খুব কম। প্রথমটায় বয়স কত ছিল? জানিনা। তবে, খুব দুষ্টু ছিলাম। সবাই তাই বলে। হাসিটা এখন আর আগের মত নেই।
বদলে গেছে। বদলে গেছে অনেক কিছু আমার। তবে, ভেতরটা এখনো ঐ হাসিতে উদ্ভাসিত। এখনও টম এন্ড জেরী দেখে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাই। এখনও, মানুষের মজার বিপদ দেখলে অন দ্যা স্পটে হাসিতে ফেটে পড়ি! কিছুটা ছেলেমানুষী ব্যবহার আমার এখনও আছে।
বায়না ধরে কান্নার রিহার্সেল নেই; তবে, কারনে-অকারনে নির্জনে কাঁদার অভ্যেস তৈরী হয়েছে।
দ্বিতীয় ছবিটা স্কুল লাইফের। কাশ টেন। এ সময়টায় প্রথমবারের মত লম্ফ দিয়ে 2 থেকে 6 এ চলে গেছিলাম। যদিও কখনোই পজিশন নিয়ে পড়ালেখা করিনাই।
প্রতিদিন দেড় ঘন্টা লেখাপড়া করতাম। তাও দাদার চুল ধরে ঝাকানোর ভয়ে। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট এর জন্য কখনোই পড়ি নাই। তারপরও দ্বিতীয় স্থানটি আমার জন্য বরাদ্ধ থাকতো। প্রথম জনকে একবারই টপকেছিলাম।
এরপর আর পারি নাই। ও একটা রোবট ছিল। স্বার্থপর রোবট। ডি.ইউ'তে পড়ছে। এখনো তেমনই আছে।
ওর স্বার্থপরতার প্রতিশোধটা নিয়েছিলাম চরম ভাবে। কখনোই ভাবতে পারিনি ছোট্ট খেলাটা এতটা বিপদজনক হবে। স্কুল স্পোর্টসের ভলান্টিয়ার ছিলাম। যারা ভলান্টিয়ার ছিল, তাদেরকে রাতে স্কুলে থাকতে হবে। সো, আমরা হাজির হয়েছিলাম সবাই।
রোল নাম্বার ওয়ান ওরফে হাবুরাম ওরফে হাদিও সাথে ছিল। আগেই বলেছিলাম, কাউকে ঘুমাতে দেয়া হবে না। যে ঘুমাবে তার খবর আছে। এজন্য সবাই কল ব্রিজ খেলছিলাম। এদিকে স্বার্থপর রোবটটা ঘুমিয়ে অচেতন।
তিনজনকে তিন রকম দায়িত্ব নিতে হলো। স্কাউট, তাই দড়ির গিট বাঁধা কোনো ব্যাপারই না আমার কাছে। লুঙ্গী উঠিয়ে কলমের সাহায্যে গিট দিলাম জায়গামত। আরেকজন ফ্যানের পাখায় দড়ি বাঁধলো। বাকীজন ফ্যানের সুইচ অন করলো।
আর যায় কোথায়। ও মাগো বলেই যে একটা চিৎকার দিল তাতে সবার বুকের আত্মা কেঁপে গেছে। ফ্যান বন্ধ করা হয়েছে তারপরও ফ্যান ঘুরছে। আমি চেয়ারের উপর উঠে হাত দিয়ে তা বন্ধ করলাম। গিঁট খুলে দিল একজন।
দেখলাম, ও ব্যাটা মুখে ফেনা তুলে অজ্ঞান হয়ে গেছে। চোখ মুখে পানি দিয়েও ওর জ্ঞান ফেরানো গেলনা। পরে বাথরুমে নিয়ে ইচ্ছামত ভিজালাম। কি করবো, কি করবো না ভাবতে ভাবতে সবার মুখ ছাই বর্ণ। আধ ঘন্টা পর চোখ খুললো ব্যাটায়।
খুব দূর্বল কন্ঠে জিজ্ঞাসা করলো- 'আমার কি হইছে, আমি কোথায়?'
আজ পর্যন্ত হাদি জানেনা সে রাতে তার কি হয়েছিল। আমরা কেউই তাকে কখনো বলিনি। শুধু ঘটনাটা মনে করে মনে মনে হেসেছি। টেন এর শেষে কিছুটা স্থিতি চলে এসেছিল। কিছুটা ভাবও সাথে টেনেছিলাম।
পিছে কেউ থাকলে ছেলেরা নাকি কিছুটা চেঞ্জ হয়; আমার বেলায় ঠিক তাই হয়েছিল। এখন আবার কিছুটা ছন্নছাড়া হয়েগেছি। দেখলাম, ছন্নছাড়া জীবনই আসল জীবন। এ জীবনে কোনো অপেক্ষা নেই, কোনো কষ্টও নেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।