'আপনারা সবাই শিক্ষিত, প্রায় সকলেই শিক্ষক, অনেকেই প্রধান শিক্ষক । আপনারা একটু চিন্তা করূন...এটা কি সাজানো নাটক নয়? চারিধারে বোমা পড়ছে, গ্রেনেড পড়ছে... কই একটাও তো তার গায়ে পড়লো না ! ! এখন আপনারাই বলুন এটা কি সাজানো নাটক নয় !?'....... এক নিঃশ্বাসে বলে ফেললেন প্রিনিসপ্যাল স্যার।
ঘটনার আকস্বিকতায় আমরা সকলে হতবিহবল হয়ে পড়লাম। কোন মন্তব্য তো দুরে থাক আমরা যেন নড়তেও ভুলে গেলাম। রাজশাহী সরকারী টিচার্স ট্রেনিং কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় তখনও তাঁর ছুড়ে দেওয়া মন্তব্যের প্রতি উত্তরের অপেক্ষাতে অপেক্ষমান।
আমরা মাথা নিচু করে বসে সবাই।
পাঠক ঘটনার তারিখ আজ থেকে ঠিক দু'বছর আগে, 22 শে আগস্ট 2004। স্থান রাজশাহী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ .... এম.এড শ্রেণী কক্ষ। সকাল 9 টা 15 মিঃ শ্রেণী কক্ষে মড্যাম তহুরা খাতুন এর সাথে অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ দ্্বীন মোহাম্মদ স্যারের প্রবেশ দেখে সকলে অবাক হলেও আমি হই নি। কারন আমি আগের রাতে হোস্টেল সুপার ম্যাডাম আখতারা বানুর কাছে খবর পাই আমাদের শ্রেনীতে এক সহপাঠিকে স্যার কিছু বলবেন এবং অবশ্যই তা ম্যাডাম আখতারা বানুর অনুকূলে।
সেই আমিও চমকে উঠলাম স্যারের কথা শুনে। আমি নির্বাচিত প্রতিনিধি...কিন্তু আমিও কোন মন্তব্য করতে পারলাম না...বলতে পারলাম না ..."স্যার তাহলে শেখ হাসিনার দেহরক্ষি মারা গেলেন কেন?" বলতে পারলাম না...কোন সে রাজনৈতীক উদ্দেশ্য ..যার জন্য এত রক্তপাত.......
আজ দু'বছর পর আবার সেই 22শে আগস্ট....আজকে স্যারের কাছে ভীষন জানতে ইচ্ছা করছে....স্যার এখন আপনার কি মনে হয়... এখনও কি মনে হয় সেটা ছির সাজানো অতি বিভৎস এক নাটক...... এখন একটা দল সেই বোমা হামলার দায় কাঁধে নিয়েছে.... তারপর ও কি বলবেন .....এটাও একটা সাজানো শখ !!!!
পাঠক আমি জানিনা একজন প্রতিষ্ঠান প্রধান, দেশের প্রথম শ্রেণীর এক নাগরিক, বুদ্ধিজীবি সর্বপরি একজন সরকারী কর্মচারী হিসাবে স্যার সেদিন তার নিজের পদস্খলন ঘটিয়েছিলেন কিনা.... শুধু জানি সেদিন.. ঘৃনায়, লজ্জায় নিজেকে ভীষন অপরাধী মনে হচ্ছিল।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।