ইসলামবিদ্্বেষ ম্যানিয়া, অতিরিক্ত ইসলাম প্রেম ম্যানিয়া কি না এইটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই পারে। সমস্যাটা মাত্রাবোধের- ম্যানিয়া মানুষের আচরনের সেই অংশকে নির্দেশ করে যখন সেটা স্বাভাবিকতা ছেড়ে অস্বাভাবিকের দিকে যাত্রা করে।
সংস্কৃতি বিষয়টাও এমন- সুন্নত পালন- রসুলের পদাঙ্ক অনুসরন দোষের বললে এখানে লোকজন লাফালাফি করবে- কিন্তু খেজুর আর যবের আটার রুটি খায় এমন বাংলাদেশি মানুষকে ম্যানিয়া আক্রান্ত বলতে আমার কোনো দ্্বাধা নেই। কারন এটা বাংলাদেশের সংস্কৃতি না।
তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসলো আফগানিস্তানে, এসে তারা 2000 বছরের পুরোনো কয়েকটা বুদ্ধ মুর্তি ভেঙে ফেললো।
দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর আঘাত। এটা কি ম্যানিয়া পর্যায়ে পড়ে?
1400 বছর আগে আরবে লোকজন ঘরের ভেতর খালি গায়ে থাকতো- এখন বাংলাদেশে ছেলে মেয়ে নির্বিশেষে ঘরে খালি গায়ে ঘুরছে এমনটা যদি সুন্নত পালনের তরিকা হয় তাহলে তাদের ম্যানিয়া আক্রান্ত বলা হবে?
হিজাব বলে একটা জিনিষের প্রচলন হয়েছে যার কোনো উললেখ হাদিসে নেই, হাদিস ঘেঁটে দেখাও কোথাও হিজাব পড়তে বলা হয়েছে। কোরানের কোথায় হিজাবের কথা বলা আছে। একটা লৌকিক সংস্কৃতিকে জোড় করে বাংলাদেশে টেনে এনে ঐটাকেই ঐসলামিক বলে রায় দেওয়ার অর্থ কি?
হােিদ বলা আছে শোভন এবং শালীন ভাবে পোশাক পরিধান করতে, শোভনতা এবং শালীনতা সমাজে সমাজে বদলায়- এমন কি কালের সাথেও পরিবর্তন হয়। এখন যারা সাধারন পোশাকে ঘুরছে তারা কি অশালীন পোশাকে ঘুরছে? যারা হিজাবের পট্টি বাঁধছে না তারা কি সবাই অশোভন অশালীন পোশাক পরিধান করছে?
মুসলিম মেয়েরা বাইরে বের হলে বুক এবং মাথার চুল ঢেকে বের হবে।
এইতো নিয়ম, এখন কথা হলো এই নিয়মটা সেই সময়ের শোভনতার মাপকাঠি। তারা একটা চাদরে মাথা বুক ঢেকে বাইরে শোভন হয়ে ঘুরতে পারলে এখনকার বাংলাদেশে কেনো 3/4টা অংশ দিয়েও সেটা পূরণ হবে না।
সেখানে অন্য একটা নিয়ম ছিলো, পরিবার বহির্ভুত কারো সামনে যাওয়া যাবে না। এমন কি বাইরের মানুষও যখন তখন ঘরেআসতে পারবে না। ঘরে যদি সক্ষম বালেগ কোনো পুরুষ আসে মেয়েদের দেয়ালের ওপাশ থেকে কথা বলতে হবে- এই নিয়মটা বাংলাদেশ কেনো এই বর্তমান যুগে কোথাও চালাইতে চাইলে কে ইসলাম ধরে রেখে বাইরে যেতে পারবে?\
তারা কি ইসলাম রক্ষার্থে ঘরের ভেতর আদুল গায়ে থাকবে এবং দেয়ালের ওপাশ থেকে কথা বলবে? মুসলিমদের ঘরে ঢোকার আগে গৃহকর্তা অনুমতি নেওয়ার বিধান আছে- এমন এক অসময়ে নিজের ছেলের ঘরে ঢুকে ছেলের বৌকে দেখে কামার্ত হয়ে হজরত নিজেই ছেলের বিবাহিত বৌকে বিয়া করেন- ইহার পর মদিনার নিন্দার ঝড় বয়ে যায়।
এবং হজরতের বিয়েতে নিষেধাঞ্জা জারি হয়ে একটা আয়াত নাজিল হয়। সমস্যা হইলো এমন শোভন মানুষ অসময়ে ছেলের ঘরে ঢুকে ছেলের বৌকে দেখে কামার্ত হইলেন কেনো? তার যৌনচাহিদা পুরনের মানুষের অভাব ছিলো না- অন্য একটা হাদিসে দেখা যায় তিনি তার 2 বৌ সহযোগে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন এমন সময় 2 সাহাবা তাকে দেখে কুশল বিনিময় করতে আসলো তিনি উত্তরে বলিলেন তোমরা যা ভাবছো সেটা ঠিক না- আমি এই হাদিসের আগামাথা বুঝি নাই। নিজের বৌ নিয়ে যাচ্ছে এই বিষয়ে কৌফিয়তের প্রয়োজন কি?
কিন্তু যেই প্রসংগে এটার অবতারনা তা হলো আমাদের সময়ের মাপে যেসব বিধান আমরা গ্রহন করছি তা এই সময়ের দাবি মেনে শোভন- এই খানে 1400 বছর আগের শোভনতার সংজ্ঞা খাটে না। আয়েশা যুদ্ধে মুহাম্মদের সহগামি হয়েছিলেন, সাথে ছিলো হাফসা- এদের দুজনের জন্যই পর্দা লাগানো উটের ব্যাবহার করা হয়েছিলো- একেবারে চারপাশ বদ্ধ, এখন কোন মুসলিম মেয়েটা পাবলিক ট্রান্সপোর্টে যাবে এমন ঘোরটোপ লাগিয়ে?
আমার মাতামহ এখনও কোথাও যেতে হলে একটা বিশাল শাড়ী দিয়ে আরাল তৈরি করে যাতায়ত করেন। সেটা তার সুন্নত পালন, কিন্তু এটা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে পড়ে।
আমার বাসায় অহরহ আমার বন্ধুরা আসছে- আমার বোনের বন্ধুরাও আসে- কিন্তু ইসলামি আইন এমনটা নিষেধ, কিন্তু কথা হইলো এদের পালকপুত্র বানানোর জন্য 5 বার স্তন্য দানের কোনো প্রয়োজনিয়তা আমার পরহেজগার পরিবার মনে করছে না। এইখানে যারা ইসলাম নিয়ে বড় বড় বুলি কপচায় তারা কি তাদের বন্ধুদের বাসায় যাওয়ার জন্য সেই বাসার মহিলাদের পালকপুত্র হয়েছে?
এই যে মাত্রাবোধ এইটাই স্বাভাবিক থেকে অস্বাভাবিকতাকে পৃথক করে রাখে। এই বোধটা যাদের নেই তারা দিন দিন আরও অসংলগ্ন আচরন করবে, এবং এটাকে মানসিক সমস্যা বলতে আমার সমস্যা নেই মোটেও।
ধর্ম পালন এবং ধর্মিয় উন্মাদনার মধ্যে যেই চেতনাগত পার্থক্য সেটা যদি কেউ নিজে অনুভব না করতে পারে তাহলে তাকে বুঝানো যাবে না সে অস্বাভাবিক আচরন করছে। মানসিক সমস্যাক্রান্ত মানুষ একেবারে ভয়ংকর পর্যায়ে না যাওয়া পর্যন্ত সাহায্যের প্রয়োজন অনুভব করে না।
অ্যামিশ বলে একদল মানুষ থাকে যারা জীবনযাপনে এখনও মধ্যযুগীয় প্রথা বজায় রেখেছে। তারা বিদু্যত ব্যাবহার করে না, তারা এখনও ঘোড়ার গাড়ী চড়ে যাতায়ত করে। তাদের ছেলেদের পাবলিক স্কুলে দেয় না হোম স্কুলিং করায়। শতেক রকম নিয়ম কানুন, তাদের গোষ্ঠিভুক্ত সংস্কৃতি আমার কাছে ম্যানিয়া মনে হয়, তারা নিজেরা বিচ্ছিন্ন জগত তৈরি করেছে সেখানে পৃথিবীর কোনো সম্পর্ক নেই। অতিরিক্ত ইসলাম প্রেমি যারা তারা নিজেদের এমন সমাজবিচ্ছিন্ন একটা ঘোরটোপে রাখলে আমার নিজের কোনো আপত্তি নেই, তারা নিজেদের সংস্কৃতির চর্চা করুক নিজেদের জায়গায়।
কিন্তু তারা যদি সবাইকে তাদের মতো সংস্কৃতি ধারন করতে বলে তাহলে আমার আপত্তি আছে।
যাদের সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক সম্ভব সেই সব মানুষের সামনে বেপর্দা যাওয়া নিষেধ এমন শর্তে নিজের চাচা মামার সামনেও বেপর্দা যাওয়া নিষেধ। তা এখন বলে যাও ইসলামম্যানিয়াক কে কে এই চরম সীমা পর্যন্ত গেছে-
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।