আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার বিলেতজীবন ঃঃ প্রস্তুতি পর্ব (দ্্বিতীয় অংশ)

আমার সাথে যোগাযোগ করতে http://bn.jinnatulhasan.com/blog এ ভিজিট করুন।

আগের পর্বে যা বলেছিলাম তারপর থেকে, ভূমিকা ছাড়াই দ্্বিতীয় পর্ব শুরু করছি। IELTS নিয়ে আমার একটা ভীতি ছিল আবার কোচিং না করে 'হয় ছক্কা নয় অক্কা' ট্রাই করতে চাচ্ছিলাম, কারন তখন অফিসের কাজে এত ব্যস্ত ছিলাম েেয, বাসায় ফিরতাম শুধু রাতের খাবার খেতে আর ঘুমাতে। যাকগে, সেইসব কথা। কাজের কথায় আসি।

ওয়ার্ক শপে যতদূর মনে পড়ে 500 টাকা নেয়। সারাদিন হয়, ওখানে পরীক্ষার সব নিয়মকানুন, কি করলে কি হবে, কি করা উচিৎ, নানান দিক থেকে প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়। আমার কাছে ওইটা বেশ কাজের মনে হয়েছিল, তাই যারা বিদেশে আসতে চান ও কোচিং করত আগ্রহী না, তারা ওয়ার্কশপে গিয়ে যান। দেখুন যা যা পরীক্ষায় আসবে সেগুলো পারেন কিনা, যদি না পারেন তখন কোচিং-এ ভর্তি হউন। শুধু শুধু টাকা খরচের দরকার নেই, পরে টাকা অনেক খরচ হবে।

প্রথমদিন Reading, Writing & Listening ছিল, Reading খুব খারাপ হয়েছে, অনেকটা আন্দাজের উপর দিয়েছি। Writing এ যেহেতু প্রাকটিস ছিল না, তাই সবার আগে শেষ করে ফেলেছি। সবাই দেখি তুমুল মুখস্থ বিদ্যা চালাচ্ছে, ওদের দেখে আবার লেখা শুরু করে দিয়েছি। এই দুইটা নিয়ে তেমন একটা আশা ছিল না, খুব ভাল হয়েছিল Listening। আশা করেছিল 7.5 এর মতো পাবো।

পরের দিন ছিল Speaking। হার্টবিট চরমে। রুমে ঢুঁকে দেখি এক মহিলা নখ কাটতেছে। সামনে একটা মান্ধাতার আমলের টু-ইন-ওয়ান। সে আমাকে বিরস বদনে নিয়ম কানুন বলে দিল, বলল তোমার টপিক Your Childhood Hero।

আমি তো গড় গড় করে বলে যাচ্ছি। কিছুক্ষন পড়ে বলে ভুল হয়েছে তোমার টপিক হচ্ছেThe Place I came from। মেজাজটা কেমন লাগে? যাই হোক আবার শুরু করলাম। বেশ কয়েকদিন টেনশনে রেখে রেজালট বের হলো, যেইটারে বেশি ভয় পাইছি সেইটায় সবচেয়ে বেশি পাইছি। রেজালট নিন্মরুপঃ Speaking ---- 6.0 Listening --- 6.5 Reading ----- 6.5 Writing ----- 6.0 ------------------------ Total ------- 6.5 এরপর গুলশান 1 নম্বরের সাইমুন সেন্টারে পার্সপোট দেখিয়ে একখানা আবেদন পত্র নিয়ে আসলাম।

এর মধ্যে এজেনসী এখানকার নামী(!!!) কলেজের আবেদনপত্র নিয়ে এসেছে। এখানে বাঙ্গালীদের পরিচালিত অনেক কলেজ আসে। এগুলো ভিসা কলেজ নামে পরিচিত। এদের কাজই হলো ভিসা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে লোক আনা। বাংলাদেশের কোচিং সেন্টারগুলো যেমন এক-দুই নিয়ে, তেমনি অবস্থা এই কলেজগুলোর।

লেখাপড়ার বালাই নাই, ক্লাস হয়, হয় না। শুধু ছাত্র বাড়ালেই এরা খুশি। যাইহোক আমার কলেজটা যে এমন ছিল জানতাম না, অবশ্য জানলেও লাভ হতো না। কারন ভাল কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটিতে যে টাকা দিয়ে ভর্তি হতে হয়, সেটা আমার পক্ষে তখন দেয়া সম্ভব ছিল না। এখানকার ভাল কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটিগুলো কয়েকটা ভাগে বিভক্ত।

A Group এর কলেজগুলো পড়েImperial College, King's College, Queen Mary University, UCL। এইগুলো সব University of London এর অধীনে সার্টিফিকেট দেয়। যদিও সবগুলোই চেষ্টা করছে University of London হতে বিচ্ছিন্ন হতে। এগুলোর টিউশন ফি আকাশ চুম্বী Non EU Recident দের জন্য কমপক্ষে 11,000 পাউন্ড। অথচ ওদের জন্য মাত্র 3,500 পাউন্ড।

এই হিসাবটা মাষ্টার্স কোর্সের, ব্যাচেলব ডিগ্রীর খরচের নমুনাটা আগ্রহীরা ওয়েবসাইটে দেখে নিন। অপর দিকে বাঙ্গালীদের কলেজগুলোতে 5,00 থেকে 1,000 পাউন্ড দিলে ওরা ছাত্র ভর্তি করে নেয়। নাম বলছি না, কেউ ব্যক্তিগতভাবে জানতে চাইলে আওয়াজ দিয়েন। যাইহোক অনেক কেচ্ছা কাহিনী করে, সব কাগজপত্র এল লন্ডন থেকে। কাগজ কলমে ওরা বলে দিয়েছে আমি 1 বছরের জন্য 1,500 পাউন্ড দিয়েছি।

ওদের সাথে কথা ছিল যদি ভিসা পাই, তাহলেই টাকা দেব নতুবা কোন টাকা দেয়া হবে না। তাই টাকা মার যাবার সুযোগ কম। কি কি কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম, সেটা আগামী অংশে। চলবে ....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।